বিজ্ঞাপন

শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়ে স্মৃতির শহর থেকে বাদলের শেষ যাত্রা

November 9, 2019 | 8:04 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: শেষ যাত্রায় স্মৃতির শহর চট্টগ্রামের মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে গেলেন সদ্যপ্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান রাজনীতিক মঈন উদ্দিন খান বাদল। ছাত্র রাজনীতি থেকে মুক্তিযুদ্ধ, উত্তাল গণআন্দোলন, জাতীয় রাজনীতি, নির্বাচন- বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই চট্টগ্রাম ধারণ করে আছে বাদলের নানা স্মৃতি।

বিজ্ঞাপন

বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীতে বাদলের জানাজায় অংশ নেন তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা, বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মী ও চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ। তারা চোখের জলে বাদলকে জন্মভিটার উদ্দেশে শেষ বিদায় জানিয়েছেন, যেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

বিকেলে ঢাকা থেকে সড়কপথে বাদলের মরদেহ চট্টগ্রামে আসলে। চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া হয় গার্ড অব অনার। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় বাদলের কফিন। লাল-সবুজের পতাকায় ঢেকে দেওয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা বাদলের মরদেহ।

মাগরিবের নামাজের পর বৃষ্টির কারণে মসজিদেই হয় বাদলের জানাজা। এতে অংশ নেন সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, সাংসদ এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, আবু রেজা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী ও মাহফুজুর রহমান মিতা, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন, সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা।

এরপর মাঠের প্যান্ডেলে নিয়ে আসা হয় বাদলের মরদেহ। এসময় উপস্থিত নেতারা এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেন ররণাঙ্গনের বীর যোদ্ধা বাদলের কফিন। বিউগলে করুণ সুরে সশস্ত্র সালাম জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

এরপর মহানগর আওয়ামী লীগ, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ, জাসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এসময় ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘উনি আমাদের শ্রদ্ধেয় অগ্রজ। উনার মত রাজনীতিবিদ বর্তমানে বিরল।’

দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়েছি। সংসদে তার ভূমিকা ইতিহাসে লেখা থাকবে। উনার শেষ ইচ্ছা ছিল কালুরঘাট সেতু। আশাকরি এ সরকারের মেয়াদেই তা বাস্তবায়ন হবে।’

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে উনার অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছিল অপরিসীম। উনার ইচ্ছার কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বিজ্ঞাপন

নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, উনি ছোট দলে বড় নেতা ছিলেন। এক সাহসী মুক্তিযোদ্ধাকে আমরা হারালাম যার অভাব পূরণ হওয়ার নয়।

রাতে বোয়ালখালীর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ মাঠে এবং বাড়ির পাশে ইব্রাহিম নূর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আরও দুদফা জানাজা হবে। এরপর বোয়ালখালীর সারোয়াতলী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে বাদলকে দাফন করার কথা রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) ভোরে ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের জীবনাবসান হয়।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন