বিজ্ঞাপন

মুজিববর্ষ কত বড় পাওয়া, ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না: শেখ হাসিনা

January 15, 2020 | 6:44 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলার মাটিতে মুজিববর্ষ উদযাপন এটি করে যেতে পারছি, এটি যে কত বড় পাওয়া আমি আর আমার ছোট বোন রেহানার কাছে, সেটা হয়ত ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশনে সরকার দলীয় সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে সংসদের কাছে এ অনুভূতি ব্যক্ত করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

সম্পূরক প্রশ্নে শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রাণপ্রিয় সংগঠন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আপনার সরকারের নেতৃত্বে মুজিব জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে পেরে আপনার ব্যক্তিগত অনুভূতি কী? দয়া করে কি জাতিকে জানাবেন?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশ্নটা আসলে আমার কাছে করা এবং এর উত্তর দেওয়াটা খুব কঠিন। আমি শুধু এইটুকু বলব, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন বাংলাদেশের জনগণের জন্য। যে দেশের মানুষ দারিদ্র্য, নিপীড়িত, নির্যাতিত ছিল। তাদের মুক্তির জন্যই তিনি সেই স্কুলজীবন থেকেই সংগ্রাম শুরু করেন। তার ২৪ বছরের সংগ্রাম এবং মহান ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা পেয়েছি। তার একটা স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে তিনি গড়ে তুলবেন। ক্ষুধামক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন। কিন্তু সেটা তিনি করে যেতে পারেননি। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ে পেয়েছিলেন একটি জাতিকে যুদ্ধবিধস্ত দেশকে গড়ে তুলতে।’

বিজ্ঞাপন

৭৫’র ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে সংসদ নেতা বলেন, ‘তারপর থেকে তার নামটা মুছে ফেলা হল। তখন এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল, যে এই নামটা বোধহয় আর কোনদিন ফিরে আসবে না। আমাদের পরিবারের আমি আর আমার ছোটবোন ছাড়া সকল সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তারপর এমনটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল যে, আওয়ামী লীগ বোধহয় জীবনে আর কখনো সরকারে আসতে পারবে না। আর এই নামও আসবে না।’

কাজেই জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন তো অনেক দূরের কথাই ছিল উল্লেখ করে বাংলাদেশের জনগণ ও আল্লাহ আব্বুলামিনের কাছে অশেষ কৃপা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘আল্লাহ আমাদেরকে সেই শক্তিটা দিয়েছেন এবং সেই সুযোগটা দিয়েছেন। কাজেই আমি শুকরিয়া আদায় করি আল্লাহ আব্বুলামিনের কাছে, তিনি এই সুযোগটা দিয়েছিলেন। ছয় বছর বিদেশে রিফিউজি হিসেবে থাকার পর একবুক ভরা স্বজন-হারা বেদনা নিয়ে বাংলার মাটিতে ফিরে এসেছিলাম। একটাই লক্ষ্য ছিল যে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন এবং যে স্বপ্ন দেখেছেন বাংলার মানুষকে একটা সুন্দর জীবন দেবেন, উন্নত জীবন দেবেন। সেই সুন্দর জীবনটা দেওয়াটাই হচ্ছে লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে যেয়ে জনগণের যে আস্থা বিশ্বাস করতে পেরেছি, সরকার গঠন করতে পেরেছি, আমার সরকার গঠন করতে পেরে উন্নয়নের সঙ্গে আজকে আমার সৌভাগ্য এই ২০২০ সালে আমরা সরকারে আছি। আর সরকারে আছি বলেই আমরা আজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি।’

জাতির পিতা নাম একসময় দেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল কিন্তু আজকে সেই নামটা আবার জনগণের মুখে মুখে। বিশ্বব্যাপী সেই নামটি ফিরে এসেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর যে সম্মান বাঙালি জাতি পেয়েছিল, যে সম্মান ধুলায় লুণ্ঠিত হয়েছিল ৭৫’এ জাতির পিতাকে হত্যার মধ্যদিয়ে। আজকে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন, ইউনেস্কো কর্তৃক যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী উদযাপনের সুযোগ; আর বিশেষ করে এ বাংলার মাটিতে উদযাপন করতে পারা, এটা আমি মনে করি এর থেকে বড় সৌভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না। শুধু জাতির পিতার কন্যা হিসেবে নয়। আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসাবেও আমি মনে করি, বাংলাদেশের জনগণেই আমাদেরকে এই সৌভাগ্য দিয়েছে, এই সুযোগ দিয়েছে।’

তাই দেশের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘এটা যে করে যেতে পারছি, এটা যে কত বড় পাওয়া আমি আর আমার ছোট বোন রেহানার কাছে, সেটি হয়ত ভাষায় আমি প্রকাশ করতে পারব না।’

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন