বিজ্ঞাপন

উত্তাল জাবিতে চলছে সংহতি সমাবেশ

November 6, 2019 | 1:15 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে ফের বিক্ষোভ শুরু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটায় জাবির উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে যোগ দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষকও। শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন- জাবি অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তানজিম উদ্দিন খান। সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষকরা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি উপাচার্যবিরোধী বক্তৃতাও করছেন।

এর আগে, আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনের অবস্থান স্থগিত করা হয় গত রাতে। তবে বুধবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের থমথম পরিস্থিতি বিরাজ করতে থাকে। সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বরে ভিসিবিরোধী মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও তারা মিছিলে কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি। পরে মিছিলটি উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।

বিজ্ঞাপন

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক তারেক রেজা। তিনি দুর্নীতিবিরোধী এই আন্দোলনের সংগঠকদের একজন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘উপাচার্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনীতিকরণ করে ফেলেছে। নিজের দুর্নীতি ও অক্ষমতা ঢাকতে তিনি প্রশাসনকে ব্যবহার করছেন। শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। এটা অন্যায়। শিক্ষার্থীরা যে দাবিতে আন্দোলন করছে সে দাবি ন্যায্য। তারা দুর্নীতির বিচার চায়। আমরাও চাই এই অন্যায়ের বিচার হোক।’

আন্দোলনের জামাত-শিবিরের সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রাম বন্ধ করতে তারা কিছু শব্দের অস্ত্র ব্যবহার করে। এভাবে তারা সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নিতে চায়। দুর্নীতির রাস্তা-প্রশস্ত করে। এবারও তেমনটাই করতে চেয়েছেন জাহাঙ্গীরনগরের দুর্নীতিগ্রস্ত উপাচার্য। দ্রুততম সময়ে দুর্নীতি তদন্ত করে তাকে অপসারণ করতে হবে। তার দুর্নীতির বিচার করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনরত একজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করছেন উপাচার্য। তার মানহীন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হলে উপাচার্যকে সরাতে হবে। তার দুর্নীতির বিচার করতে হবে।’

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ চারজন পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন- শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন তুহিন ও দুই সদস্য অধ্যাপক মাহবুব কবির এবং অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে উপাচার্য ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সবধরনের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অনলাইনে বিষয়ভিত্তিক পছন্দক্রম ফরম পূরণ পূর্বের নির্দেশনা অনুযায়ী চলবে। বুধবার সকালে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ নভেম্বরের চারুকলা বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ভর্তিবিষয়ক নির্দেশনা জানানো হবে।

উল্লেখ্য, উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে গতকাল বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে আট শিক্ষক, চার সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হন।

এরপর এক জরুরি বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং বিকেল সাড়ে ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত অমান্য করেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

সারাবাংলা/টিএস/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন