বিজ্ঞাপন

অর্থমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে

September 19, 2019 | 3:52 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অর্থমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও পুঁজিবাজারের পতন থামেনি। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩২ পয়েন্ট কমে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৬ সেপ্টেম্বর অর্থমন্ত্রী পুঁজিবাজার উন্নয়নে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে পুঁজিবাজারে সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দেন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো দূর করারও আশ্বাস দেন। অর্থমন্ত্রীর এমন ঘোষণার পরেও বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফেরেনি।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও দেশের আর্থিক খাতের দুরবস্থা, গ্রামীণফোন নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে বিদেশিরাও শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা দরপতনের আতঙ্কে আরো লোকসানের আশঙ্কায় হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। ফলে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ায় দরপতন হচ্ছে। এই সংকট দূর করতে হলে আগে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। সত্যিকার অর্থে পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

এ ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, এই মুহূর্তে পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট। এটি দুর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও দেশের আর্থিক খাতের কিছু নেতিবাচক প্রভাবও পুঁজিবাজারে পড়েছে। তবে ডিএসই ও সিএসইর উচিত দরপতনের কারণ বের করা।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আবু আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ারের সংকট রয়েছে। আর এই কারণে বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী আসছে না। নতুন বিনিয়োগকারী না আসায় তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বাজারে দরপতন হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে দরপতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে পতনের মাত্রা আরো বাড়ছে। এছাড়াও গ্রামীণফোনের টানাপোড়েনের কারণে বিদেশিরাও শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। ফলে বাজারে দরপতন হচ্ছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক ৩২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৫৫ পয়েন্টে নেমে আসে। এটি আগের তিন বছরের মধ্যে সূচকের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিএসইর প্রধান সূচক ৪ হাজার ৮৪৬ পয়েন্ট নেমেছিল। ওইদিনের পর আজ সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বৃহস্পতিবার ডিএসইতে মোট ৩৫৩টি কোম্পানির ৯ কোটি ৭৩ লাখ ১৯ হাজার ৯০৪ টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৪৬টির, কমেছে ২৬৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দাম। এদিন ডিএসইতে ৩৮৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২৬০টি কোম্পানির ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ১৯২টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া এসব শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ৪৪টির, কমেছে ১৯০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। দিনশেষে সিএসইতে ১৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮৮ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ৭৬০ পয়েন্ট নেমে আসে।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন