Saturday 14 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভয় পেয়ে তারা আমাকে কথা বলতে দেননি: রিয়াজ


৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৪৯ | আপডেট: ৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৬:৪৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চিত্রনায়ক রিয়াজ আবার আলোচনায়। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) এফডিসিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি–বার্ষিক সভায় কথা বলতে না দেওয়ার প্রতিবাদে সভা থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। সভা থেকে বেরিয়ে রিয়াজ অভিযোগের আঙুল তোলেন শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির দিকে। সারাবাংলা ডট নেটের সাথে আলাপকালে রিয়াজ সেসব অভিযোগের আদ্যোপান্ত খুলে বলেছেন। তার কথা শুনেছেন রেজওয়ান সিদ্দিকী অর্ণ


কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগে শিল্পী সমিতির সভা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। আধঘণ্টা চেষ্টার পরও আপনাকে কথা বলতে না দেয়ার কারণ কী হতে পারে বলে মনে করেন?
এটার সঠিক কারণ জানলে ভালো হতো। আমার কাছে সব শিল্পী সমান। আমি মনে করি প্রতিটি শিল্পীর মর্যাদাও সমান। কোনো শিল্পীকে দু’রকম দৃষ্টিতে দেখতে পারিনা। আমার কাছে যেগুলো অনৈতিক মনে হয় সেগুলোর প্রতিবাদ করি সবসময়। এই শিল্পী সমিতি কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। এটা ব্যক্তিগত লাভের জায়গা নয়। এখানে কেবল শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করা হয়। সেকারণে শিল্পীদের জন্য কাজ করতে গিয়ে দেখি তাদের স্বার্থের পরিপন্থী অনেক কিছু ঘটছে ভিতরে ভিতরে। একই নিয়ম দুজনের জন্য দু’রকম করা হচ্ছে। যারা দুর্বল তাদের জন্য কথা বলার মানুষ নেই। এসব বিষয়গুলো নিয়ে আমি সব মিটিংয়ে প্রতিবাদ করেছি। শিল্পীদের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করেছি।

বিজ্ঞাপন
চলচ্চিত্র সমিতির বর্তমান কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে জয়ী হন রিয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

চলচ্চিত্র সমিতির বর্তমান কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে জয়ী হন রিয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

সভায় কথা বলেছেন সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রে লেখা নেই যে, সভায় তারা দুজন ছাড়া আর কেউ কথা বলতে পারবেন না। আমাকে কথা বলতে দেয়নি কারণ তারা হয়ত ভয় পেয়েছেন। আমি তো ইতিবাচক কথাও বলতে পারতাম। তারা আমার কথা না শুনেই ভয়ে কথা বলতে দেননি।

দু’জনের জন্য দুরকম নিয়ম—বিষয়টা পরিস্কারভাবে জানতে চাই।
শিল্পী সমিতির একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। সেই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী শিল্পী সমিতির কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। গঠনতন্ত্রের নিয়মে আছে, কোনো শিল্পীর যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ সিনেমা মুক্তি না পায় তাহলে তিনি সমিতির পূর্ণাঙ্গ সদস্য হতে পারবেন না। অথচ শিল্পী সমিতিতে এমন অনেক শিল্পীকে সদস্য করা হয়েছে যার একটি বা দুটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। আর পাঁচটির বেশি যার সিনেমা মুক্তি পেয়েছে তাকে সদস্য পদ দেওয়া হয়নি। কারণ, তিনি তাদের ভোটার নন। এটা তো চরমমাত্রার অনৈতিক কাজ। গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
শুধু এটা নয়, দেড় শ’র মতো শিল্পীর ভোটাধিকার স্থগিত করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সাধারণত কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভায় এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বার্ষিক সাধারণ সভা ঠিকই হয়েছে, কিন্তু তাদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শিল্পীদের সদস্যপদ ঝুলিয়ে রাখার অধিকার তাদের নেই। এভাবে ঝুলিয়ে রেখে তাদের ভোট দেয়ার অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই নিয়মতান্ত্রিক নয়।

শিল্পী সমিতির ফান্ড এদিক সেদিক হয়েছে বলে কী আপনার মনে হয়?
আমরা যারা মিশা-জায়েদ প্যানেলে ছিলাম তাদের ৭০ ভাগ সদস্য এবারের নির্বাচনে তাদের প্যানেলে নেই। এমন না যে, আমাদের বাদ দেয়া হয়েছে। আমরা তাদের বয়কট করে বের হয়ে এসেছি। কারণ, এই কমিটি আমাদের কখনো সন্তুষ্ট করতে পারেনি। এখানে প্রচুর স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। কমিটির ফান্ডে কোথা থেকে কত টাকা এসেছে, কিভাবে খরচ হয়েছে তার হিসাব দেখার অধিকার প্রতিটি শিল্পীর দেখার এখতিয়ার আছে। কিন্তু তারা কখনো তা দেখাননি। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো একটি হিসাব দেখানো হয়েছে। আমি এমন না যে হিসাব নিকাশ বুঝি না। শুধু আমি না, আমাদের শিল্পীরা এই হিসাব কখনোই দেখতে পারেননি। আপনি যদি অন্য শিল্পীকে জিজ্ঞেস করেন, তিনিও একই কথা বলবেন। যাচাই করতে পারেন।

শুক্রবারে অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক সভা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

শুক্রবারে অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক সভা। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সভায় আপনাকে মঞ্চে সিনিয়রদের সঙ্গে বসতে বলা হয়েছিল। আপনি না বসে সাধারণ শিল্পীদের চেয়ারে বসেছেন। কারণ?
আমাকে সিনিয়রদের সাথে মঞ্চে বসতে বলেছেন মাসুম বাবুল। উনি আমাদের কমিটির কেউ নন। তাছাড়া চেয়ারে বসাটা বড় কথা না। ওখানে চেয়ারে বসে কমিটির পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছিল। আমি তো এবার কমিটিতে নেই। তাই সাধারণ শিল্পীদের চেয়ারে বসেছি। সবসময় আমি নিজেকে সাধারণ শিল্পী মনে করি।

গতবার আপনি মিশা–জায়েদ প্যানেলকে সমর্থন করেছেন। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচনও  করেছেন। এখন কী মনে হয় এই কমিটিকে সমর্থন করা আপনার জন্য ভুল ছিল?
এখন উপলব্ধি হচ্ছে, আমরা ভুল করেছি। তাদের বাইরের ভালোমানুষি দেখে বিশ্বাস করেছি। মানুষের ভিতরটা দেখা যায় না বলে মানুষ ভুল করে। আমরা যারা তাদের সমর্থন করেছি তারা প্রত্যেকেই ভুল বুঝতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী রিয়াজ ও ফেরদৌস। ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী রিয়াজ ও ফেরদৌস। ছবি: সংগৃহীত

শিল্পী সমিতির  দাবি, তাদের কমিটির সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩ তম অধিবেশনে আপনাকে ও ফেরদৌসকে তার সফরসঙ্গী করেছিলেন। এতে তো আপনাদের সন্তুষ্ট থাকার কথা।
গতকালকের বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক তার লিখিত বক্তব্যে এই কথাটি বলেছেন। এটা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে। আমাকে ও ফেরদৌসকে তাদের সুপারিশে সফরসঙ্গী করেছেন। এটার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তো প্রশ্ন থেকে যায়। তারা নিজেদের জন্য সুপারিশ না করে আমাদের জন্য সুপারিশ করেছেন। হাউ ফানি! তারা যে সুপারিশ করেছিলেন তার লিখিত কপি আমি দেখতে চেয়েছি, সেটা তারা দেখাতে পারেননি। তারা নিজেদেরকে বড় করে দেখানোর জন্য নানারকম মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। এভাবে আসলে কোনো সমিতির উন্নয়ন করা যায় না।

গত কমিটিতে আপনি সহ–সভাপতি ছিলেন। সিনেমায় না থাকলেও চিত্রনায়ক রিয়াজ সমিতি নিয়ে মাঝেমধ্যে খবরে আসতেন। এবার তো কমিটিতে নেই। সিনেমায়ও আপনি অনুপস্থিত। রিয়াজ কী খবরের বাইরে চলে যাবে?
সিনেমা করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। এখন মনে হচ্ছে সিনেমায় কাজ করা উচিত। বছরে একটি বা দুটি সিনেমায় কাজ করা উচিত। একটি সিনেমার বিষয়ে কথাও হচ্ছে। এ বছর হয়ত হবে না। আগামী বছর থেকে সিনেমায় আসতে পারি। অভিনয় করতে পারি আবার প্রযোজনাও করতে পারি। তবে এখনই আওয়াজ দিতে চাই না। সংবাদ সম্মেলন করে জানাব।

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন রিয়াজ সাক্ষাৎকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর