বিজ্ঞাপন

সিকিমের গ্যাংটক ঘুরে ঢাকা ফিরেছে পরীক্ষামূলক চলা বাস

December 17, 2019 | 10:04 am

সব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চারদিনের দার্জিলিং ও সিকিম সফর শেষে দেশে ফিরেছে ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক চলা বাস। ঢাকা থেকে যাওয়া আসা মিলিয়ে প্রায় ১২শ কিলোমিটার চলেছে দুটি বাস। মাস তিনেকের মধ্যে ঢাকা থেকে সরাসরি গ্যাংটকে যাত্রীবাহী বাস চালু হতে পারে বলে ফেরার পথে জানিয়েছেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে গ্যাংটক থেকে ফিরে আসা বাস। এটিই ছিল সিকিমে যাওয়া প্রথম কোনো বাংলাদেশি বাস।

এরপর বাংলাবান্ধা থেকে রওনা দিয়ে রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছায় শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস-এর হুন্দাই বাস।

ঢাকা থেকে সরাসরি চালুর জন্য গত ১২ ডিসেম্বর রাতে পরীক্ষামূলকভাবে দার্জিলিং ও গ্যাংটকের উদ্দেশ্যে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস এর দুটি বাস ছেড়ে যায়। এরপর বাস দুটি দার্জিলিং যেতে সক্ষম হয়নি। তবে সিকিমের গ্যাংটক এ গিয়ে আবার ফিরে আসে।

বিজ্ঞাপন

শিলিগুড়িতে বাস রেখে ভারতের স্থানীয় পরিবহন রিজার্ভ করে শিলিগুড়ি হয়ে ঢাকার ১৮ জন সরকারি প্রতিনিধিদল সহপ্রায় ৪০ জন দার্জিলিং পৌঁছান।

শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি আঁকাবাঁকা এবং সরু রাস্তায় কেবল মিনিবাস মাইক্রোবাস চলাচল করে। আর শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকে ঢাকার বাস নিয়ে যেতে সক্ষম হয় প্রতিনিধিদল।

বিজ্ঞাপন

বিআরটিসি চেয়ারম্যান এহসানে এলাহি খোকন সারাবাংলাকে জানান, ঢাকা থেকে দার্জিলিং সরাসরি একই বাসে যাওয়া যায়নি। কারণ শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি পথ বেশ আঁকাবাঁকা এবং ঝুঁকিপূর্ণ। আর শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটকের সড়ক আঁকাবাঁকা হলেও বাস চলাচলের উপযোগী।

এ অবস্থায় ঢাকা গ্যাংটক সরাসরি সড়কপথে একই বাসে যাতায়াত সম্ভব বলে মনে করেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান।

‘উভয় দেশের পরীক্ষামূলক বাসের প্রতিনিধিদলের প্রতিবেদন পাওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে চিঠি চালাচালির মাধ্যমে চুক্তির ভিত্তিতে সরাসরি চলাচল শুরু হতে পারে। তবে এর আগেই যদি বিআইএন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়ে যায় তাহলে এমনিতেই এ রুটে সরাসরি বাস চালানো যাবে। আর যদি বিআইএন চুক্তিস্বাক্ষর হতে দেরি হয় সে ক্ষেত্রে দুই দেশের জিডি চালাচালির মাধ্যমে চুক্তির পর ঢাকা গ্যাংটক সরাসরি বাস চলবে’, বললেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান এহসানে এলাহী।

শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ সারাবাংলাকে জানান, ‘ঢাকা থেকে গ্যাংটক সরাসরি সড়কপথে প্রায় সাড়ে ৬০০ কিলোমিটারের পথ। বাস চালু হলে যাত্রীরা ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা ভাড়ার মধ্যে সিকিম পৌঁছে যেতে পারবেন।’

বিজ্ঞাপন

ঢাকা গ্যাংটক ট্রায়ালের বাসে সারাবাংলা প্রতিবেদক সিকিম গিয়েছিলেন। দেখা গেছে, বাংলাদেশের বাংলাবান্ধা সীমান্ত পার হওয়ার প্রায় ৩০ কিলোমিটার পর পাহাড়ি পথ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক তিস্তা নদীর তীর ঘেঁষে চলা পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা পথে সিকিম রাজ্যে প্রবেশ করে বাস। কোথাও কোথাও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক থাকলেও বাস চলতে সমস্যা হয়নি। বেশ কিছু জায়গায় এখনো সড়ক সংস্কার কাজ চলছে।

বাংলাবান্ধা ও ভারতের ফুলবাড়ী স্থলবন্দর জানায়, প্রতিদিন এই বন্দর দিয়ে দার্জিলিং এবং সিকিম জান কয়েকশো পর্যটক। এক্ষেত্রে তাদেরকে ঢাকা থেকে একটি বাস এবং পরে ভারতীয় স্থানীয় পরিবহন যোগে ভেঙে ভেঙে যেতে হয়। সরাসরি বাস এলে তারা একেবারে গ্যাংটক দার্জিলিং গিয়ে নামতে পারবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পাঁচটি রুটে বাস চলাচল করে। ভারতের সঙ্গে ঢাকা-দার্জিলিং ও ঢাকা গ্যাংটক নতুন দুটি রুট চালুর জন্য এ ট্রায়াল রান করা হয়।

উত্তর পূর্ব ভারতের সিকিম রাজ্য গত মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য প্রবেশ সংরক্ষিত ছিল। এরপর এরাজ্য বাংলাদেশিদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। তবে এখনো বাংলাদেশি পর্যটক নর্থ সিকিমের অনেক স্থানে যেতে পারেন না। আর এখন সিকিম প্রবেশের মুখে পাসপোর্ট ফটোকপি ও ছবি জমা দিয়ে যেতে হয়। এসব প্রতিবন্ধকতার পরও বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক এখন সিকিমের বরফ ঢাকা শীতল পরিবেশের মনমুগ্ধকর সৌন্দর্যের টানে ছুটছেন। তাতে স্বস্তির ভ্রমণ হবে ঢাকা থেকে সিকিম সরাসরি বাস চালুর মাধ্যমে। পরীক্ষামূলক যাত্রার পর এখন কেবল চালুর অপেক্ষা।

সারবাংলা/এসএ/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন