বিজ্ঞাপন

আফগান ‘জুজু’ আর ব্যাটিং ব্যর্থতায় হারলো বাংলাদেশ

September 15, 2019 | 10:00 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

ঘরের মাঠে আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট হারের ক্ষত এখনও শুকায়নি। এর মধ্যেই ত্রিদেশীয় সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্বাগতিক বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান। চলতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে ২৫ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে আফগানরা। তাছাড়া, আফগানরা টানা চতুর্থ জয় পেল বাংলাদেশের বিপক্ষে। গত বছর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল আফগানরা। টেস্টের প্রতিশোধ তোলা পরের কথা, ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দেখায় লড়াইটাও করতে পারলো না স্বাগতিকরা। টি-টোয়েন্টিতে আফগান ‘জুজু’ কাটাতে পারেনি সাকিবের দল। ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিজেদের মাটিতে টেস্টের পর হারলো টি-টোয়েন্টিতেও।

বিজ্ঞাপন

টস জিতে আফগান দলপতি রশিদ খান ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নির্ধারিত ২০ ওভারে আফগানরা ৬ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৬৪ রান। বাংলাদেশ ১৯.৫ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে তোলে ১৩৯ রান। দুই দলই আগের একাদশ রেখে দেয়। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করে গাজী টিভি।

প্রথম বলেই আফগান ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আগের ম্যাচে অভিষিক্ত রহমানুল্লাহ গুরবাজকে বোল্ড করেন সাইফ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ১০ রানের মাথায় সাকিব ফিরিয়ে দেন আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইকে। লিটন দাসের হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি করেন ১ রান। সাকিব নিজের প্রথম ওভারে মেডেন উইকেট তুলে নেন। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে আবারও আঘাত হানেন সাইফ। এবার ফিরিয়ে দেন ১৩ বলে এক ছক্কায় ১১ রান করা নাজিব তারাকাইকে।

এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিল আফগানরা। ২১ রানের জুটি গড়েছিলেন আসগর আফগান এবং নাজিবুল্লাহ জাদরান। দলীয় ৪০ রানের মাথায় সাকিব ফিরিয়ে দেন নাজিবুল্লাহ জাদরানকে। ৭ বলে ৫ রান করে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন তিনি। এরপর বড় জুটি গড়েন আসগর আফগান এবং মোহাম্মদ নবী। এই জুটিতে আসে ৭৯ রান। ১৭তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৩৭ বলে তিনটি চার আর দুটি ছক্কায় ৪০ রান করে বিদায় নেন আসগর আফগান। একই ওভারে গুলবাদিন নাইবের স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন সাইফউদ্দিন। ১৮তম ওভারে সৌম্যকে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন মোহাম্মদ নবী। সেই ওভারে আরও একটি ছক্কার সাথে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান নবী। সৌম্যর ঐ ওভার থেকে আফগানরা তুলে নেয় ২২ রান।

বিজ্ঞাপন

নবী শেষ অবধি ব্যাট চালিয়ে অপরাজিত থাকেন ৮৪ রানে। তার ৫৪ বলের ইনিংসে ছিল ৭টি ছক্কা আর ৩টি চারের মার। করিম জানাত ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

তাইজুল ইসলাম ৪ ওভারে ৩২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। সাইফউদ্দিন ৪ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন চারটি উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। সৌম্য ২ ওভারে ৩১, মোসাদ্দেক ১ ওভারে ১২ এবং মাহমুদউল্লাহ ১ ওভারে ৩ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ২৫ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি।

১৬৫ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস এবং মুশফিকুর রহিম। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই মুজিব উর রহমানের বলে বিদায় নেন লিটন। ব্যক্তিগত ৫ রান করে ফরিদ আহমেদের বলে বোল্ড হন প্রথমবার ওপেনিংয়ে নামা মুশফিকুর রহিম। দলীয় ১১ রানে বাংলাদেশ দুই ওপেনারকে হারায়। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মুজিব ফিরিয়ে দেন ১৩ বলে দুই চারের সাহায্যে ১৫ রান করা সাকিবকে। দলীয় ৩১ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। একই ওভারে মুজিব ফিরিয়ে দেন সৌম্য সরকারকে। নিজের প্রথম বলেই এলবির ফাঁদে পড়েন সৌম্য।

বিজ্ঞাপন

এরপর ৫৮ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ-সাব্বির। ইনিংসের ১৪তম ওভারে গুলবাদিনের বলে তারাকাইয়ের তালুবন্দি হন রিয়াদ। তার আগে ৩৯ বলে পাঁচটি বাউন্ডারিতে করেন ৪৪ রান। বাংলাদেশ দলীয় ৯০ রানে পঞ্চম উইকেট হারায়। স্কোরবোর্ডে ৫ রান যোগ হতে বিদায় নেন সাব্বির। মুজিবের চতুর্থ শিকারে বিদায় নেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ২৪ রান। ১৮তম ওভারে গুলবাদিন নাইবের বলে বাউন্ডারি সীমানায় ধরা পড়েন আফিফ হোসেন। আগের ম্যাচের জয়ের এই নায়ক এই ম্যাচে ১৪ বলে দুই বাউন্ডারিতে করেন ১৬ রান। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় বাংলাদেশ সপ্তম উইকেট হারায়।

১৯তম ওভারের প্রথম বলে সাইফউদ্দিনকে (২) নিজের ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন রশিদ খান। একই ওভারের তৃতীয় বলে ১২ রান করা মোসাদ্দেককে বোল্ড করেন আফগান এই দলপতি। ফরিদ আহমেদের করা শেষ ওভারে মোস্তাফিজ একটি ছক্কা আর দুটি চার হাঁকিয়ে পরাজয়ের ব্যবধান কমান। ৭ বলে ১৫ রান করেন মোস্তাফিজ।

আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমান ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে তুলে নেন চারটি উইকেট। গুলবাদিন নাইব ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। ফরিদ আহমেদ ২.৫ ওভারে ৩৩ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। করিম জানাত ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। মোহাম্মদ নবী ২ ওভারে ১১ রান খরচায় কোনো উইকেট পাননি। রশিদ খান ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সাকিবের দল। আর একই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে নিজেদের টুর্নামেন্ট শুরু করেছে রশিদ খানের আফগানিস্তান। নিজেদের দ্বিতীয় জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে দুই দল। টি-টোয়েন্টির র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দশ নম্বরে আর আফগানদের সাত নম্বরে। মুখোমুখি দুই দলের পাঁচ দেখায় আফগানরা জিতলো চারটি ম্যাচে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোসাদ্দেক হোসেন, তাইজুল ইসলাম এবং মোস্তাফিজুর রহমান।

আফগানিস্তান একাদশ: হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নাজিব তারাকাই, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবী, নাজিবুল্লাহ জাদরান, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, করিম জানাত, ফরিদ আহমেদ এবং মুজিব উর রহমান।

ত্রিদেশীয় সিরিজের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি। বরাবরের মতো এবারও বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য খেলা দেখার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম র‌্যাবিটহোল। এই প্রথমবার বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে উপভোগ করা যাচ্ছে টাইগারদের খেলা। প্রায় ২০০ দেশ থেকে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান-জিম্বাবুয়ে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজটি সরাসরি উপভোগ করতে ক্লিক করুন এখানে: www.rabbitholebd.com

সারাবাংলা/এমআরপি

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন