বিজ্ঞাপন

চা উৎপাদনে ভেঙেছে ১৬৫ বছরের রেকর্ড

January 14, 2020 | 1:40 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,

মৌলভীবাজার: বাংলাদেশে কোম্পানি ব্যক্তিমালিকানাধীন বাগানসহ ছোট বড় মিলিয়ে চা বাগান রয়েছে ১৬২টি। উৎপাদমে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন , নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার, শ্রমিকদের অত্যাধুনিক প্রশিক্ষণসহ বেশ কিছু কারণে প্রতিবছরই চায়ের উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু গত বছর (২০১৯) সালে চা-শিল্পের ১৬৫ বছরের ইতিহাসে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ চা উৎপাদনের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ চা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত উৎপাদিত এ চায়ের পরিমাণ ৯৫ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি। বাংলাদেশ চা বোর্ড এর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮০ মিলিয়ন বা ৮ কোটি কেজি চা পাতা।

চা সংশ্লিষ্টরা চায়ের বাম্পার ফলনের কারণ হিসেবে চা-বাগানগুলোতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত, অনুকূল আবহাওয়া, আর বিশেষ করে পোকামাকড়ের আক্রমণ না কম থাকা, খরার কবলে না পড়াসহ সর্বোপরী বাংলাদেশ চা বোর্ডের নজরদারিতে এবারও চা উৎপাদনে নতুন করে রের্কড করেছে।

শ্রীমঙ্গল জেমস ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া ডিভিশনের ডিজিএম ও বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী সারাবাংলাকে জানান, ‘চায়ের উৎপাদন বেশ ভাল হলেও চায়ের ন্যায্য মূল্য আমরা পাচ্ছি না। ভারত থেকে নিন্মমানের (এলসি চা পাতা) চোরাইপথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে অহরহ। এতে বাজারে চায়ের সার্বিক কোয়ালিটি খারাপ করছে। অন্যদিকে দেশি চা বাগান মালিকরা সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না।’

বিজ্ঞাপন

একই অভিযোগ চা শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের।

চা উৎপাদন

বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের (পিডিইউ) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একে এম রফিকুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবারও চা উৎপাদনে নতুন করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মোট উৎপাদন ছিল ৯০ মিলিয়ন অর্থাৎ ৯ কোটি কেজি চা পাতা । তার আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের নভেম্বরে ৭৬ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদন হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় এ বছর একই সময়ে ১৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১ কোটি ৪০ লাখ কেজি চা বেশি উৎপাদন হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর চায়ের আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে চা শিল্প।’

বাংলাদেশ চা বোর্ডের (বিটিবি) উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মুনির আহমদ বলেন, ‘গত ডিসেম্বর পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন ছিল প্রায় ৯৫ মিলিয়নের ওপরে। এটিই চায়ের ইতিহাসে দেশে সেরা রেকর্ড। চা উৎপাদনে সাফল্যের পেছনে সরকারের নানামুখী দিক নির্দেশনাগুলো সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। ঠিকমতো তদারকি আর কোনো ফ্যাক্টরি থেকে চা যাতে লিকেজ হতে না পারে এবং চা নিলামের বাইরে যাতে বেআইনিভাবে কোথাও বিক্রি না হয়, এগুলোর বিষয়ে কড়া নজরদারি ছিল। বর্তমান সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে চায়ের উৎপাদন ১৪০ মিলিয়নে উন্নীত করতে কাজ করে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চা উৎপাদন মৌসুমে দেশে চা উৎপাদিত হয়েছে ৮২ দশমিক ১৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৮ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা পাতা। যা দেশের চা উৎপাদন মৌসুমের (২০১৮) দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড। ২০১৮ সালের চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭২ দশমিক ৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭ কোটি ২৩ লাখ কেজি চা পাতা। এর আগে ২০১৬ সালে সব রেকর্ড ভেঙে ১৬২ বছরের চা-শিল্পের ইতিহাসে দেশের সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হয়েছিল ৮৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ৮ কোটি ৫৫ লাখ কেজি চা পাতা।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেএইচ/আরডি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন