বিজ্ঞাপন

দাম কমলো টিসিবি’র পেঁয়াজের, আজ থেকে কেজি ৩৫ টাকা

December 23, 2019 | 11:39 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ট্রাক সেলের মাধ্যমে খোলা বাজারে বিক্রি করা পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে কমিয়েছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এখন থেকে টিসিবি’র ট্রাক থেকে প্রতি কেজি ৩৫ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হবে। এতদিন প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়ে আসছিল এই পেঁয়াজ। এদিকে, বর্তমানে বাজারে দেশি জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে। আর বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে টিসিবি’র খোলা বাজারের পেঁয়াজের দাম কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, বাজার পরিস্থিতি বিবেচনা করে টিসিবি পেঁয়াজের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টিসিবির প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকার পরিবর্তে ৩৫ টাকা দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ (সোমবার) থেকে নতুন এই দাম কার্যকর করা হচ্ছে।

হুমায়ুন কবির আরও বলেন, এখন থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে প্রত্যেক ক্রেতা ২  কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারবেন। প্রতিদিন রাজধানীর ৫০টি স্পটে ৫০টি ট্রাকে করে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি করছে। প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন তিন হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে টিসিবির কাছে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। জনগণের চাহিদা কথা বিবেচনা করে পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ বাড়ানো ও দাম কমানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়া গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে খোলা বাজারে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে। প্রথমে রাজধানীর পাঁচটি স্পটে পাঁচটি ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। পরে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১০টি ট্রাকে ও ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ট্রি ট্রাকে করে পেয়াঁজ বিক্রি শুরু করে টিসিবি। শুরু থেকেই পেঁয়াজের দাম ছিল প্রতি কেজি ৪৫ টাকা। একেকজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ২ কেজি করে পেঁয়াজ কিনতে পারতেন।

এদিকে, পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় টিসিবির ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কেনার জন্য ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। এসময় অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও পেঁয়াজ না কিনে ফিরে যেতে হয়। এ অবস্থায় গত ৩ নভেম্বর থেকে একেকজন ক্রেতার কাছে সর্বোচ্চ ২ কেজির পরিবর্তে ১ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করে টিসিবি। তবে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে থাকায় গত ১০ ডিসেম্বর থেকে ফের ২ কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়।

গেল ঈদুল আজহার পর থেকেই বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। এর মধ্যে ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যার কারণে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময় ভারত সরকার প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের মিনিমাম এক্সপোর্ট প্রাইজ (এমইপি) নির্ধারণ করে দেয়। আগে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের আমদানি মূল্য ২৫০ থেকে ৩০০ মার্কিন ডলার থাকলেও গত ১৩ সেপ্টেম্বর তা বাড়িয়ে ৮৫০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়। সপ্তাহ দুয়েক পর ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত।

বিজ্ঞাপন

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রবণতার মধ্যে ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করলে পেঁয়াজের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। গত আড়াই মাসে প্রতি কেজি ৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকাতেও বিক্রি হয় পেঁয়াজ। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বর্তমানে বাজারে সরবরাহ খানিকটা বেড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় দেশি পেঁয়াজও উঠতে শুরু করেছে বাজারে। তবে এখনো পেঁয়াজের দামে লাগাম পরানো যায়নি।

উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে ২৩ দশমিক ৭৬ লাখ মেট্রিক টন। উৎপাদন চাহিদার কাছাকাছি হলেও উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রায় ৩০ শতাংশ নষ্ট হয় বলে প্রতিবছর ৭ থেকে ৮ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন