বিজ্ঞাপন

মেয়র পদে লড়তে হলে পদ ছাড়তে হবে এমপিদের

December 26, 2019 | 1:45 pm

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে হলে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইনে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা না থাকলেও স্থানীয় সরকার আইনে তা বলা আছে। ফলে কোনো সংসদ সদস্য মেয়র পদে নির্বাচন করতে চাইলে তাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে আগে পদত্যাগ করে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণায়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞাপন

গতকাল বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করেপোরেশন নির্বাচন মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী সেলিম। ফলে আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিটি নির্বাচনে এই দুই সংসদ সদস্যকে মেয়র পদে নির্বাচন করতে হলে তাদের সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

এ বিষয়ে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘মেয়র পদে নির্বাচন করতে হলে যিনি বর্তমানে মেয়র রয়েছেন তাকেও পদত্যাগ করে নির্বাচন করতে হবে। আবার কোনো সংসদ সদস্য যদি মেয়র পদে নির্বাচন করতে চান তাহলে তাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে হবে।’

উদাহরণ দিয়ে সাবেক এই নির্বাচন কমিশন সচিব এবং বর্তমানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণায়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ২০১৮ সালে বাগেরহাট-৩ আসনের এমপি ছিলেন। পরে তিনি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ইলেকশন করার সময় সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আইনেও তাই বলা আছে।’

বিজ্ঞাপন

হেলালুদ্দীন আহমদ আরও বলেন, ‘সংসদ সদস্যকে পদত্যাগ করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের আইনে নয় বরং সিটি করপোরেশন আইনে বলা আছে। অর্থাৎ কোনো সংসদ সদস্যকে সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ইলেকশন করতে হলে তাকে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করেই নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া আর কোনো সুযোগ নেই।’

এদিকে গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) মেয়র পদে নির্বাচন করার ক্ষেতে নির্বাচন কমিশন প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কিত একটি বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে। এতে বলা হয়েছে, সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হতে হলে বর্তমান মেয়রদের পদত্যাগ করে প্রার্থী হতে হবে। আর এটি মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই করতে হবে। তবে সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলররা নিজেদের পদে থেকেই প্রার্থী হতে পারবেন। তবে পবিপত্রে সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে পারবে কি না এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

সোমবার জারি করা বিশেষ পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ‘সিটি করপোরেশন একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ হওয়ায় এর মেয়র পদটিকে হাইকোর্ট লাভজনক পদ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। কাজেই ‘স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯’ অনুযায়ী, মেয়র পদে অধিষ্ঠিত কোনো ব্যক্তি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে, ওই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে চাইলে তাকে ওই পদ থেকে পদত্যাগ করে প্রার্থী হতে হবে। কাউন্সিলর পদধারীরা লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত নন বলে তাদের পদে থেকে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোনো বাধা নেই।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়া বিশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘সম্ভাব্য কোনো প্রার্থী ফৌজদারি বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ন্যূনতম দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে সাজাভোগ শেষে পাঁচ বছর সময় পর্যন্ত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। কেউ দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করলে তা গ্রহণযোগ্য হলেও সাজা স্থগিত বা মওকুফ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের প্রার্থী হতে পারেবেন না।’

ইসির অন্য এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে একাধিক প্রার্থী মেয়র পদে মনোনয়ন দিতে পারবে না। কোনো দল একাধিক মেয়র প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে সব প্রার্থীরই মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাবে।

এছাড়া বিশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি ও স্বাক্ষরের নমুনাসহ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সাত দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকা উত্তর দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দুই সিটিতেই সবগুলো কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে। দুই সিটি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ৩১ ডিসেম্বর। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থীরা ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ জানুয়ারি এবং ভোটগ্রহণ হবে ৩০ জানুয়ারি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন