বিজ্ঞাপন

‘বুয়েট ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীবান্ধব না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন’

October 12, 2019 | 2:48 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। এ কারণে তাদের আন্দোলন আগামী দুই দিন শিথিল থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সহায়তাও করবেন তারা। তবে বুয়েট ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীবান্ধব হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা তাদের ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১২ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার পর বুয়েট শহিদ মিনারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন- ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে বুয়েটে, কাল-পরশু আন্দোলন স্থগিত

তারা বলেন, দুই দিনের জন্য আমাদের চলমান এই আন্দোলন শিথিল করা হয়েছে। আগামী পরশু বুয়েট ক্যাম্পাসে ১২ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছে। তাদের কথা ভেবে আমরা আগামী দুই দিন (রোববার ও সোমবার) আন্দোলন শিথিল রাখব। এই সময়ে আমরা পরীক্ষার্থীদের সহায়তা করব।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের অভিভাবকরাও থাকবেন। তাদের সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। পরীক্ষা দিতে এসে তারা যেন কোনো সমস্যায় না পড়েন, সে বিষয়ে সবাইকে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- পঞ্চম দিনের মতো রাজপথে বুয়েট শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসকে স্থিতিশীল করার জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছিলাম। এসব দাবি পূরণের উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন। তবে এই পাঁচ দফা দাবিই শেষ কথা নয়। আমাদের মূল যে ১০ দফা দাবি রয়েছে, সেই দাবি পূরণের জন্য ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) থেকে ফের আন্দোলন শুরু হবে। বুয়েট ক্যাম্পাস যতদিন শিক্ষার্থীবান্ধব না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে আবরার হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান বুয়েট শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, আমরা যে পাঁচ দফা দাবি তুলেছি, এই দাবিগুলো বুয়েট প্রশাসনের কাছে। এই দাবি কোনোভাবেই সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নয়। আমাদের আন্দোলনও তাই সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে না। আমাদের এই আন্দোলন বুয়েট প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন- পাঁচ দফা পূরণ হলে তবেই বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা

শিক্ষার্থীরা জানান, এরই মধ্যে বুয়েট প্রশাসন থেকে তাদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গতকালই আবরার হত্যায় জড়িত থাকায় গ্রেফতার ১৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মামলার চার্জশিটে নাম থাকলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। আমরা জানতে পেরেছি যেসব তিতুমীর ও আহসানউল্লাহ হলের জন্য সিসিটিভি কেনা হয়েছে। যেসব হলে সিসিটিভিতে সমস্যা রয়েছে, সেগুলোর সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ শুরু হয়েছে। বহিরাগতদের বিষয়ে আমরা যে দাবি তুলেছি তাও পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশসন। আমরা আশা করব, আমাদের সব দাবিই মেনে নেওয়া হবে।

গত সোমবার (৭ অক্টোবর) ভোরে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় আবরার ফাহাদের মরদেহ। জানা যায়, আগের দিন রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে তাকে তার নিজের ১০১১ নম্বর রুম থেকে ডেকে নিয়ে যান ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত— এমন অভিযোগে তার মোবাইল থেকে মেসেঞ্জার ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চেক করা হয়। পরে মারধর করা হয়। মারধর শেষে আবরার নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে সিঁড়িতে ফেলে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। চিকিৎসকরা জানান, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় আবরারের।

বিজ্ঞাপন

আবরারের মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট ক্যাম্পাস। র‌্যাগিংসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নানা ধরনের নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধসহ ক্যাম্পাসে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে তারা শুরুতে সাত দফা ও পরে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন।

আরও পড়ুন-

আবরার হত্যা: অমিত সাহা আটক

আবরারের রুমমেট মিজান আটক

‘আবরার হত্যা মামলার চার্জশিট শিগগিরই’

বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ, ১৯ আসামি বহিষ্কার

আবরার হত্যা: পলাতক আসামি তোহা গ্রেফতার

আবরার হত্যায় স্বীকারোক্তি দিলেন ছাত্রলীগ নেতা সকাল

আবরার হত্যার ঘটনা পুঁজি করে মাঠে নেমেছে ছাত্রশিবির

আবরার হত্যা বাক স্বাধীনতার ওপর নিষ্ঠুরতম আঘাত: টিআইবি

২০১১ নয় ২০০৫ নম্বর রুমে মারা যান আবরার, হত্যায় জড়িত ২২ জন

‘বুয়েট প্রশাসন আরেকটু কেয়ারফুল থাকলে আবরার হত্যা নাও ঘটতে পারত’

আবরারকে মারা হচ্ছে জানলে প্রশাসনের অনুমতির অপেক্ষা করতো না পুলিশ

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন