বিজ্ঞাপন

তুরিনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার ইঙ্গিত প্রসিকিউটরের

November 11, 2019 | 5:01 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম। অন্যদিকে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ব্যরিস্টার তুরিন আফরোজ।

বিজ্ঞাপন

আসামির সঙ্গে গোপন বৈঠকের কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তুরিন আফরোজকে অপসারণ করে সোমবার (১১ নভেম্বর) আইনমন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এরপরেই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়  জেয়াদ আল মালুম ও তুরিন আফরোজ এসব মন্তব্য করেন।

প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম জানান, পেশাগত অসদাচরণের দায়ে তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে সরকার। এই ধরনের গুরুতর অসদাচারণ ও শৃংখলা ভঙ্গের কারণে ফৌজদারী অপরাধের দায়ে উপমহাদেশে বা আমার জানা মতে বিশ্বের ট্রাইব্যুনালগুলোর মধ্যে প্রথম কোনো প্রসিকিউটরকে অপসারণ করা হলো। তার কৃতকর্মের জন্য ফৌজদারী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তুরিন আফরোজকে অপসারণ

বিজ্ঞাপন

তার কি শাস্তি হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী অপরাধ আনা হবে। তার কর্মকাণ্ড রাষ্ট্রবিরোধীতার শামিল। কারণ এটি রাষ্ট্রের অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি প্রতিষ্ঠান। এখন আইনমন্ত্রণালয় বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার বিরুদ্ধে কি ধরণের ব্যবস্থা নেবে সেটি তাদের দায়িত্ব।’

প্রসিকিউটর মালুম বলেন, ‘প্রসিকিউশন থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পরও তুরিন আফরোজ প্রসিকিউটরদের বরাদ্দকৃত বেতন-ভাতা নিয়মিত গ্রহণ করেছেন। গত মাস পর্যন্তও গ্রহণ করেছেন। একইভাবে সরকারি গাড়ি, গানম্যান, প্রটেকশন প্রটোকল পেয়ে আসছিলেন এবং তার বাড়িতে হোম গার্ডও পেয়ে আসছিলেন। আজকে অপসারণের ফলে তাৎক্ষণিকভাবেই সব সুযোগ-সুবিধাও বাতিল হয়ে যাবে।’

মালুম বলেন, ‘প্রসিকিউশনের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার কাছে বিভিন্ন মামলার দলিলপত্র, বিশেষ করে ওয়াহিদুল হকের মামলায় যে পর্যন্ত তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন, সে সময় পর্যন্ত নথিপত্র ও তদন্ত প্রতিবেদনের অংশ রয়ে গেছে। আজ পর্যন্ত সেসব তিনি জমা দেননি। আশা করি নৈতিক দায়িত্ব অনুভব করে এগুলো তিনি জমা দিয়ে দিবেন।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে পেশাগত অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০১৬ সালে প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে প্রসিকিউশন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। তার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে।

এ প্রসিকিউটরও নিয়মিত বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসছেন বলে জানান প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।

এ বিষয়ে তুরিন আফরোজের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, শতভাগ শততার সঙ্গে আমি কাজ করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, কারা, কিভাবে তদন্ত করে প্রমাণ পেল তা আমি জানি না। আমারও কিছু বক্তব্য আছে, সেটি কেউ শুনলো না। সেদিন কি ঘটেছিল, আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সেটিও জানতে চাইলো না। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ন্যাচারাল জাস্টিসের বিরুদ্ধে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

তারপরও আমি ট্রাইব্যুনালের মর্যাদা নষ্ট হোক সেটি আমি চাই না। বিষয়গুলো সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলবেন বলেও জানান তুরিন আফরোজ।

সোমবার (১১ নভেম্বর) শৃঙ্খলা ও পেশাগত আচরণ ভঙ্গ এবং গুরুতর অসদাচারণের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটরের পদ থেকে তুরিন আফরোজকে অপসারণ করে আইনমন্ত্রণালয়।

উপ-সলিসিটর এস এম নাহিদা নাজমীনের সই করা চিঠির আদেশ আজ ১১ নভেম্বর থেকেই কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার এক আসামির সঙ্গে গোপন বৈঠক করে তাকে মামলার কিছু তথ্য সরবরাহ করেন প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। এমন অভিযোগে গত বছরের মে মাসে খবর ছাপা হয় একটি দৈনিকে। এ অভিযোগের পর তুরিন আফরোজকে সংশ্লিষ্ট ওই মামলার চিফ প্রসিকিউটর পদসহ ট্রাইব্যুনালের সব মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এরপরেই তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়।

সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন