বিজ্ঞাপন

আপন ‘আলোয়’ আলোকিত রোলার

December 7, 2017 | 4:36 pm

জাহিদ হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

দেশের চরম বিদ্যুৎ সংকট সময়ে সৌরবিদ্যুৎ বহু পরিবারে হাসি ফুটিয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আলোর ব্যবস্থা হয়েছে। তবে, সংরক্ষিত এই বিদ্যুতে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বর্ধিতাংশ বিক্রি করে ‘কাঁচা পয়সা’ পেলে তো ‘সোনায় সোহাগা’ অবস্থা। আর, প্রথমবারেই এমন অভিনব ও অনুকরণীয় উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে রোলার স্কেটিং ফেডারেশন (বিআরএসএফ)।

এইতো চলমান বছরের শুরুর দিকে প্রায় ১২ কোটি টাকার মেগা বাজেটের আধুনিক ও মাল্টিপার্পাস স্থাপনা করে দিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গা ঘেষা দূরত্বে এই ক্রীড়া স্থাপনাটি (শেখ রাসেল রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সটি) নির্মাণ করা হয়েছে। কমপ্লেক্সের ছাদে ৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২ ফুট প্রস্থের ৮০০ সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে।

আর তাতেই বদলে গেছে বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের (বিআরএসএফ) চিত্রপট। আর্থিক সংকটে ভুগতে থাকা এই ফেডারেশন এখন বলতে গেলে ‘স্বাবলম্বী’। ফেডারেশনের তথ্য মতে, ঘণ্টায় ২০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম এই সোলার সিস্টেম! দিনে পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে চলেছে এই সোলার এবং প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার আর মাসিক প্রায় ৩০ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে চলছে এই সোলার সিস্টেম!

বিজ্ঞাপন

এতো উৎপন্ন বিদ্যুতের মাত্র অর্ধেক পুরো অবকাঠামোর পেছনে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাকি অর্ধেক দিয়ে কী করছে ফেডারেশন। জানালেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আসিফুল হাসান, ‘১৫ হাজার কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কাছে বিক্রি করছি। সেখান থেকে প্রতিমাসে দেড় থেকে দুই লাখ করে টাকা আসছে।’

ছাদে বসানো হয়েছে ৮০০টি প্যানেল

আর এই টাকায় ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কাজে খরচ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও রোল বলসহ স্কেটিং ফেডারেশনের ৩০ খেলোয়াড়কে ভবনের তৃতীয় তলায় আবাসিকে রেখে খাদ্য সরবরাহ থেকে তাদের অনুশীলনের যাবতীয় খরচ এই অর্থ দিয়েই সেড়ে নিচ্ছে ফেডারেশন। তাছাড়াও অবকাঠামোর উন্নয়ন হিসেবে প্লে গ্রাউন্ডে সাউন্ডস সিস্টেমসহ ভবনে চার তলার কাজ শুরু করা হয়েছে বলে ফেডারেশন সূত্রে জানা যায়।

কীভাবে এই সৌরবিদ্যুতের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে সাধারণ সম্পাদক জানান, ‘এই অবকাঠামো নির্মাণকালীন ফেডারেশনের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজিএস) আবুল কালাম আজাদ এই সৌরবিদ্যুতের পরিকল্পনা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪র্থ রোল বল বিশ্বকাপ আয়োজনের কথা মাথায় রেখে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, অন্যান্য ক্রীড়া স্থাপনায়ও যাতে সৌরবিদ্যুৎ প্রক্রিয়া শুরু করা যায় সেজন্য এনএসসির সঙ্গে মৌখিক আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। জাতীয় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংলগ্ন বেশ কিছু ইনডোর স্টেডিয়ামের ছাদে এমন সোলার সিস্টেম চালুর কথা জানান। যেমন শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়াম, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়াম (টিটি ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন), মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম, কাবাডি ও ভলিবল স্টেডিয়ামের ছাদেও এ ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

তিনি জানান, ‘এতে করে ফেডারেশনগুলো স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পাবে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) দিকে অনুদানের জন্য চেয়ে থাকতে হবে না। সরকারি সহযোগিতা পেলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে।’

আর এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন হলে ক্রীড়াঙ্গনে ফেডারেশনগুলো আলোর মুখ দেখবে। ক্রীড়ার উন্নয়ন হবে।

সারাবাংলা/এমআরপি/০৭ ডিসেম্বর ২০১৭

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন