বিজ্ঞাপন

‘জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন’-এর আত্মপ্রকাশ

January 21, 2020 | 5:27 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘জাতীয় কৃষক শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন’ নামে নতুন একটি সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘দেশের কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির অধিকার প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা থেকে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনের জন্য একটি সমন্বয় কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশিষ্ট রাজনীতিক ও কলাম লেখক গোলাম মোস্তফা ভুইয়াকে আহ্বায়ক, রাজনীতিক মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসাকে যুগ্ম আহ্বায়ক ও শ্রমিক সংগঠক মো. মহসিন ভুইয়াকে সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিতে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে ১১ সদস্যের একটি পলিটব্যুরো ও ৩১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি গঠন করবেন তারা।

সভায় গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, “দেশের উন্নয়নে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা নেই বললেই চলে। কৃষক আজ ফসলের ন্যায্য দাম পায় না, শ্রমিক তার ঘামের ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে কৃষক-আর শ্রমিক শ্রেণি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামের পথ দেখিয়ে গেছেন শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক ও মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী। তাদের প্রদর্শিত পথে কৃষক-শ্রমিক শ্রেনীকে ঐক্যবদ্ধ করে অধিকার আদায়ের লক্ষে ‘জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন’ কাজ করবে।”

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে ৮০ শতাংশ কৃষকের বাস হলেও কৃষকের অধিকার আজও আমাদের সমাজে অধরাই থেকে গেছে। আজও সারের জন্য, সেচপাম্পের মাধ্যমে জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বিদ্যুতের দাবিতে কৃষককে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে হয়। যে কৃষক শুধু নিজের জন্য চাষাবাদ করে না, ঝড়, বৃষ্টি, সাইক্লোন, বন্যা, খরা মোকাবিলা করে দেশের জন্য সম্পদ তৈরিতে জমিতে ফসল ফলান, সেই কৃষক যখন দুঃখ-দুর্দশায় পতিত হয়, তখন আমাদের মনে থাকে না। আমরা দাঁড়াতে পারি না সেই কৃষকের পাশে। আমরা সেই কৃষকের পরিশ্রমের মূল্য দিতে জানি না।’

বিজ্ঞাপন

সভায় ঈসা বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে শ্রমিকদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ও অবদানের কথা কারও অজানা নেই। অব্যবস্থাপনা ও লুটপাটের কারণে শিল্পকারখানাগুলো একে একে রুগ্ন হয়ে পড়েছে, অলাভজনক হয়ে গেছে এবং সবার অগোচরে বন্ধও হয়ে গেছে। যেসব শিল্পকারখানা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। শিল্পের এই ভগ্ন ও দৈন্যদশার কারণে কত শ্রমিক যে বেকার হয়েছে, দুর্ভোগ-বিড়ম্বনা ও অনিশ্চয়তার শিকার হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। স্বাধীনতার পর যে শিল্পটির ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে, সেটি পোশাক শিল্প। এই শিল্পে লাখ লাখ শ্রমিকের বিশেষ করে নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ যথোচিত নয়।’

তিনি বলেন,  ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ জীবনযাত্রার ব্যয় যখন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে, তখন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না এ দেশের কৃষক আর শ্রমিক সমাজের আয়। ফলে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়ার অবস্থা। তাদের সমস্যা সমাধান না হলে ব্যাহত হবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন।’

মো. মহসিন ভুইয়া বলেন, “কৃষক-শ্রমিকেরা পদে পদে অধিকারহারা, লাঞ্ছনা আর নির্যাতনের শিকার। কৃষক ও শ্রমিক সমাজ মুক্তি পেতে পারে— এমন একটি কল্যাণধর্মী সমাজব্যবস্থা থেকে যে সমাজ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য প্রদান করে এবং শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি দিয়ে দিতে নির্দেশ দেয়, তেমন একটি সমাজ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যে সমাজ কৃষক ও শ্রমিকদের মানবসম্পদ হিসেবে মূল্যায়ন ও মর্যাদা প্রদান করে, তেমন সমাজ গড়ে তুলতে চাই। সেই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই ‘জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন’ কাজ করবে।”

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন