বিজ্ঞাপন

এনআরসি নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই: হাসিনাকে মোদি

September 28, 2019 | 1:33 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কিছু নেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, বিষয়টি (এনআরসি) একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ কথা বলেন নরেন্দ্র মোদি। চলমান জাতিসংঘ সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশন এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।

আরও পড়ুন- সন্ত্রাস-চরমপন্থায় জিরো টলারেন্স পুনর্ব্যক্ত করলেন হাসিনা-মোদি

বিজ্ঞাপন

নিউইয়র্কের বাংলাদেশ মিশন জানিয়েছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এনআরসি প্রসঙ্গ উঠলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটি একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এতে বাংলাদেশের চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, এনআরসি ইস্যুতে ভারতের মন্ত্রী থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিদিনই মন্তব্য করছেন। ভারতের জনপ্রতিনধিদের মন্তব্যে বাংলাদশের নামও জড়ানো হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এনআরসি ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে এখনই রাজনৈতিক আলোচনা করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যৎ ঝামেলা এড়াতে ঢাকাকে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বহুল আলোচিত তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়েও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে।

বৈঠকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ নরেন্দ্র মোদি। তিনি এসময় ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ সংগ্রাম এবং সাধারণ মানুষের প্রতি তার শ্রদ্ধার কথাও গভীরভাবে স্মরণ করেন মোদি। উন্নত নৈতিক মূল্যবোধের কারণে বঙ্গবন্ধু মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম উচ্চ আসনে আসীন একজন নেতা বলেও মন্তব্য করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও আদর্শ তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। এজন্য তার জীবন ও কর্মকে আরও ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি নরেন্দ্র মোদি যে মনোভাব দেখিয়েছেন, তার প্রশংসা করেন তিনি।

বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানান। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরামর্শ দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলেন, সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সফরের জন্য উত্তম সময় হতে পারে। শেখ হাসিনার আমন্ত্রণ গ্রহণ করে নরেন্দ্র মোদি মন্তব্য করেন, ঐতিহাসিক এই দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে যুগপৎভাবে কাজ করবে।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার নিজের টুইটার অ্যকাউন্ট থেকে এক টুইটও করেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় টুইটে মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চমৎকার বৈঠক। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি, বিশেষত কীভাবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ আরও গভীর করা যায়।

বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়ার আগে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড এ কে আবদুল মোমেন সারাবাংলাকে বলেছিলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে যখন ঢাকা সফরে এসেছিলেন, তখন তার সঙ্গে এনআরসি নিয়ে আলাপ হয়েছে। আপনাদের (গণমাধ্যমকর্মী) সামনেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিষয়টি একান্তই তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আমি ভারতের মন্ত্রীর এই কথা বিশ্বাস করি।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ভারতের মন্ত্রী আমাকে আরও বলেছেন, তাদের (এনআরসি থেকে বাদ পড়া নাগরিক) কখনোই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে না।’ এবার নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে একই আশ্বাস দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন