বিজ্ঞাপন

রেলপথে একই স্থানে বারবার দুর্ঘটনা, নির্বিকার কর্তৃপক্ষ

December 22, 2019 | 8:00 am

এম এ হালিম, লোকাল করেসপন্ডেন্ট

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ): ভৈরব-ময়মনসিংহ রেলপথে একই স্থানে একাধিকবার ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটছে। লাইনচ্যুতির পর উদ্ধার কাজ শেষ হতে কমপক্ষে ৫/৬ ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে এ রুটে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে এ রুটে ট্রেনে যাতায়াতকারী হাজারো যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। তবে ঘটনা অনুসন্ধানে বা কি কারণে একই স্থানে ট্রেন বারবার লাইনচ্যুত হচ্ছে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন মাথাব্যথা নেই। কর্তৃপক্ষ নির্বিকার থাকায় এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন যাত্রীরা।

বিজ্ঞাপন

যাত্রীরা মনে করছেন, এ রুটে মান্ধাতা আমলের রেল লাইনগুলো অকেজো হয়ে ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাছাড়া রেললাইনের ওপর প্রয়োজনীয় পাথরও নেই। অনেক জায়গায় স্লিপার, নাট-বল্টু ও লোহাগুলো জরাজীর্ণ হওয়ার কারণে একাধিকবার দুর্ঘটনা ঘটছে।

জানা যায়, গত ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী নাসিরাবাদ মেইল ট্রেনটি ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনে ঢোকার সময় আউটার সিগন্যালের কাছে লাইনচ্যুত হয়। এতে ময়মনসিংহগামী বিজয় এক্সপ্রেস, ঢাকাগামী এগারসিন্ধু, কিশোরগামী এক্সপ্রেস ট্রেন, ভৈরবগামী ময়মনসিংহ লোকাল ট্রেন আটকা পড়ে। আখাউড়া থেকে আসা উদ্ধারকারী ট্রেন সন্ধ্যা ৬টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষ করলে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

এছাড়া গত (১২ অক্টোবর) শনিবার ময়মনসিংহ থেকে ২৪২ ডাউন লোকাল ট্রেন রাত ৮টার দিকে ভৈরব স্টেশনের আউটারের কাছাকাছি পৌঁছামাত্র লাইনচ্যুত হয়। এর আগে, ১ অক্টোবর ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা একই ট্রেন একই স্থানে লাইনচ্যুত হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

গত ২২ নভেম্বরের ট্রেন লাইনচ্যুতির ঘটনায় রেলওয়ে বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী রেজাউল করিমকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) শওকত জামিল এবং ঢাকা কমান্ড্যান্ট নিরাপত্তা বাহিনী মো. জহিরুল হক। কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত রিপোর্ট দেবে বলে ভৈরব রেলওয়ে অফিস সূত্রে জানা যায়।

ভৈরব-নরসিংদী বিভাগের যান্ত্রিক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে লোকবল নিয়ে দ্রুত উদ্ধার কাজ শেষ করা হয়। তবে লাইন, চাকা, বগি নাকি সিগন্যালের ত্রুটির কারণে বারবার দুর্ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত কওে বলা যাবে।

বিজ্ঞাপন

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আখউড়া ও ভৈরব বাজার সহকারী নির্বাহী প্রৌকশলী আর এ খান বলেন, ‘ট্রেন যখন প্রতিটি স্টেশনে ঢোকে তখন আপ এবং ডাউনের সময় ১৬ কিলোমিটার গতি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হয়ে থাকে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারেরও বেশি। এছাড়া ইঞ্জিন, কোচ বা চাকার ক্রটি থাকার কারণে ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা ঘটতে পারে।’

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহা-ব্যবস্থাপক নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান, বিভিন্ন কারণে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। তারপরও বাংলাদেশ রেলওয়ে আগের চেয়ে রেলপথে অনেক নজরদারি ও তদারকি বাড়িয়েছে। মেকানিক ও ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে অগ্রণী ভূমিকার ফলে দুর্ঘটনা বা লাইনচ্যুতের ঘটনা শূন্যে নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/এমও/টিএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন