February 12, 2018 | 3:33 pm
জাহিদ-ই-হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ম্যাচ চলাকালীন মাঠের মধ্যে ঢুকে রেফারির সঙ্গে খারাপ আচরণের কারণে রহমতগঞ্জের কোচ কামাল বাবুর বিপক্ষে শক্ত অবস্থানেই আছে বাফুফে। ‘শাস্তি পেতেই হবে তাকে’ এমন সিদ্ধান্তে ‘অনড়’ দেশের সর্বোচ্চ ফেডারেশন। ক্ষমা চেয়েও পার পাচ্ছেন না পুরান ঢাকার ক্লাবের এই কোচ। এমনকি সাময়িক নিষিদ্ধের গুঞ্জনও উঠেছে।
দেশের ঘরোয়া ফুটবলে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি কামাল বাবুকে আর্থিক দণ্ডও দিতে পারে বাফুফের শৃঙ্খলা কমিটি। একটি বিশ্বস্তসূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
রেফারি-ম্যাচ কমিশনারের অভিযোগ-প্রতিবেদন ও গণমাধ্যমের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণে এনে শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়েছে। বাফুফে থেকে কোচ কামাল বাবুকে ডাকা হয়েছে।
এই ঘটনার সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে স্বাধীনতা কাপের সেমি ফাইনালে খেলতে নামে রহমতগঞ্জ। ম্যাচের তখন ৪০ মিনিট। গোলশূণ্য দুই দলই। এমন সময় রেফারি চট্টগ্রাম আবাহনীর পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি দেন। সেই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি কামাল বাবু। নিয়মবহির্ভূতভাবে মাঠে ঢুকে রেফারির দিকে তেড়ে যান। রেফারির সঙ্গে তর্কে জড়িয়েও পড়েন। বাক-বিতণ্ডা চলে প্রায় ৭-৮ মিনিট।
ডাগ আউটে ফেরার পথে চট্টগ্রাম আবাহনীর সিনিয়র খেলোয়াড় মামুনুল ইসলাম মামুনের সঙ্গেও আরেকদফা তর্কে জড়িয়েছেন। মামুনকে অবশ্য হলুদ কার্ড দিয়ে সতর্ক করে রেফারি। তবে, এমন আচরণের পরেও কোচ ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে ছিলেন!
কোচের ফুটবল শৃঙ্খলাজনিত কাণ্ডের পরেও লালকার্ডহীন থাকাটাকে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে ম্যাচ দেখতে আসা জাতীয় দলের কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ডকে। ভিআইপি বক্স থেকে নেমে প্রেস বক্সে এসে বিস্ময়ের কথা জানান, ‘ফুটবলে নিয়ম অনুযায়ী কোচ ডাগআউট থেকে মাঠে গেলে তাকে লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দিতে হবে; কিন্তু রহমতগঞ্জ কোচ কেন ডাগআউটে? এমনটা তো আমি আগে কখনও দেখিনি।’
তবে, কোচ কামাল বাবু অবশ্য ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, ‘আমি ছেলেদের ঠাণ্ডা করবার জন্য গিয়েছিলাম।’ পরেরদিন অবশ্য ক্ষমা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টাটাস দিয়েছেন।
কামাল বাবুর এমন অসৌজন্যমূলক আচরণে হতবাক বাফুফেও। তাই কোনও ছাড় দিতে নারাজ দেশের ফুটবল এই সংস্থা। পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, ‘সত্যিই অবাক করার মতো ব্যাপার। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। ম্যাচ রেফারি, ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট দেখবো। পত্রিকা-টেলিভিশনের ভিডিও দেখবো। এ বিষয়ে কাজ করবে শৃঙ্খলা কমিটি।’
রেফারির সঙ্গে অফুটবলীয় আচরণ ছাড়াও এর আগে বিপিএলেও ম্যাচ পাতানো নিয়ে আলোচিত ছিলেন কামাল বাবু। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবকে পাতানো খেলার প্রস্তাব দেওয়ার কথাটি একবার মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলেন তিনি। তার অধীনে স্বাধীনতা কাপে শেখ জামালের বিপক্ষে রহমতগঞ্জের ম্যাচটিও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।
সবকিছু মিলে কামাল বাবু নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক দণ্ডের মুখে পড়ে আছেন। সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে বলে জানা যায়।
সারাবাংলা/জেএইচ/এমআরপি