বিজ্ঞাপন

প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর, জনপ্রত্যাশা পূরণের চেষ্টায় দুদক

November 22, 2019 | 4:39 pm

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দুর্নীতি দমন এবং প্রতিরোধে ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে একটি স্বাধীন কমিশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গেলো ১৫ বছরে প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির অনেক ফাঁরাক থাকলেও বর্তমানে জনপ্রত্যাশা পূরণে দুদক অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

দুদকের ১৫ বছরের সফলতা নিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, সাম্প্রতিককালে বেশ সক্রিয় এবং জনপ্রত্যাশা পূরণে সচেষ্ট হয়ে কাজ করছে দুদক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদক অনেকটাই এগিয়ে গেছে এবং সাফল্য অর্জন করেছে। তাদের প্রতি মানুষের প্রত্যাশা এবং আস্থা বেড়েছে। তবে ক্ষমতাসীন দল বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সেভাবে সফলতা দেখাতে পারেনি। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও সক্রিয় হয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। আইনগতভাবে কাজ করার মনোভাবটা তাদের মধ্যে বেশি বেশি থাকতে হবে। তবে এই ১৫ বছরে দুদক অনেক কিছু অর্জন করেছে।

তবে তিনি এটাও বলেন, দুদকের একার পক্ষে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ বা দমন করা সম্ভব নয়। অন্যান্য সকল সংস্থা যদি দুদককে সমানভাবে সহায়তা না করে তাহলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুদকের সফলতা অর্জন সম্ভব না। একইসঙ্গে দুদককে আরও সক্রিয় হতে হবে আর আমি মনে করি সেই সামর্থ্য দুদকের অবশ্যই আছে।

এদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, এই ১৫ বছরে আমাদের ব্যর্থতা আছে সফলতাও আছে। আর যেসব ক্ষেত্রে ব্যর্থতা আছে সেগুলো আমরা স্টাডি করছি। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আমরা সচেষ্ট হয়ে কাজ করছি। তবে সবাই মিলে কাজ করলে আমরা অবশ্যই সফল হবো। সেক্ষেত্রে পুরোপুরি সফল হতে আমাদের একটু সময় লাগবে।

বিজ্ঞাপন

২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে সম্মতি পায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪। দেশের দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধ এবং সমাজে সততা ও নিষ্ঠাবোধ সৃষ্টির দায়িত্ব এই আইনের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব থেকে বিরত থেকে দুর্নীতি দমন করতেই এই কমিশন গঠন করা হয়। মূলত ২০০৭ সালে এক এগারোর সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি তদন্ত করতে নেমে আলোচনায় আসে দুদক।

এদিকে দুদকের মামলায় বাড়ছে সাজার হার ২০১৫ সালে দুদকের মামলায় সাজার হার শতকরা ৩৭ শতাংশ, ২০১৬ সালে ৫৪ শতাংশ, ২০১৭ সালে ৬৮ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৬৩ শতাংশ আর চলতি বছরে ৭০ শতাংশ। অপরদিকে, দুদকে অভিযোগের সংখ্যাও বাড়ছে। ২০১৬ সালে অভিযোগ আসে ১২ হাজার ৯৯০, ২০১৭ সালে ১৭ হাজার ৯৫৩, ২০১৮ সালে ১৬ হাজার ৬০৬ আর চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে অভিযোগ এসেছে ১৫ হাজার ৪৯৭টি।

অপরদিকে, ২০০১ থকে ২০০৫ পর্যন্ত পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে সর্বোচ্চ ছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ধাপে ধাপে উন্নতি হলেও বড় কোনো পার্থক্যে এগোয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ তে ২৮ স্কোরে দুই ধাপ উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি ক্যাসিনো কাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের তালিকায় উঠে আসে ১৬৭ জনের নাম। এ তালিকা আরও বাড়বে। আসবে রাজনীতিক, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সমাজের অনেক প্রভাবশালীর নাম। মাস দুয়েক আগে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে। গ্রেফতার হন ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা। এরপর বেরিয়ে আসতে থাকে তাদের কালো টাকার রমরমা তথ্য। তারই সূত্রে অনুসন্ধানে নামে দুদক। ক্যাসিনোকাণ্ডের ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু হলেও অবৈধ সম্পদের অভিযোগে দুদকের জালে এরইমধ্যে আটকা পড়েছেন অনেকে।

সারাবাংলা/এসজে/জেএএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন