February 21, 2018 | 5:25 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ভাষা আন্দোলন পরবর্তী রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের ইতিহাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গঠন না করলে শাসনতন্ত্রে বাংলা কখনোই রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেত না।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বুধবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে শাসনতন্ত্রে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে মর্যাদা দেয়। সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। শহীদ মিনার নির্মাণে বাজেট দেওয়া হয়। কিন্তু আইয়ুব খান মার্শাল ল দিলে সেটি আর এগোয়নি। ‘স্বাধীনতার পর আমরা দিনটিকে শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছি। এ ছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এমনকি ৭ মার্চের ভাষণকেও স্বীকৃতি দিয়েছে, যে ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাভাষাকে নিয়ে আমাদের অনেক যন্ত্রণাকে সহ্য করতে হয়েছে। এক সময় বলা হলো, বাংলা অক্ষরে বাংলাভাষা লেখা যাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের সঙ্গে তো নিম্ন শব্দটি থাকতে পারে না। আমাদের এখন একটি সুযোগ এসে গেছে। যে কয়টি ক্যাটাগরিতে অর্জন থাকলে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেতে পারি, তার প্রতিটি শর্তই বাংলাদেশ এখন পূর্ণ করেছে। কাজেই আমাদের মর্যাদাটা আরও একধাপ ওপরে এগিয়ে নিতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের কিছু কিছু চিত্র দেখেছি। এ জন্য সত্যিই আমরা আনন্দিত। জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত সব দেশে যেন এই দিবসটি পালিত হয়, আমরা এর জন্য তথ্য সব জায়গায় পাঠিয়েছি। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকেও প্রতি বছর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাহলে সবাই বিষয়টি জানতে পারবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য বিরাট গর্বের। কাজেই এই ভাষার ব্যবহার ও চর্চা ভুলে গেলে চলবে না। বাঙালি হিসেবে সব ঐতিহ্য আমাদের ধারণ করতে হবে। চর্চা করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি প্রতি বছর জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়ে থাকি।’
একুশের পথ ধরে স্বাধীনতা এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার ভাষার ওপর, সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়। সেই ষড়যন্ত্রটা পাকিস্তানি শাসকেরা আমাদের ওপর করেছিল। এরই পথ ধরে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে মর্যাদা পেয়েছি। রাষ্ট্র পেয়েছি।’
সারাবাংলা/একে/জিএস/আইজেকে