রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট সরবরাহ চক্রের ‘অফিসে’ র‌্যাবের হানা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে দেওয়া একটি চক্রের মূল হোতা আতিকুর রহমানের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র‌্যাব)। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর বাসাবো এলাকায় তার অফিসে অভিযান শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ওই অফিস থেকে বিপুল পরিমাণ জাল পাসপোর্ট ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে র‌্যাব-২-এর সিপিসি-৩ কমান্ডার পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকীর নেতৃত্বে বাসাবো এলাকার নাভানা টাওয়ারে অভিযান শুরু হয়।

পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী সারাবাংলাকে বলেন, গত ১১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জ থেকে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট তৈরির জন্য জন্ম সনদ ও ভোটার আইডি কার্ড করে দেওয়া চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, এই চক্রের মূল হোতা আতিকুর রহমান। তিনি আজিজিয়া ট্রাভেলিং ইন্টারন্যাশনালের মালিক। বাসাবোর নাভানা টাওয়ারে তার অফিস অবস্থিত। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে নাভানা টাওয়ারে অভিযান শুরু করেছি।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, নাভানা টাওয়ারের ওই অফিসে রোহিঙ্গাদের নামে তৈরি করা বিপুল পরিমাণ জাল পাসপোর্ট ও ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। আতিকুর রহমানের ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে আজ ৭০ লাখ টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে। একই ব্যাংকে আরও ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজপত্র পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় তার একটি বিলাসবহুল বাড়ি আছে, যার দলিল পাওয়া গেছে।

এর বাইরেও কয়েকদিন আগে অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে ৬০ হাজার ডলার পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে নাভানা টাওয়ারের ওই অফিসে। অস্ট্রেলিয়ার একটি ব্যাংকে ৪ লাখ ২৭ হাজার ডলার এবং সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংকে ৬০ হাজার ডলারও পাওয়া গেছে আতিকুর রহমানের নামে। দেশের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টেও তার নামে রয়েছে ৭০ লাখ টাকা।

র‌্যাব-২-এর সিপিসি কমান্ডার বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মতিঝিল এলাকায় আরও একটি অফিসের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানেও অভিযান হবে। অভিযান শেষে সবশেষ তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে। এই অভিযানের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের হাতে ভুয়া জন্ম সনদসহ পাসপোর্ট তুলে দেওয়া চক্রের মূলোৎপাটন করা সম্ভব হবে।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর