বিজ্ঞাপন

মোবাইল-ল্যাপটপ চেক; আবরারকে একাধিক থাপ্পর মারে রবিন

October 14, 2019 | 11:04 pm

সিনিয়র করেসপপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে আনার পর প্রথমে তার মোবাইল ফোন চেক করেন মেহেদী হাসান রবিন। এরপর তার ল্যাপটপ চেক করা হয়। এর মাঝে আবরারকে কষে কষে থাপ্পর মারে রবিন। থাপ্পর খেয়ে প্রথমে কিছু না বললেও এক পর্যায়ে আবরার মারের ভয়ে বিভিন্ন জনের নাম বলতে থাকে। পরে অনিক, সকাল, জিয়ন ও মুজাহিদ ক্রিকেটের স্ট্যাপ দিয়ে পেটায় আবরারকে। পেটাতে পেটাতে স্ট্যাম্প ভেঙেও যায় বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে রবিন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের খাস কামরায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) মেহেদী হাসান রবিন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য দেয় বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।

জবানবন্দিতে তিনি উল্লেখ করেন, আবরারের রুমমেট মিজানের কাছ থেকে জানতে পারে যে, আবরার শিবির করে। মিজানই মূলত খবর আদান-প্রদান করে অমিত সাহাদের কাছে। তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে আর কারা শিবির করে তা বের করা যাবে বলেও জানান মিজান। মিজানের কথা মতই সেদিন জেমিকে দিয়ে আবরারকে তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ ডেকে আনা হয়। ২০১১ নম্বর কক্ষে আসার পরপরই রবিন আবরারের কাছ থেকে ফোনটা কেড়ে নিয়ে চেক করতে থাকে। কিছু না পেয়ে ল্যাপটপ চালু করে বিভিন্ন ফাইল ঘাটাঘাটি করে। একদিকে ফোন-ল্যাপটপ চেক অন্যদিকে আবরারের দুই গালে থাপ্পর মারছিল রবিন।

এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া আসামিরা হলো- ইফতি মোশাররফ সকাল, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, অনিক সরকার ও মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ।

বিজ্ঞাপন

যারা এখনও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি তারা হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মিজানুর রহমান মিজান ও ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না। তাদেরকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।

আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে এজাহারে উল্লেখিত ১৫ জন এবং এজাহার বহির্ভূত ৪ জন রয়েছে। ১৯ আসামির মধ্যে ৮ জন ডিবি পুলিশের কাছে রিমান্ডে রয়েছে। বাকি ১১ জন কারাগারে।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার নেতাকর্মী। শিবির সন্দেহেই তাকে প্রথমে ডেকে এনে পেটানো হয়। পেটানোর এক পর্যায়ে আবরার মারা যায়। পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে গেলেও শেরেবাংলা হল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এ বিষয়টি প্রমাণ হয়েছে। তবে আরও কোনো কারণ আছে কিনা তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।

বিজ্ঞাপন

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার সোমবার (১৪ অক্টোবর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তদন্ত কাজ শেষ হবে। আশা করছি, আদালত যে সময় (১৩ নভেম্বর) দিয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া যাবে।’

গত ৬ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদকে পেটায়। ওইদিন ভোররাতে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ির নিচ থেকে আবরারের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী মামলা চক বাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন