বিজ্ঞাপন

জাতির পিতাকে অনুসরণ করে আমিও বাংলায় ভাষণ দিচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

February 20, 2018 | 12:11 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : স্বাধীনতার পর জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলায় প্রথম ভাষণ দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও প্রতিবছর জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিচ্ছি।

ঢাকার ওসমানী মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তান সরকার একটা বিজাতীয় ভাষাকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের এ সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনিই প্রথম বাংলা ভাষাকে আন্তর্জািতিক পরিমণ্ডলে তুলে ধরেন। তার প্রমাণ বাংলায় জাতিসংঘের অধিবেশনে ভাষণ।

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো জাতিগোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে হলে প্রথম আঘাতটা আসে সংস্কৃতিকে। সংস্কৃতি ক্ষেত্রে আমাদের এই আঘাতও এসেছিল। জাতির পিতা যেমন বলেছিলেন বাঙালিদের কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। সত্যিকার অর্থে আমাদের কেউ দাবায়া রাখতে পারে নাই।’

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে আনন্দের বিষয় একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা এখানেই থেকে থাকিনি। অনেক জাতিগোষ্ঠীর ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে, সেগুলো সংগ্রহ করা এবং গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নিই।’

বিজ্ঞাপন

‘কিন্তু ৯৬ এর পর ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আমি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটির কাজ বন্ধ করে দেয়। কারণ বিএনপি-জামায়াতের কাছে এটির কোনো গুরুত্বই ছিল না। আবার এমনও হতে পারে আমি ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছি এই কারণে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এটি ভালোই হয়েছে, আমরা ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে সেটির নির্মাণকাজ শেষ করেছি।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের কর্মকাণ্ড ‍উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সারাবিশ্বের ভাষার নমুনা সেখানে সংগ্রহ করা হচ্ছে। গবেষণা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, এটা আমাদের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদার একটি বিষয়।

আমাদের জামদানি, শীতল পাটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। ৭৫ এর পর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের অনেক কর্মী প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। এটাও আমাদের জন্য গৌরবের।

একুশে পদকপ্রাপ্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এ কারণে এবার ২১ জনকে মনোনীত করা হয়েছে। কেবল ২১ জন নয় সারাদেশে পদক পাওয়ার মতো যোগ্য অনেকেই আছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরকেও পুরস্কার দেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

এ বছর পুরস্কারপ্রাপ্ত ২১ জনের মধ্যে চারজন মরণোত্তর। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ভাষা আন্দোলন, শিল্পকলা, সাংবাদিকতা, গবেষণা, অর্থনীতি, সমাজসেবা, ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য একুশে পদকপ্রাপ্ত ২১ গুণীজনের প্রতি পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পদক প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এ বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য একুশজনকে দেওয়া হচ্ছে একুশে পদক। এর মধ্যে  চারজনকে দেওয়া হবে মরণোত্তর পুরস্কার।

৮ ফেব্রুয়ারি পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

সমাজসেবায় এবার সম্মানজনক পদক পেয়েছেন নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ার‌ম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। ভাষা আন্দোলনে প্রয়াত আ জ ম তকীয়ুল্লাহর সঙ্গে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হন অধ্যাপক মির্জা মাজহারুল ইসলাম। প্রয়াত হুমায়ূন ফরীদিকে (হুমায়ূন কামরুল ইসলাম) অভিনয়ের জন্য পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

সংগীতে পদক পেয়েছেন শেখ সাদী খান, সুজেয় শ্যাম, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, মো. খুরশীদ আলম ও মতিউল হক খান। নৃত্যে মীনু হক, নাটকে নিখিল সেন (নিখিল কুমার সেনগুপ্ত), চারুকলায় কালিদাস কর্মকার এবং আলোকচিতে গোলাম মুস্তাফা এবার একুশে পদক পেয়েছেন।

সাংবাদিকতায় রণেশ মৈত্র, গবেষণায় প্রয়াত ভাষাসৈনিক অধ্যাপক জুলেখা হক, অর্থনীতিতে মইনুল ইসলাম, ভাষা ও সাহিত্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম খান (কবি হায়াৎ সাইফ), সুব্রত বড়ুয়া, রবিউল হুসাইন ও মরহুম খালেকদাদ চৌধুরী পদকের জন্য মনোনীত হন।

সারাবাংলা/একে

 

 

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন