বিজ্ঞাপন

পায়রা বন্দর প্রকল্পে ৯ মাসে অগ্রগতি ২১ শতাংশ

November 11, 2019 | 8:44 pm

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। প্রথম ৯ মাসে এই প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ। তবে এই সময়ে প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি শূন্যের কোঠায়। মাত্র ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় হওয়ায় এর পরিমাণ শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকে এসব তথ্য জানা গেছে। ওই বৈঠকের কার্যবিবরণীর কপি এসেছে সারাবাংলার হাতে।

কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করছে ‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ’ প্রকল্পটি। এর লক্ষ্য আমদানি-রফতানিজাত পণ্য বহনকারী জাহাজ হ্যান্ডলিং, পণ্য খালাস, বোঝাইসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবহন চেইনের সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রত্যাশিত পর্যায়ে উন্নীত করা। এ জন্য ৩ হাজার ৯৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে এ বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য এই প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়।

এই প্রকল্পের আওতায় ৬৫০ মিটার জেটি নির্মাণ, ৩ লাখ ৫০ হাজার বর্গমিটার ব্যাকআপ ইয়ার্ড ও ড্রেনেজ অবকাঠামো নির্মাণ, ৫২ হাজার বর্গমিটার স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ, ৩৩ কেভি প্রধান বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন, অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট স্থাপন এবং মহাসড়কে দীর্ঘ ও মাঝারি সেতু নির্মাণসহ আর আনুষঙ্গিক কার্যক্রম চলছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতিসহ কিছু বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য এর স্টিয়ারিং কমিটির দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৭ অক্টোবর।

বিজ্ঞাপন

সভায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতির পাশাপাশি চলতি অর্থবছরের বরাদ্দ ও এর বাস্তবায়ন অগ্রগতির তথ্যও তুলে ধরেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সার্বিক অগ্রগতির তুলনায় চলতি অর্থবছরের অগ্রগতি যৎসামান্য। ওই প্রতিনিধি জানান, প্রকল্পের অনুকূলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এডিপিতে ২১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অর্থবছর শুরু হওয়ার পরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি ১ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ৪ লাখ ১৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

সভায় জানানো হয়, প্রকল্পের আওতায় সিকিউরিটি ফেন্সিং নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে, টেম্পোরারি জেটি  (সার্ভিস) ও জেটি সংলগ্ন রাস্তার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের বিভিন্ন কম্পোনেন্টের প্ল্যানিং, ডিজাইন, ড্রয়িং, প্রাক্কলন ও প্রকল্প চলাকালীন প্রকল্পের সুপারভিশনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং, ডেইয়াং অ্যান্ড হেরিম (জেভি)-এর সঙ্গে মোট ৭৯ কোটি ৫২ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৪ টাকার চুক্তিও সই হয়েছে। বর্তমানে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ চলছে।

সভায় আরও জানানো হয়, পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কম্পোন্টের ডিজাইন, ড্রয়িং ও প্রাক্কলন নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দেওয়া হবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান থেকে বিভিন্ন কম্পোনেন্টের প্ল্যানিং, ডিজাইন, ড্রয়িং, প্রাক্কলন ও দরপত্র দলিল পাওয়ার পর দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে জেটি, টার্মিনাল, ৬ লেনের সংযোগ সড়ক ও আন্ধারমানিক নদীর ওপর সেতুর লেআউট পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। এই লেআউট পরিকল্পনা পর্যালোচনার জন্য পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষকে আলাদা একটি উপস্থাপনার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, প্রকল্প পরিচালক জানান, প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপির বিস্তারিত ব্যয় বিভাজনে একটি অস্থায়ী জেটিসহ বিদ্যমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর রাস্তা পুনঃনির্মাণ কাজের জন্য ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু ডিপিপির ক্রয় পরিকল্পনায় মুদ্রণজনিত ভুলে এ বাবদ ৩০ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, প্রকল্পের আওতায় নির্মাণের জন্য প্রস্তাবিত টার্মিনাল ও সংযোগ সড়কের মধ্যবর্তী এলাকায় একটি ‘ন্যাচারাল ক্যানেল’ রয়েছে। এই ক্যানেল সোজা করে সংযোগ সড়কের সমান্তরালে নিয়ে আসার জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করা হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব অনুয়ায়ী এই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য সংযোগ সড়কের সমান্তরাল করে ক্যানেল তৈরি করতে হবে, যা অনুমোদিত ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত নেই। এক্ষেত্রে বিদ্যমান খালের কিছু অংশ ভরাট এবং কিছু অংশ পুনঃখনন করতে হবে, যা মূল রাস্তার সমান্তরালে প্রবাহিত হবে এবং নতুন আউটলেট নির্মাণ করে রাবনাবাদ চ্যানেলের সঙ্গে সংযোগ করতে হবে। প্রকল্পটির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন