বিজ্ঞাপন

‘আ.লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর অনেক দায়িত্ব রয়েছে এ দেশের প্রতি’

November 16, 2019 | 7:25 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনের অনেক দায়িত্ব এদেশের প্রতি। অনেক দায়িত্ব এদেশের জনগণের প্রতি। কারণ জাতির পিতার এদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে গেছেন। কারণ আমাদেরও সেইভাবে চিন্তা করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের জাতীয় সম্মেলন তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের মানুষের সেবা কতটুকু করতে পারি। একজন রাজনীতিবিদের জীবনে কি পেলাম, না পেলাম সেটা বড় কথা না। কতটুকু মানুষের জন্য করতে পারলাম, মানুষকে দিতে পারলাম সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। সেই চিন্তা নিয়ে, আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করলে, সেই রাজনীতির কখনো মৃত্যু হয় না। ধ্বংস হয় না বলেন।’

বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে সম্মেলন পরিচালনা করেন সদস্য সচিব গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু।

বিজ্ঞাপন

প্রথম অধিবেশনের পর বিকেলে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। সেখানেই সংগঠনের পরবর্তী সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়।

১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড কোনো ব্যক্তিবিশেষ বা শুধু একজন রাষ্ট্র প্রধানের হত্যাকাণ্ড ছিল না, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। বাংলাদেশের আদর্শে বিশ্বাস করতো না। বাংলাদেশ স্বাধীন থাকুক, এটা যারা চাইতো না। তারাই এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চেতনাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।’ এছাড়া তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় শান্তিপূর্ণ একটি দেশ হবে। যে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে এগিয়ে যাবে, মাথা উঁচু করে চলবে। সেই সম্ভাবনাটাকেই হত্যা করতে চেয়েছিল এই খুনিরা। যে কারণে আমরা দেখি খুনীদের বিচার না করে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল দূতাবাসে চাকরি দিয়ে।’

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে জনগণের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও অর্জন সাফল্যের দিকগুলো তুলে ধরে বলেন, ‘এই দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্ব, যারা মুজিব আদর্শে বিশ্বাস করে তাদের সকলের। যারা মুজিব নেতৃত্বে বিশ্বাস করে। তার আদর্শে বিশ্বাস করে, নীতিতে বিশ্বাস করে। এই বাংলাদেশ সেইভাবেই গড়ে তুলতে হবে এই দায়িত্ব আমাদের সকলের।’

বিজ্ঞাপন

‘জাতির পিতা শেখ মুজিব যে মর্যাদা দিয়ে গেছেন সেটাকে ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যেহেতু আমরা দীর্ঘ সময় সরকার পরিচালনার করার সুযোগ পেয়েছি। তার কারণেই আজকে আমরা উন্নতি করতে সক্ষম হয়েছি। আর আমাদের উন্নয়ন এটা শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক না বা শহর শহরকেন্দ্রিক না আমাদের উন্নয়নটা হচ্ছে, গ্রাম পর্যায়ে, তৃণমূল পর্যায়ে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সেই লিয়াকত আলী খান, আইয়ুব খান, জেনারেল জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বারবার করেছে। কিন্তু সফল হতে পারেনি। কারণ এই সংগঠনের শিকড় বাংলাদেশের মাটিতে গেঁড়ে আছে। যা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি অর্জনে লক্ষ্য নিয়ে জাতির পিতা গড়ে তুলে দিয়েছেন এবং এই সংগঠন নিয়ে সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে এদেশের স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি।’ এছাড়া তিনি বলেন, ‘কাজেই এই স্বাধীনতার সুফল বাংলার মানুষের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছাবে। মানুষ সুন্দরভাবে জীবনযাপন করবে, উন্নত জীবন পাবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।‘

বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে যখন পৌঁছে গেছে, তাহলে বুঝতে হবে, মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা কিভাবে উন্নতি হচ্ছে, মানুষ কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটাই হচ্ছে আমাদের আনন্দের বিষয়। জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলার মানুষকে নিয়ে, বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। ইনশাল্লাহ, এই বাংলাদেশকে আর কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। যেটা জাতির পিতা এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই বলেছিলেন কেই দাবিয়ে রাখতে পারবা না।’

এছাড়া জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী তথা মুজিববর্ষ উদযাপন এবং ডেল্টা প্ল্যানের কথা তুলে ধরে আগামীতে উন্নত সমদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার পূর্ণব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শত বছরের পরিকল্পনা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে একটি সুখী সমৃদ্ধ জীবন দিতে চাই, অর্থবহ জীবন দিতে চাই। যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন, তার সেই স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

এলক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে সাংগঠনিক নেত্রী হিসাবে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে সংগঠনকে গড়ে তুলতে হবে। সেবার মনোভাব নিয়ে সংগঠনকে গড়তে হবে। দেশের সেবা করতে হবে। জনগণের সেবা করতে হবে, মানুষের সেবা করতে হবে এবং সেই চিন্তা চেতনা নিয়েই করতে হবে এই সংগঠন। যাতে করে আমরা বাংলাদেশকে যেন এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে পারি, সেই দায়িত্বটা আমাদের সকলের।’

শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘সম্মেলনের মধ্য দিয়ে যে নেতৃত্ব ভবিষ্যতে বেরিয়ে আসবে, সেই নেতৃত্ব এদেশের মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকবে এবং মূল দলের প্রতি যে কতর্ব্য সেই কতর্ব্যও তারা যথাযথভাবে পালন করে যাবে। সেইভাবেই তারা গড়ে উঠবে।’

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন