বিজ্ঞাপন

এক নজরে ঢাকার ২ সিটি নির্বাচন

January 15, 2020 | 8:02 am

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পুরোদমে চলছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণা। একদিকে দুই সিটির মেয়রপ্রার্থী, অন্যদিকে কাউন্সিলরপ্রার্থী— সবাই মিলে নির্বাচনের উত্তাপ বেশ ভালোই ছড়িয়েছেন রাজধানীতে। মাত্র দুই সপ্তাহ সময় হাতে থাকায় একটি মুহূর্তও যেন নষ্ট করতে নারাজ প্রার্থীরা। তাদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর প্রতিশ্রুতির মিছিলের উত্তাপ পৌষ-মাঘের তীব্র শীতকেও যেন হার মানাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দুই সিটিতে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। সিটি নির্বাচনে মেয়রপ্রার্থীরা দলীয় প্রতীকে এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছেন। এবার প্রথমবারের মতো ঢাকার দুই সিটির সবগুলো কেন্দ্রে  ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট নেওয়া হচ্ছে। নির্বচানে মোট ৭৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে প্রার্থী ১৩ জন, কাউন্সিলর পদে ৭৪৪ জন।

উত্তর সিটিতে ওয়ার্ড ভোটার

ঢাকা উত্তর সিটি, তথা ডিএনসিসি’তে মোট ভোটার সংখ্যা ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। এই সিটিতে ওয়ার্ড ৫৪টি, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ১৮টি। মোট ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ৩৪৯টি, ভোটকক্ষ ৭ হাজার ৫১৬টি।

বিজ্ঞাপন

ডিএনসিসিতে মেয়রপ্রার্থী

ঢাকা উত্তর সিটিতে চূড়ান্তভাবে মেয়র পদে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন— নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির তাবিথ আউয়াল, বাঘ প্রতীকে পিডিপি’র শাহীন খান, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ফজলে বারী মাসউদ, কাস্তে প্রতীকে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাজেদুল হক ও আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনিসুর রহমান দেওয়ান।

উত্তরে কাউন্সিলর প্রার্থী ৩২৮

বিজ্ঞাপন

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে ৫৪টি সাধারণ ও ১৮টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মোট ৩২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৫৪টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উত্তর সিটিতে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ২৫১ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৫৪ জন ও বিএনপি সমর্থিত ৫৪ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর বাইরে আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়েও ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন, বিএনপির এমন প্রার্থী ৩৪ জন। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আরও ৬৯ জন।

উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা

বিজ্ঞাপন

ডিএনসিসি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাসেম। তার সহযোগী হিসেবে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রয়েছেন ১৮ জন। এই সিটিতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন সংলগ্ন ইসির জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ভবনের তৃতীয় তলা।

দক্ষিণ সিটিতে ওয়ার্ড ভোটার সংখ্যা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, তথা ডিএসসিসি’তে মোট ভোটার ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। এই সিটিতে ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ১২৪টি, ভোটকক্ষ রয়েছে পাঁচ হাজার ৯৯৮টি। দক্ষিণ সিটিতে মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৭৫টি, সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড ২৫টি।

দক্ষিণে মেয়র প্রার্থী

ডিএসসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত জন। তারা হলেন— নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি’র ইশরাক হোসেন, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুর রহমান, ডাব প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. আক্তারুজ্জামান অরফে আয়াতউল্লাহ, আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) বাহরানে সুলতান বাহরান এবং মাছ প্রতীক নিয়ে গণফ্রন্টের আবদুস সামাদ সুজন।

কাউন্সিলরপ্রার্থী ৪১৬

ওয়ার্ড সংখ্যা বেশি হওয়ায় ডিএনসিসি’র তুলনায় ডিএসসিসি’তে কাউন্সিলরপ্রার্থীর সংখ্যাও বেশি। এই সিটিতে ৭৫টি সাধারণ ও ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড মিলিয়ে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৪১৬। এর মধ্যে ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রার্থী ৩৩৪ জন, ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ৮২ জন।

দক্ষিণ সিটিতে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’

ঢাকা দক্ষিণে ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে মোট ৩৩৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৭৫ জন ও বিএনপি সমর্থিত ৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই সিটিতে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ ৭২ জন, বিএনপির ৩১ জন। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আরও ৮৬ জন।

দক্ষিণে ২ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত, ৪ ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থী নেই

ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে চার ওয়ার্ডে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। এর মধ্যে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। এই দুই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও ১৯ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি কাউকে সমর্থন দেয়নি। তবে এই দুইটি ওয়ার্ডে বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী প্রার্থী হয়েছেন।

দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা

ডিএসসিসি নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন ইসির যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল বাতেন। তার সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা থাকবেন ২৫ জন। এই কর্মকর্তার কার্যালয় রাজধানীর টিকাটুলীর সাদেক হোসে খোকা কমিউনিটি সেন্টার।

এর আগে, গত ২২ ডিসেম্বর দুই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল গত ৩১ ডিসেম্বর। শেষ সময় পর্যন্ত দুই সিটিতে মেয়র পদে মোট ১৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আর সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন এক হাজার ৩০ জন।

গত ২ জানুয়ারি দাখিল করা মনোনয়নপত্রগুলো যাচাই-বাছাই হয় রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে। যাচাইয়ে উত্তর সিটিতে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জি এম কামরুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। ফলে মেয়র পদে দুই সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী টিকে যান ১৩ জন। বেশকিছু কাউন্সিলর প্রার্থীরও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয় দুই সিটিতে। পরে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ ছিল। এসময় কোনো মেয়রপ্রার্থীই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। কাউন্সিলর পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯৬-এ।

গত ১০ জানুয়ারি বৈধ ও চূড়ান্ত এসব প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই দিন থেকেই নির্বাচনি প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়েছেন প্রার্থীরা।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন