বিজ্ঞাপন

কেপিএম বন্ধের চক্রান্ত চলছে, দাবি অবসরে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারীদের

October 5, 2019 | 3:58 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: লোকসানের ভারে জর্জরিত দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত একমাত্র কাগজকল ‘কর্ণফুলী পেপার মিলকে’ বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কারখানাটির অবসরে যাওয়া শ্রমিক-কর্মচারী ও তাদের সন্তানেরা। তাদের দাবি, বেসরকারি কাগজকল মালিকদের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটি বন্ধের চক্রান্ত করছেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে ‘কেপিএম’র সাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের সন্তানেরা এই দাবি করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় এবং যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি, সুইডেনের কারিগরি সহায়তায় ১৯৫৩ সালে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে কর্ণফুলী পেপার মিল (কেপিএম) প্রতিষ্ঠিত হয়। এশিয়ার বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী এই কাগজকলের বাৎসরিক উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৩০ হাজার মেট্রিকটন। কিন্তু ৩৪ হাজার মেট্রিকটন কাগজ উৎপাদনের রেকর্ডও রয়েছে এই কারখানার। কেপিএম’র মুনাফা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কর্ণফুলী রেয়ন কমপ্লেক্স। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভঙ্গুর অর্থনীতির উন্নয়নে এই কারখানার বিশাল অবদান রয়েছে। অথচ এই কারখানাটিই এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে।

তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর এই কারখানা থেকে দৈনিক ১৩০ থেকে ১৫০ মেট্রিকটন কাগজ উৎপাদন হলেও বর্তমানে এর উৎপাদন দৈনিক ১০ থেকে ১৫ মেট্রিকটনে নেমে এসেছে। একইসঙ্গে বন্ধ রয়েছে দেশের একমাত্র পাল্প উৎপাদন শাখা এবং লাভজনক কনভার্টিং শাখাও।

বিজ্ঞাপন

প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব, আধুনিক মেশিনারি সংযোজন না করা, দক্ষ শ্রমিকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অন্যত্র বদলি করা, সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে কেপিএম ধীরে ধীরে লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে দাবি তাদের।

বক্তারা বলেন, দেশের ব্যক্তিমালিকানাধীন কাগজ কলগুলোর দিন দিন ঈর্ষণীয় উন্নতি হচ্ছে। এর বিপরীতে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই কারখানা লোকসানের জাঁতাকলে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন কাগজকলের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কেপিএম বন্ধে সক্রিয় আছে। তারা এটিকে লোকাসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখ্যায়িত করে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য উচ্চপর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে কাগজের ব্যবসার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে চলে যায়। কিন্তু সরকারি মালিকানাধীন এই কারখানা বন্ধ হয়ে গেলে কাগজের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়বে। হুমকির মুখে পড়বে দেশের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত সন্তানদের শিক্ষাব্যবস্থা।’

বক্তারা অভিযোগ করেন, কেপিএম’র দূরবস্থার কারণে বকেয়া পড়ে আছে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা। একইসঙ্গে চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধ না করায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কয়েক’শ অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারী।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে আসা শাকের হোসাইন নামে একজন সাবেক কর্মচারী দাবি করেছেন, কেপিএম’র কাছে তার পাওনা সাড়ে ১৪ লাখ টাকা। আব্দুল কাদের নামে একজন ২৩ লাখ এবং ২০১৭ সালে প্রশাসনিক কর্মকর্তার পদ থেকে অবসরে যাওয়া ফখরুল ইসলাম ২৫ লাখ টাকা কেপিএম’র কাছে পাবেন বলে জানিয়েছেন।

বক্তারা আধুনিকায়নের মাধ্যমে কারখানাটিকে পূর্ণমাত্রায় সচল করে এটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সফিউল করিম খোকন, কাজী নজরুল ইসলাম, মাহবুবুল সজীব ও সুবিমল চৌধুরী প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন