বিজ্ঞাপন

তরুণকে বাঁশে উল্টো করে ঝুলিয়ে পেটানো সেই ইউপি সদস্য গ্রেফতার

November 22, 2019 | 11:52 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

সিলেট: সিলেটের জকিগঞ্জে এক তরুণকে হাত-পা বেঁধে বাঁশের সঙ্গে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে কাজলশার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম ওরফে ফকির মাস্তানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ইউপি সদস্যের সহযোগী আরও তিন জনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই তরুণকে মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) জকিগঞ্জ থানা পুলিশ কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম সাংবাদিকদের বলেন, ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ভারত সীমান্তের একটি গ্রাম থেকে ওই ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা আমরা নিয়েছি।

মাহবুব আলম বলেন, এক তরুণকে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে পেটানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও জকিগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তারা দেখলে তারা বিষয়টি সিলেট পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ওই ইউপি সদস্যকে ধরতে অভিযান শুরু হয়। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় তিনি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে পারেন। সেভাবেই অভিযান চালানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, কাজলশার ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম সামাজিক বিচারের নামে বাশেঁ উল্টো করে ঝুলিয়ে গিয়াস উদ্দিন নামে এক তরুণকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। এ ভিডিও বুধবার (২০ নভেম্বর) ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ইউপি সদস্য সালাম ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।

এদিকে, তরুণকে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে পেটানোর ঘটনায় ইউপি সদস্য আব্দুস সালামকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেন বেশ কয়েকজন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় ওই ব্যক্তিকে বাঁশের সঙ্গে বাঁধতে এবং ইউপি সদস্যকে লাঠিসহ অন্য সরঞ্জাম দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করতে দেখা গেছে কয়েকজনকে। আমরা তিন জনকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করেছি। তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

স্থানীয়রা বলছেন, ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জনপ্রতিনিধি হয়েও জনগণের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছেন। আশ্রয়ন কেন্দ্রের একটি ঘর প্রায় ছয় বছর ধরে দখলে করে অনৈতিক কার্যক্রম চালানো, সরকারি জায়গা দখল, সংখ্যালঘুদের প্রতি নির্যাতনসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে। তবে ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ থানায় অভিযোগ দেন না।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মারধরের ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল প্রায় তিন মাস আগে। তবে ইউপি সদস্যের ভয়ে এ বিষয়ে গিয়াস উদ্দিন থানায় কোনো অভিযোগ করেননি। পরে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় মামলা করেন গিয়াস।

এর আগে, গত ১০ নভেম্বর আব্দুস সালাম বিচারের নামে আব্দুল মান্নান নামের একজনকে জনসম্মুখে নির্যাতন করেন। পরে মান্নান বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন। মারধরের অপমান সহ্য না করতে পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের। মান্নানের চাচাত ভাই শাকিল আহমেদ ওই ঘটনায় সিলেট পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন