বিজ্ঞাপন

নারী করদাতার সংখ্যা বাড়ছে: এনবিআর চেয়ারম্যান

November 15, 2019 | 5:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দেশে নারী করদাতাদের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেছেন, দিন দিন আয়কর মেলা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রচুর মানুষ কর দিচ্ছেন। এবার নারী করদাতারাও আসছে। গতকাল যারা কর দিয়েছেন এর মধ্যে ৩০ শতাংশই নারী করদাতা। মেলা ঘুরে দেখতে পেয়েছি নারীরা খুব আগ্রহ সহকারে বসে বসে নিজেরাই রিটার্ন ফরম পূরণ করছেন। গতবছরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তারা কর দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে চলমান সপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনে মেলা পরিদর্শন শেষে তিনি এ সব কথা বলেন। এদিকে সাপ্তাহব্যাপী আয়কর মেলার দ্বিতীয় দিনেও মেলা প্রাঙ্গণে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টল আর বুথে ভিড় করেন করদাতারা। হয়রানি ছাড়া কর দিতে পেরে অনেকে নিজেদের সন্তুষ্টির কথাও জানিয়েছেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিবছরই আয়কর মেলার পরিধি বাড়ছে। আয়কর মেলা জনপ্রিয় হচ্ছে। মেলায় প্রথমদিনে আয়কর আদায়ে গত বছরের চেয়ে ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। আয়কর দিতে হবে এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, মানুষ সেটি বুঝতে পেরেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কর জিডিপি অনুপাত এখনও কাঙ্ক্ষিত হারের চেয়ে যে কম এটি অবশ্যই আমাদের উন্নত করতে হবে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা যেন আমাদের সেবা গ্রহণ করে এবং উন্নয়নে শামিল হয়। মেলায় আমাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা স্বচ্ছভাবে সেবা দিচ্ছে। মেলার পরেও যেন তা অব্যাহত থাকে। হয়রানিও ক্রমান্বয়ে কমে আসছে।’

কর ফাঁকি প্রতিরোধে অডিট বা অ্যাকাউন্টিং ফার্মগুলোকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে জানিয়েছে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘যার যত আয়কর দেওয়ার কথা, আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তা দেয় না। আমরা এরইমধ্যে একটা ব্যবস্থা নিয়েছি। অ্যাকাউন্টিং যে ফার্মগুলো আমাদের দেশে আছে, তাদের সঙ্গে মিটিং করে একটা স্বচ্ছতা, তারাও যেন দায়বদ্ধতার মধ্যে আসে, তারা অনেক সময় প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাব দেয় না, সেইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইন ও বিধিমালা তৈরি করে ফেলব।’

মেলার এবারে স্লোগান ‘সবাই মিলে দেব কর, দেশ হবে স্বনির্ভর।’ এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর প্রদানে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, নিশ্চিত হোক রূপকল্প বাস্তবায়ন’। কেন্দ্রীয়ভাবে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৫টা পর্যন্ত করদাতারা মেলায় কর সংক্রান্ত সব সেবা পাবেন।

বিজ্ঞাপন

মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই করদাতারা ভিড় করছেন রাজধানীর অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে। কেউ নিচ্ছেন কর নিবন্ধন (ই-টিআইএন), কেউবা জমা দিচ্ছেন রিটার্ন। প্রথমবারের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও আয়কর জমা দেওয়া যাচ্ছে। হেল্প ডেস্ক থেকে শুরু করে কর অঞ্চলের প্রতিটি বুথে সব শ্রেণি পেশার করদাতারা ভিড় করছেন। মেলার দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) কোনো কোনো বুথে দীর্ঘ লাইনও দেখা গেছে।

মেলায় কর দিতে এসেছিলেন ফার্মগেটের বাসিন্দা হাবীব। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিব সারাবাংলাকে বলেন, ‘অফিস ছুটি থাকায় কর দেওয়ার জন্য শুক্রবারকেই বেছে নিয়েছি। ফরম আগেই পূরণ করা ছিল। বেশি সময় লাগেনি। আধাঘণ্টায় রিটার্ন সাবমিট করা গেছে।’

পল্টনের বাসিন্দা রহিম বলেন, ‘কর অঞ্চলগুলোতে গেলে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। মেলায় সে ভয় নেই। তাই গত কয়েকবছর ধরে মেলায় আয়কর দিয়ে আসছি। একই ধরনের সেবা কর অঞ্চলগুলোতে থাকা উচিৎ।’

মূল ফটক দিয়ে মেলায় ঢুকতে প্রথমেই চোখে পড়বে হেল্প ডেস্ক। সেখান থেকে বিভিন্ন তথ্য জেনে নেওয়া যাবে। পাওয়া যাবে রিটার্ন ফরমও। একটু সামনে এগুনেই চোখে পড়বে অনুসন্ধান ডেস্ক, সেখান থেকে জানা যাবে কোথায় কোন বুথ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এবার প্রথমবারের মতো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও আয়কর জমা দেওয়া যাচ্ছে। বিকাশ, নগদ, শিউর ক্যাশের মতো সেবাগুলো এর আওতায় আছে।

এদিকে আয়কর মেলার জন্য প্রথমবারের মতো এবার ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে। (www.aykormela.gov.bd) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে করদাতারা কোথায় কখন মেলা হবে, অনলাইনে কিভাবে আয়কর জমা দেওয়া যাবে, সার্বিকভাবে আয়কর সংক্রান্ত সব সেবা জানা যাবে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

Tags: , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন