বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনাকে একবার সামনে থেকে আশীর্বাদ করতে চান ইসাহক আলী

December 21, 2019 | 2:45 am

মীর মেহেদী হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ইসাহক আলী মাস্টার, বয়স একশর কোটায়। তাতে কী, এখনো তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। যেকোনো দলীয় কর্মসূচিতে উপস্থিত হতে ভুল হয় না এই বয়সেও। তার কর্মস্পৃহা আর দলের প্রতি একাগ্রতা হার মানায় যেকোনো তরুণ কর্মীকেও।

বিজ্ঞাপন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে কুষ্টিয়ায় যে কজন সংগঠক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ইসাহক আলী মাস্টার। অথচ কোনোদিন তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চাননি।

ছিলেন আব্দালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা। টানা ৪০ বছর সেখানকার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আব্দালপুর ইউনিয়নের রেকর্ড পাঁচ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। এই দীর্ঘ সময়ে নিরলসভাবে খেটেছেন নিজের ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে।

‘৭১ সালের পূর্বে বঙ্গবন্ধু যখন কুষ্টিয়া যান, তখন হরিণারায়ণপুর বাজারে অনুষ্ঠিত জনসভায় মানপত্র পাঠ করেছিলেন ইসাহক আলী। এছাড়াও তৎকালীন কৃষীমন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত কুষ্টিয়া সফরে গেলে ইসহাক মাস্টারের নেতৃত্বেই অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠান।

বিজ্ঞাপন

গণতন্ত্রের টুটি চেপে ধরে তৎকালীন সৈরশাসক এইচ এম এরশাদ যখন দেশজুড়ে চালাচ্ছিলেন সৈরশাসন, তখনকার সৈরশাসনবিরোধী তীব্র আন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বুকে বোমা বেঁধে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কুষ্টিয়া আসেন।

এরপর হ্যাঁ-না ভোটের সময় নিজ ইউনিয়ন কেন্দ্রে না ভোটকে জিতিয়ে দেওয়ায় তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। যার ফলে সেনাবাহিনী তাকে যশোর ক্যান্টনমেন্টে বেশ কিছুদিন আটকে রেখে অমানুসিক নির্যাতন চালায় এবং পরবর্তীতে মৃতপ্রায় অবস্থায় মুক্তি দেয়। যার ক্ষতচিহ্ন তিনি আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের একজন সম্মানিত উপদেষ্টা তিনি। দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সমাজসেবায়ও রয়েছে তার অপরিসীম অবদান।

আব্দালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতার সুবাদে নিজ ইউনিয়নে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত নিয়ে গড়ে তুলেছেন আব্দালপুর হাইস্কুল এবং খাতের আলী ডিগ্রি কলেজ। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই প্রতিষ্ঠাতা ও আব্দালপুর হাইস্কুলের আজীবন সভাপতি এবং খাতের আলী ডিগ্রী কলেজের সাবেক সভাপতি তিনি। যে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার আলোয় শিক্ষিত হয়ে উদ্ভাসিত আজ আব্দালপুর ও আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।

নিজ ইউনিয়ন আব্দালপুরতো বটেই পুরো কুষ্টিয়া জেলাতেই বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা প্রতিষ্ঠাতা করেছেন এই মহান ব্যক্তি। এ ছাড়া নিজ গ্রাম ও ইউনিয়নে রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণে তার রয়েছে অপরিমেয় অবদান।

নিজের অসমাপ্ত কাজ শেষ করে যাওয়ার গুরুভার তুলে দিয়েছেন নিজের পুত্র আব্দালপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনের কাঁধে।

বিজ্ঞাপন

তার ছোট ছেলে আরেক মুজিব আদর্শে উজ্জীবিত সৈনিক আলী মর্তুজা সিদ্দিকী খসরু। যিনি কলেজ জীবন থেকেই ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তার নেতৃত্বেই শিবিরমুক্ত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।

তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সভাপতি ছিলেন এবং বর্তমানে আওয়ামী রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।

তার নাতি জুয়েল রানা হালিম, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তার আরেক নাতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন এবং বর্তমানে একজন সক্রিয় ছাত্রলীগ কর্মী।

মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত ইসহাক আলী মাস্টার তার প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে ছুটে চলেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। যিনি জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত খেটে যেতে চান প্রিয় সংগঠনের জন্য।

পরোপকারী, নিরহংকারী, স্বাধীনতা সংগ্রামের অকুতোভয় সর্বোপরি একজন আওয়ামী বীর বর্তমানে নানা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগতে থাকা ইসহাক আলী মাস্টারের জীবনের শেষ ইচ্ছা প্রাণপ্রিয় সংগঠনের প্রাণ জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করে তাঁকে আশীর্বাদ করা।

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন