বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি মেনে নিয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তি

October 12, 2019 | 4:34 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

বুয়েট থেকে: আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা পূরণ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কর্তৃপক্ষ। এই বিজ্ঞপ্তি পাওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আগামী ১৩ ও ১৪ অক্টোবর আন্দোলন শিথিল করেছেন। বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান এই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।

বিজ্ঞাপন

গতকাল রাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এই পাঁচ দফা দাবি দ্রুত পূরণে কর্তৃপক্ষকে আল্টিমেটাম দিয়েছিল। অন্যথায় তারা বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে দেবে না বলেও হুঁশিয়ারি করেছিল। পরে শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

শিক্ষার্থীদের এক নম্বর দাবি ছিল- আবরার ফাহাদ হত্যায় গ্রেফতার সবাইকে সাময়িক এবং অভিযোগপত্রে যাদের নাম আসবে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই মর্মে নোটিশ দেবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ প্রদান করেছে।

বিজ্ঞাপন

এই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের ১০১১ কক্ষের আবাসিক ছাত্র আবরার ফারহাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক হত্যা ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত ১৯ জনকে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। চলমান তদন্ত শেষে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের পর ডিসিপ্লিনারী বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিন্ডিকেটের অনুমোদনের মাধ্যমে দোষীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে। এছাড়া আদালতের বিচারে এই মামলায় অন্য কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে তাকেও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।’

শিক্ষার্থীদের দুই নম্বর দাবি ছিল- আবরার হত্যা মামলার সম্পূর্ণ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করবে এবং আবরারের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষ বাধ্য থাকবে এবং সেটা নোটিশে লেখা থাকতে হবে। এ বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা চলাকালীন সব খরচ বুয়েট প্রশাসন বহন করবে এবং আবরার ফাহাদের পরিবারকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’

আন্দোলনকারীদের তিন নম্বর দাবি ছিল- সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে হলে অবৈধভাবে সিট দখলকারী ছাত্রদের উৎখাত করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্রসংগঠনগুলোর অফিস রুম সিলগালা করতে হবে। সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পরে ভবিষ্যতে কেউ যদি এ ধারনের সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়ায় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী ব্যবস্থা নেবে তা বিস্তারিত লিখে নোটিশ জারি করতে হবে। পরবর্তীতে তা অর্ডিন্যান্সে যুক্ত করা হবে সে কথাও নোটিশে উল্লেখ থাকবে। এ ধরনের কার্যক্রম তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে এবং কমিটির কথা নোটিশে উল্লেখ থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কর্তৃপক্ষ এই দাবি পূরণ করেও একটি নোটিশ দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে- সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠনের কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো।

আন্দোলনকারীদের চার নম্বর দাবি ছিল- ওয়েবসাইটে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম যুক্ত করতে হবে যেখানে বুয়েটে পূর্বে ঘটে যাওয়া সব ধরনের র‌্যাগিং এবং ভবিষ্যতে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা উল্লেখ থাকবে। একটি কমিটি করতে হবে যারা অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে।

কর্তৃপক্ষ এই দাবি পূরণ করে একটি নোটিশ দিয়েছে। তাতে লেখা আছে- র‌্যাগের নামে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা সংক্রান্ত অভিযোগ জমাদান ও প্রকাশের জন্য একটি ওয়েববেসড পোর্টাল তৈরি করা হবে। যাতে কোনো ছাত্র একটি ফর্মের মাধ্যমে তার অভিযোগ অনলাইনে জমা দিতে পারবে। অভিযোগসমূহ পর্যবেক্ষণ করে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের শেষ দাবি ছিল- প্রত্যেক হলের বারান্দার দুই পাশে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং সেটা মনিটরিং করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। আমরা চাই না, ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯তম ব্যাচে যেসব অনুজরা আসবে তারা একটি অসুস্থ একাডেমিক কালচারের অংশ হোক। বুয়েট কর্তৃপক্ষ আন্দোলনকারীদের এই দাবি পূরণ করেও একটি নোটিশ দিয়েছে।

এছাড়া হলের রাজনৈতিক কক্ষ অপসারণ করা হবে উল্লেখ করেও কর্তৃপক্ষ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।

সারাবাংলা/কেকে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন