বিজ্ঞাপন

যে কারণে বাতিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর

December 12, 2019 | 5:25 pm

এম এ কে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে তার পূর্ব নির্ধারিত নয়াদিল্লি সফর বাতিল করেছেন। পূর্ব নির্ধারিত এই সফর বাতিল নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলছে যে, সফরের আগের দিন রাতে ভারতের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসকে কেন্দ্র করে এক ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি হওয়ায় এই সফর বাতিল হয়েছে। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে সারাবাংলা’কে জানিয়েছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার তাড়া থাকায় তিনি নয়াদিল্লি সফর বাতিল করেছেন।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডিসেম্বর আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মাস। সামনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং জাতীয় দিবস। এই দুইটি জাতীয় দিনে আমি আমার দেশে, দেশের মানুষের সঙ্গে থাকতে চাই। এই জন্যই সফরটি বাতিল করেছি। আগামী মাসে এই সফরটি আবার হবে। এছাড়া আমাদের প্রতিমন্ত্রীও মাদ্রিদ সফরে রয়েছেন। সচিব সাহেবও রোহিঙ্গা বিষয়ক শুনানিতে অংশ নিতে নেদারল্যান্ড অবস্থান করছেন।’

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত এই সফরটির সময় সূচি ঠিক করার আগে ঢাকার পক্ষ থেকে নয়াদিল্লিকে জানান হয়েছিল যে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং জাতীয় দিবসে বাংলাদেশে থাকতে চান। তাই তার বৈঠকের সময় সূচি যেন এমনভাবে ঠিক করা হয় যে তিনি নয়াদিল্লিতে বৈঠক শেষ করে এই অনুষ্ঠানগুলোতে সহজে যোগ দিতে পারেন।

তবে ভারতের গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, পূর্ব নির্ধারিত সফর বাতিল নিয়ে ঢাকার পক্ষ থেকে খোলামেলা কিছু বলা হয়নি। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ইস্যূতে বেশ কয়েকদিন ধরেই ঢাকা অস্বস্তি প্রকাশ করছিল। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, ভারতের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হওয়ায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার পূর্ব নির্ধারিত তিনদিনের ভারত সফর বাতিল করেছেন। বিলটি পাস হওয়ায় ভারতের আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একাধিক রাজ্যে বিক্ষোভ এবং অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। সফর বাতিল হওয়া এটাও অন্যতম একটি কারণ।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিল

ঢাকা-নয়াদিল্লি কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, আগামী মাসে এই সফরটি আবার অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনও দিনক্ষণ ঠিক হয়নি।

এদিকে, তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে ‘বিতর্কিত’ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হযেছে। এর ফলে বিলটি এখন ভারতের আইনে পরিণত হলো।

এর আগে, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে ভারতের মন্ত্রী অমিত শাহ তার বক্তব্যে বলেন, ‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন না থামার কারণে তারা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি এনেছেন।’ অমিত শাহের এমন মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘আমি মনে করি যে এ ব্যাপারে যে কথা উঠেছে সেগুলো সত্য না। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না। সাম্প্রতিককালে বিদেশ থেকে আমাদের অনেক লোক দেশে ফিরে আসছে তার কারণ হচ্ছে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি এবং এখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি যে ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। দুই দেশের মধ্যে এখন অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক চলছে চলছে যা সোনালী অধ্যায় নামে পরিচিত।’ ভারত এমন কিছু করবে না যার ফলে আমাদের জনগণের জন্য চিন্তার কারণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

সারাবাংলা/জেআইএল/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন