বিজ্ঞাপন

ডিসেম্বরের মধ্যে ২৭ বীমা কোম্পানিকে তালিকাভুক্তির নির্দেশ

September 17, 2019 | 1:46 pm

গোলাম সামাদনী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে ২৭ বীমা কোম্পানিকে নির্দেশ দিয়েছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আইডিআরএ‘র সদস্য গকুল চাঁদ দাস স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলো। নির্ধারিত সময়ে তালিকাভুক্ত হতে ব্যর্থ হলে বীমা আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে আইডিআারএ‘র চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়নি এমন বীমা কোম্পানিগুলোকে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে গত ১৬ সেপ্টেম্বর আইডিআরএ থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বীমা কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যান ও মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হযেছে।’

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বীমা ও সাধারণ বীমা করপোরেশনসহ মোট ৭৮টি বীমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি জীবন বীমা, ৪৬টি সাধারণ বীমা এবং ২টি বিদেশী বীমা কোম্পানি রয়েছে। বিদেশী বীমা কোম্পানি দুইটি হলো আমেরিকান লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি বা মেটলাইফ। অন্যটি হলো লাইফ ইন্স্যুরেন্স করপোরেশন অব বাংলাদেশ।

সূত্র আরও জানায়, ৭৮টি বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টি কোম্পানি বর্তমানে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। বাকি ২৭টি কোম্পানিকে নতুন করে তালিকাভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি জীবন বীমা কোম্পানি এবং ৯টি সাধারণ বীমা কোম্পানি রয়েছে। তবে এগুলোর মধ্যে ২টি রাষ্ট্রায়ত্ত, ১টি বিদেশি মেটলাইফ ও বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ কোম্পানির পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার ব্যাপারে জটিলতা রয়েছে।

পুঁজিবাজারে যে ২৭ কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত হতে চিঠি দেওয়া হয়েছে

বিজ্ঞাপন

২৭টি কোম্পানির মধ্যে জীবনবীমা ১৮টি কোম্পানি হলো- বায়রা লাইফ, গোল্ডেন লাইফ, হোমল্যান্ড লাইফ, সানফ্লাওয়ার লাইফ, বেস্ট লাইফ, চার্টার্ড লাইফ, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, প্রোটেক্টিভ ইসলামি লাইফ, সোনালী লাইফ, জেনিথ ইসলামি লাইফ, আলফা ইসলামি লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ, যমুনা লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামি লাইফ, স্বদেশ লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ, এলআইসি বাংলাদেশ।

অন্যদিকে সাধারণ বীমা ৯টি কোম্পানি হলো- ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, সাউদ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামি কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

উল্লিখিত কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে মূলধনের ৪০ শতাংশ অর্থ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করবে।

সূত্র জানায়, বীমা আইনানুযায়ী কোনো কোম্পানি নিবন্ধিত হওয়ার তিন বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে না পারলে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে আরও ছয় মাস সময় বাড়াতে পারে। তারপরেও পুঁজিবাজারে বাজারে আসতে না পারায় ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রথম বীমা আইনের (বীমা আইন ১৯৩৮) ১০২ ধারা অনুযায়ী প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে জরিমানা দিতে হতো। বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ নতুন বীমা আইন ২০১০-এর ১৩০ ধারা অনুযায়ী ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে জরিমানার পরিমাণ এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। ফলে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে প্রতিদিনের জন্য কোম্পানিগুলোকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হচ্ছে। এটি বছর শেষে একবারে আদায় করা হয়। এর মধ্যে কোনো কোনো কোম্পানি ১৬ বছর ধরে, কোনো কোম্পানি ১০ বছর ধরে, আবার কোনো কোম্পানিকে এক বছর ধরে জরিমানা গুনছে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে মতবিনিময় করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মতবিনিময় সভায় তিনি আগামী তিন মাসের মধ্যে যেসব বীমা কোম্পানি পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়নি তাদের তালিকভুক্ত হওয়ার নির্দেশ দেন। অন্যথায় তাদের নিবন্ধন সনদ বাতিল করা হবে বলে ঘোষণাও দেন তিনি।

সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন