বিজ্ঞাপন

‘বাবার ভিটার মাটিকে একবার প্রণাম করতে চাই’

February 21, 2018 | 6:25 pm

এন্টারটেইনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট।। 

বিজ্ঞাপন

অনিক দত্তের ‘ভুতের ভবিষ্যৎ’ সিনেমা দিয়েই মুমতাজ সরকারকে চেনা। যদিও এর আগেই বেশ কটি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে। তার শুরু পপ শিল্পী মেহরীনের একটি মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের মাধ্যমে। প্রথম সিনেমা ‘জিরো থ্রি থ্রি’! যাদুকর পি.সি. সরকার জুনিয়র এবং জয়শ্রী দেবীর সর্বকনিষ্ঠ কন্যা মুমতাজ। অভিনয় জগতে প্রবেশের আগে আইনশাস্ত্রে স্নাতক করেছেন। শিখেছেন বক্সিং ও জুডোর মতো আগ্রাসী দুটো খেলা। টালিগঞ্জ ছাড়াও অভিনয় করেছেন বলিউডি সিনেমায়। দক্ষিণ ভারতেও জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এবার অভিনয় করছেন বাংলাদেশী ‘মায়া’ চলচ্চিত্রে। মাসুদ পথিক পরিচালিত এই সিনেমার দৃশ্যধারণের কাজ শুরু হয়েছে সম্প্রতি। অভিনয়ের প্রথমদিনের অবসরে তার সঙ্গে কথা বলেছেন সারাবাংলার তুহিন সাইফুল


  • বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে? 

একটা অদ্ভুত রকমের স্মৃতিকাতরতা আছে বাংলাদেশ নিয়ে। আমার মনে হয় ‘মায়া’ ছবিতে আমার যে চরিত্র ড. মানবী ঘোষ, মানবীর আর আমার সংযোগটা বোধহয় একই জায়গায়। সেও বাংলাদেশের মেয়ে, ওর মায়ের মৃত্যুর পর সে নিজের আসল পরিচয়টা পায়। তখন সে বিধ্বস্ত! যে পরিচয়ে সে সারা জীবন পরিচিত হয়েছে, হঠাৎ সেটা পাল্টে যায়। ওইটা একটা অদ্ভুত রকমের ডিলেমা, মানসিক টানাপোড়েন। আমরা সত্যিই ওই রকম একটা পজিশনে যতক্ষণ না পড়ছি, ততক্ষণ সেটা অনুভব করা যায় না। আমার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। আমি আমার শেকড়ের সন্ধান জানি। এখানে আগে কখনো আসা হয়নি। এবার সেই সুযোগটা যেহেতু পেয়েছি তাই বাপের ভিটা দেখতে যাবো। বাংলাদেশকে আলাদা মনে হচ্ছে না, মনে হচ্ছে নিজের বাড়িতেই তো ঘুরছি।

  • বাপের ভিটা কিভাবে দেখতে যাবেন? 

এটা নির্ভর করবে পরিচালক মাসুদ পথিকের ওপর। সে যদি আমাকে সময় দেয় এবং আমাকে নিয়ে যায়, দেখবো। সে কথা দিয়েছে আমাকে টাঙ্গাইল নিয়ে যাবে। আমি হয়তো ওখানে যে রকম আশা করছি সেরকম পাবো না, সেই বাড়িটা হবে না। এখন হয়তো সেখানে মাল্টিস্টোরেড বিল্ডিং উঠেছে। কিন্তু আমি সেই জায়গাটা না দেখেই অনুভব করতে পারি। একবার খালি সেখানের মাটিকে প্রণাম করে আসতে চাই।

বিজ্ঞাপন
  • আপনি বেশ কয়েকটি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন। এখন বাংলাদেশে কাজ করছেন। ঢাকাই সিনেমায় কাজ কতটা উপভোগ করছেন? 

এখানে কাজ করা অনেকটা টালিগঞ্জে কাজ করার মতোই স্বাভাবিক। আমার মনে হয় ভাষাটা খুব সাহায্য করে। মনে হচ্ছে আমি কলকাতাতেই নতুন একটা ইউনিটের সঙ্গে কাজ করছি। মায়ার পরিচালক মাসুদ পথিক অন্যরকমের মানুষ। সে খুবই কালারফুল এবং পাগলাটে। বাট ইন গুড ওয়ে, পজিটিভলি। (হাসি) ওনার সিনেমার আইডিয়াটা ইউনিক, আলাদা। এই ছবিতে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত।

বাংলাদেশে ছবি করার ইচ্ছে অনেকদিন থেকেই ছিলো। অফারও ছিলো। সবগুলোই ছিলো বাণিজ্যিক ঘরানার। তাই তখন ‘হ্যাঁ’ বলতে পারিনি। মায়া ছবিটি দিয়ে আমার হাতেখড়ি হলো। আমার এটা ভালো লাগছে যে আমি এই ছবিটা দিয়েই বাংলাদেশে কাজ শুরু করলাম। এর কারণ হলো ছবিটা সুন্দর সেন্স মেইক করবে। ‘মায়া’ ইজ দ্যা বেস্ট ওয়ে টু স্টার্ট!

বিজ্ঞাপন
  • ফিল্মের বাইরে তো আপনি বক্সিং করেছেন, আইনশাস্ত্রে স্নাতক করেছেন, এমন সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা জগৎ থেকে ফিল্মে আসার কি কারণ?  

আইনশাস্ত্র পড়তে আমার ভালো লাগতো। কলকাতা হাইকোর্টে আমি পাঁচ বছর কাজও করেছি। এরপর আমার সিনিয়র জয়দ্বীপ করের উৎসাহে ফিল্মে আসা। তবে আইন আমি এখনো প্র্যাকটিস করি। আমাদের বাড়ির লিগ্যাল হেড বলা যেতে পারে আমাকে। প্রফেসনালি ওই চেম্বারে গিয়ে বসে কাজ করাটা হয় না।

বক্সিংও কিন্তু আমি নিয়মিত প্র্যাকটিস করি। এটা শুরু করেছিলাম ছেলেদের পেটাবো বলে। (হাসি) ছেলেদের প্রতি ভীষন রাগ ছিলো ছোটবেলায়। তখন আমার ইম্যাচিউর মাথায় এসেছিলো যে, ছেলেরা কেন মেয়েদের থেকে বেটার, ছেলেদের গায়ে জোর আছে, ওরা মারপিট করতে পারে, তাই বলে তারা বেটার? তখন আমি ভেবেছি বক্সিং শিখতে হবে। মানে আমি যদি কাউকে মারতে পারি তাহলে আমিও সমান হয়ে গেলাম। দ্যাটস হোয়াই আই স্টার্ট বক্সিং। হোয়েন আই স্টার্ট ইট এজ আ স্পোর্টস, আই ফেল ইন লাভ অন ইট। এটা চমৎকার খেলা। আর আমি প্রচুর ছেলে পিটিয়েছি। পিটাইনি, একদম কেলিয়েছি! (হাসি)

  • আপনার অনেকগুলো সিনেমার কাজ আটকে আছে। অনেক গুলো সিনেমা মুক্তিও পেয়েছে। ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা থেকে কোন সিনেমাটিকে এগিয়ে রাখবেন?

গতবছর ‘কন্ডিশন অ্যাপ্লাই’ নামে একটা সিনেমা রিলিজ হয়েছে আমার। এই ছবিটা ফেস্টিভালের জন্য তৈরি হলেও পরে পরিচালক ছবিটিকে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি দেয়। ছবির টপিকটা ছিলো থার্ড জেন্ডারদের নিয়ে। আমি একজন থার্ড জেন্ডারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। এটা আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিলো। অভিনেতা হিসেবে ওইরকম চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পেলে যেকেউ প্রেমে পড়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন
  • এখানে কাজ করার আগে কোন কোন বাংলাদেশি ফিল্ম দেখেছেন? 

আমি মিথ্যা বলবো না। আমি দেখেছি, তবে অল্প অল্প করে। যদিও আমি অভিনেত্রী কিন্তু ছবি আমি কমই দেখি। আর এটার পেছনে একটাই কারণ আমি বায়াসড হতে চাই না। আমি খুবই টেকনিকাল পারসন। ক্রিটিকালও। ছবি দেখলে এখন আর আগের মতো আনন্দটা পাই না। তবে এখানের যে কয়টা দেখেছি সবকটাই ভালো লেগেছে।

ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত

সারাবাংলা/টিএস/পিএ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন