বিজ্ঞাপন

টিসিবির পেঁয়াজের লাইনে সিন্ডিকেটের শিশু!

December 4, 2019 | 6:40 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজের একটি বড় অংশ সিন্ডিকেটের হাতে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পথশিশু বা দোকানের কর্মচারীদের লাইন দাঁড় করিয়ে পেঁয়াজ কিনে নিচ্ছে একটি গোষ্ঠী। পরে তা কৌশলে বিক্রি করছে ওই সিন্ডিকেট। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত ক্রেতারা। তবে এ বিষয়ে টিসিবির কিছু করার নেই বলে মন্তব্য ট্রাক সেলের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর খামারবাড়িতে দেখা গেছে পেঁয়াজ কিনতে লাইনে দাঁড়ানো ক্রেতাদের একটি বড় অংশ শিশু। তাদের নিয়ন্ত্রণ করতেও দেখা গেছে একটি গোষ্ঠীকে। তবে তারা নিজেদের প্রকৃত ক্রেতা বা দোকানের কর্মচারী বলে দাবি করেছেন।

দুপুরে রাজধানীর খামারবাড়িতে দেখা যায় টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন ক্রেতারা। লাইনে সববয়সী মানুষের সঙ্গে রয়েছে ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরাও। এদের একটি অংশকে দলবেঁধে লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণের জন্য লাইনের বাইরেও কয়েকজনকে দেখা গেছে। ওই শিশুদের সঙ্গে পরিবারের কেউ না থাকলেও রয়েছে ‘বড় ভাইয়েরা’। সারাবাংলার সঙ্গে কথা হলে অন্তত পাঁচ শিশুর কেউ তাদের বাসার সঠিক তথ্য জানাতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

সৌরভ নামের এক শিশু জানায়, তার বাসা ফার্মগেটেই। কিন্তু ফার্মগেটের কোথায়— সে জিজ্ঞাসায় নিরুত্তের সৌরভ। সঙ্গে থাকা আমিনুল নামে তার এক ‘বড় ভাই’ দাবি করেন, রাজাবাজারে তাদের হোটেল রয়েছে। সেই হোটেলের জন্যই তারা পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন। কিন্তু টিসিবি’র লাইনে দাঁড়িয়ে এভাবে হোটেলের জন্য পেঁয়াজ কেনা ঠিক হচ্ছে কি না— এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

এদিকে, শিশুদের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, ওই সময় ফুটপাত থেকে এগিয়ে আসেন আরেক ব্যক্তি। তিনি শিশুদের লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কেনার পক্ষে সাফাই গাইতে থাকেন। নিজেদের প্রকৃত ক্রেতা বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

মনিপুরিপাড়া থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা তৌহিদ বলেন, দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। পেঁয়াজ পাচ্ছি না। অথচ ওরা নিয়মিতই পেঁয়াজ কিনছে। ওরা (শিশু ও বড় ভাই) সিন্ডিকেটের সদস্য বলে মনে হচ্ছে।

রাজাবাজারের অরেক ক্রেতা সেলিনা বেগম বলেন, ১৫ দিন আগে এখান থেকে আমিও পেঁয়াজ নিয়েছি। তখনো লাইনে এরকম অনেক শিশু দেখেছি। এদের দেখেই ক্রেতা মনে হয় না।

খামারবাড়ির ট্রাক সেলের দায়িত্বে থাকা মনির সারাবাংলাকে বলেন, কেউ লাইনে দাঁড়ালে তো আর ফিরিয়ে দেওয়া যায় না। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার কারণেই সবাইকে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। দেখতে এদের প্রকৃত ক্রেতা মনে না হলেও আমাদের পক্ষ থেকে চিহ্নিত করার কোনো উপায় নেই। ফলে তারাও পেঁয়াজ পাচ্ছে।

মনির জানান, সকাল ১১টা থেকে খামারবাড়িতে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে। ১ হাজার কেজি পেঁয়াজ রয়েছে। লাইনে দাঁড়ানো সবাই পেঁয়াজ পাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমাযুন কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ডিলারকে পেঁয়াজ সরবারহ করছি। লাইনের সুশৃঙ্খলার দায়িত্ব তাদের। পুলিশকেও এ বিষয়ে বলা আছে। আমরা শুধু সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের জনবল কম থাকায় এ দায়িত্ব ডিলার ও পুলিশের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অনেক স্থানে দায়িত্ব পালন করছে। বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরও।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন