বিজ্ঞাপন

ঢাবির ‘ক’ ইউনিটে ফলাফলে অসংগতির অভিযোগ ভর্তিচ্ছুদের

October 20, 2019 | 8:17 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের অধীনে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে অসামঞ্জস্য ও ভুল ফল প্রকাশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ফলাফল বাতিল করে পুনরায় খাতা মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায়, এবছর ‘ক’ ইউনিটে সমন্বিতভাবে পাসের হার মোট পরীক্ষার্থীর ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ।

ভর্তি পরীক্ষায় নৈর্ব্যক্তিক অংশে পাস করেছেন ২৫ হাজার নয়শত ২৭ জন পরীক্ষার্থী। আর নৈর্ব্যক্তিক ও লিখিত অংশে সমন্বিতভাবে পাশ করেছেন ১১ হাজার দুইশ সাতজন পরীক্ষার্থী।

এবছর ‘ক’ ইউনিটের ১ হাজার ৭৯৫টি আসনের বিপরীতে আবেদন করেছিল ৮৮ হাজার ৯৯৬ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৮৫ হাজার আটশত ৭৯ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফলাফলে অসামঞ্জস্য থাকার অভিযোগ তুলেছেন অনেক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক। এজন্য ফলাফল বাতিল করে পুনরায় খাতা মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন।

ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় অনেকের ‘ক’ ইউনিটের গণিত অংশের ফলাফলে ভুল হয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, গণিত অংশের ফলাফল উল্টো দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অনেক শিক্ষার্থীর গণিত অংশে ১০ প্রশ্ন সঠিক ও তিনটি প্রশ্ন ভুল হয়েছে বলে তারা ভর্তি পরীক্ষার পর মিলিয়ে দেখেছিলেন। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, বিষয়টি পুরো উল্টো। অর্থাৎ তিনটি সঠিক ও ১০ টি ভুল দেখাচ্ছে। আবার অনেকে অন্য সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেলেও গণিত অংশে ১৫টি ভুল উত্তর দেখাচ্ছে। একরকম অনেক শিক্ষার্থীই অভিযোগ তুলেছেন। তারা অভিযোগ করছেন, সবার ক্ষেত্রেই গণিত অংশের ফলাফল উল্টো হয়েছে। এটা ফলাফল তৈরির ভুল। ভুল উত্তরের সংখ্যার জায়গায় সঠিক উত্তরের সংখ্যা এবং সঠিক উত্তরের সংখ্যার জায়গায় ভুল উত্তরের সংখ্যা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, খাতা পূনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকলেও খাতা পূনর্মূল্যায়ন নয় পুরো ফলাফল বাতিল করে নতুন করে সকল খাতা মূল্যায়নের দাবি জানিয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক। তাদের দাবি, গণিত অংশে ভুলের বদলে সঠিক এবং সঠিকের বদলে ভুল উত্তর এসেছে। এর ফলে যে শিক্ষার্থীর ১০টি উত্তর ভুল এবং ৫টি সঠিক হয়েছে কিন্তু তার ফল এসেছে ১০টি সঠিক এবং ৫টি ভুল। স্বাভাবিকভাবেই সে খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য আবেদন করবে না। ফলে অনেক অযোগ্য পরীক্ষার্থী যারা গণিত অংশে অকৃতকার্য হতো তারাও উল্টো ফলাফলের জন্য মেধা তালিকায় অনেক এগিয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

তাই পুনর্মূল্যায়ণের আবেদন নয়, ফলাফল বাতিল করে নতুন করে সকল পরীক্ষার্থীর খাতা মূল্যায়ন করার দাবি জানিয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক।

ফলাফলে অসামঞ্জস্যের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে যারা আবেদন করবে আমরা তাদেরটা যাচাই করে দেখবো। অভিযোগ যেগুলো আসবে আমার সবগুলো খতিয়ে দেখবো। আমরা কোনোটাই উপেক্ষা করবো না। আমরা প্রত্যেকটা অভিযোগ খতিয়ে দেখবো। আমরা সবার কাছে থেকে তথ্য পাই, এখন গণিতের বিষয়ে অভিযোগ আসছে, আরও কোথায় কোথায় সমস্যা আছে, তা আমরা মিটিংয়ে বসে আলোচনা করবো।’

এদিকে, অনেক শিক্ষার্থী দাবি করেছেন তারা নৈর্ব্যক্তিক অংশে পাশ করলেও তাদের লিখিত অংশে কোনো নম্বর দেখাচ্ছে না।

এ বিষয়ে অধ্যাপক তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘২৫ হাজার শিক্ষার্থী পাশ করেছে এমসিকিউ অংশে। আমরা ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর লিখিত অংশ মূল্যায়ন করেছি। আমাদের নির্দেশিকায় ছিল আসন সংখ্যার পাঁচগুণ দেখবো, সেখানে আমরা সাতগুণ খাতা দেখেছি।’

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, ৭৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক ও ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৯০ মিনিটের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার জন্য ৫০ মিনিট ও লিখিত পরীক্ষার জন্য সময় ছিল ৪০ মিনিট। প্রতিটি নৈর্ব্যক্তিকের জন্য ১ দশমিক ২৫ নম্বর বরাদ্দ ছিল। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা গেছে শূন্য দশমিক ২৫ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে হলে প্রার্থীকে নৈর্ব্যক্তিক অংশে ৩০ ও লিখিত অংশে ১২ নম্বরসহ মোট ৪৮ নম্বর পেতে হয়েছে। এ ছাড়া বিষয় ভিত্তিকভাবেও পরীক্ষার্থীদের পাস করতে হয়েছে।

সারাবাংলা/কেকে/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন