বিজ্ঞাপন

বাবা মা হাসপাতালে, চিরনিদ্রায় শায়িত সোহা

November 13, 2019 | 1:46 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আদীবা আক্তার সোহা। বয়স ২ বছর ২ মাস। হাতে-পায়ে নেইল পলিশ দিতে ভালোবাসতো। নেইল পলিশ দিয়ে সেজেগুজেই বাবা-মায়ের সঙ্গে যাচ্ছিল চট্টগ্রাম। ট্রেনে ওঠার আগেই শুরু খেলাধুলা আর ছোটাছুটি। বাবা-মা অন্ত:প্রাণ মেয়ে এক মুহূর্তও থাকতে পারতো না তাদের সামনে দেখা ছাড়া। ট্রেনে উঠেও চলছিল বাবা-মায়ের সঙ্গে দুষ্টামি পর্ব।  হঠাৎ একটি বিকট শব্দ, একটি দুর্ঘটনা। কেড়ে নিলো একটি প্রাণ। বাবা-মায়ের চোখের সামনেই মারা যায় সোহা। বাবা-মা যখন হাসপাতালে তখন ছোট্ট সোহাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হলো গ্রামের বাড়িতে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত সাতটা ৫০ মিনিটে আদীবা আক্তার সোহাকে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বড়বাজারের তাম্বুলিটুলা গ্রামে দাফন করা হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মেঝেতে যখন পড়েছিল ছোট্ট সোহা তখন তার বাবা মাহিন আহমেদ সোহেল (৩৫), মা নাজমা আক্তার (৩০) ও সাড়ে চার বছর বয়সী ভাই নাফিজুল হক নাফিজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রথমে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও পরে সেখান থেকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা যখন প্রাণ বাঁচানোর লড়াইয়ে তখন ছোট্ট সোহার মামা মো.জামাল মিয়া চেষ্টা করছেন নির্বিঘ্নে শিশুটির লাশ হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুপুরে বানিয়াচং উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুন খন্দকারের কাছ থেকে প্রথম শুনতে পাই সোহা’র মৃত্যুসংবাদ। এর পরে আমি যাই সেখানে। সেখানে ময়নাতদন্ত ছাড়া বাচ্চাটার লাশ হস্তান্তরের জন্য আবেদন জানাই। আর এরপরে লাশ নিয়ে আসি গ্রামের বাড়িতে। এখানেই ওকে দাফন করি’।

বিজ্ঞাপন

সোহা’র লাশ নিয়ে যখন তার মামা মো. জামাল মিয়া গ্রামের বাড়ির দিকে যাচ্ছিল তখন পঙ্গু হাসপাতালের বেডে একদিকে ব্যাথার যন্ত্রনা আর অন্যদিকে মেয়েকে হারানোর বেদনায় কাঁদছিলেন সোহা’র বাবা-মা। মা বারবার চাইছিলেন মেয়ের শেষ ছবি দেখতে।

হাসপাতালে থাকা সোহা’র ভাই সাড়ে চার বছর বয়সের নাফিজুল হক নাফিজ খুব একটা বেশি কথা বলছিল না। এক্স-রে করানো শেষে মামার কোলে ওঠে শুধু একবার বলে ওঠে, আমার বোন অনেক দূরে।

সত্যিই তো, সোহা এখন অনেক দূরে। বাবা-মায়ের চোখ আড়াল করেই সে আজ চিরনিদ্রায় শায়িত।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/একেএম

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন