বিজ্ঞাপন

১২ দিনের মধ্যে দাবি পূরণ হবে, আশ্বাস বুয়েট উপাচার্যের

October 13, 2019 | 9:40 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম আগামী ১২ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তাবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের পূরণে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

রোববার দুপুরে (১৩ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সাংবাদিকদের উপাচার্য বলেন, আমাদের সন্তানদের ভালো দেখা তো আমাদেরই কাজ। তবে অবস্থা অনেক সময় এমন থাকে, আমি নিজেই অসহায় হয়ে পড়ি। আমার সঙ্গে তাদের একটি প্রতিনিধি দলকে কথা বলার অনুরোধ করেছিলাম। তারা তা মানেনি। একটি মবের সমনে গিয়ে এই গরমের মধ্যে তো কথা বলা যায় না। শেষ পর্যন্ত তারা আমার সঙ্গে বসেছে, আমার কথা রেখেছে। প্রথমে মানেনি। পরে একটু দেরিতে হলেও তারা বুঝতে পেরেছে— এটা ভালো লেগেছে। আমাদের এখানে কোনো রকমের গ্যাপ নেই।

শিক্ষারর্থীদের সবগুলো দাবি যৌক্তিক স্বীকার করে উপাচার্য বলেন, আমার তো হাত-পা বাঁধা। আমি তো রাজা না যে যা ইচ্ছা তাই করতে পারব। তবে চেষ্টার ত্রুটি হবে না। সব দাবি তো আমাদের হাতে নেই। এজন্যই বলেছিলাম, নীতিগতভাবে দাবিগুলো মেনে নিয়েছি। এর মধ্যে আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসেছি। আমি যা যা দিতে পারব, ওনার কাছ থেকে আদায় করেছি। আমি নিশ্চিত করছি, যা আশ্বাস দিয়েছি, সবগুলোই বাস্তবায়ন করতে পারব।

বিজ্ঞাপন

বুয়েট ক্যাম্পাস থেকে বহিরাগতদের বের করার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, অভিযান চলছে। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুই দিন অভিযানের গতি একটু ধীর হবে। আগামী ১২ দিনের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেজাল্ট দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

রাজনীতি বন্ধের বিষয়ে উপাচার্য ড. সাইফুল বলেন, রাজনীতি বন্ধ করার ক্ষমতা আমার নেই। তবুও বাচ্চারা দাবি করেছে, আমি মেনে নিয়েছি। আর এটাও সরকার অনুমতি দেওয়ায় করেছি। যখন তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন যে, এটা বুয়েটের ব্যাপার, তখন আমি সাহস পেয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের অবদানের কথা তুলে ধরে অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ৯ বছর পরে আমি কনভোকেশন (সমাবর্তন) করেছি, এই ক্রেডিট কেউ আমাকে দিলো না। আমার খুব কষ্ট লেগেছে। আমি একা সারারাত বসে থেকে সব দেখাশুনা করেছি। সেই কনভোকেশন নিখুঁতভাবে হয়েছে। পরবর্তী কনভোকেশনের জন্যও আমি অ্যাপ্লিকেশন করে রেখেছি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ বিষয়ক পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বুয়েটের বিভিন্ন হলে বহিরাগত যারা ছিল, তাদের ৮০ থেকে ৯০ ভাগকে এরই মধ্যে বের করে দেওয়া হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ভোরে বুয়েটের তড়িৎকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ ও শেরে বাংলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ পাওয়া যায় হলের সিঁড়িতে। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আগের রাতে তাকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের ১৯ জনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে চকবাজার থানায়।

আবরারের মরদেহ উদ্ধারের পর ৭ অক্টোবর থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ শুরুতে সাত দফা ও পরে ১০ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। পরে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে শিক্ষার্থীরা সংলাপে বসেন উপাচার্যের সঙ্গে। সেখানে তারা স্বল্প সময়ে পূরণের উপযোগী পাঁচ দফা দাবি মেনে না নিলে বুয়েটের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ার আলটিমেটাম দেন।

পরে ওই সংলাপ থেকেই বুয়েটে সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম। বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের যে ১৯ জনকে আবরার হত্যার আসামি করা হয়েছে, তাদের সাময়িক বহিষ্কার করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ প্রতিশ্রুতিও দেন, আবরার হত্যা মামলার চার্জশিটে যাদের নাম আসবে, তাদের সবাইকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।

বিজ্ঞাপন

পরে গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নোটিশ জারি করে বুয়েট প্রশাসন। শিক্ষার্থীরাও ঘোষণা দেন, আগামীকাল সোমবার (১৪ অক্টোবর) বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে তারা বাধা দেবেন না। বরং ভর্তি পরীক্ষা দিতে আগত পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন তারা।

সারাবাংলা/কেকে/টিআর

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন