বিজ্ঞাপন

তাবিথ-ইশরাকের পাশে শীর্ষ নেতা, আওয়ামী নেতারা বিধিতে বাঁধা

January 24, 2020 | 11:26 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দ্য রিপ্রেজেন্টেশন অব দ্য পিপল অর্ডার (আরপিও) বা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ ও জাতীয় সংসদের সদস্যরা স্থানীয় নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। আরপিও’র এই বিধিতে বাঁধা পড়ায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না দলটির কোনো শীর্ষ নেতা।

বিজ্ঞাপন

তবে বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী এদিক থেকে কিছুটা সুবিধা পাচ্ছেন। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া কেউ বিজয়ী হননি। আবার বিজয়ী হওয়ার পরও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ নেননি।

সঙ্গত কারণেই ঢাকা দক্ষিণে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন এবং উত্তরে তাবিথ আউয়ালের নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কোনো বাধা নেই। বিএনপির সঙ্গে জোট বাঁধা ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, আ স ম আব্দুর রবের জেএসডি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্যের শীর্ষ নেতারাও বাঁধা পড়ছেন না নির্বাচনি আচরণবিধিতে।

তাই প্রচারণার ১৫তম দিন শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ধানের শীষের দুই মেয়র প্রার্থীর পাশে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা সারাদিন ছায়ার মতো লেগে ছিলেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তরে ধানের শীষের প্রার্থী ইশরাক ও তাবিথের পক্ষে বিরামহীন প্রচারণা চালিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ছিল খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। সকাল ১০টায় কোকার কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে প্রচারণা শুরু করেন ইশরাক-তাবিথ। এ সময় সেখানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বনানী কবরস্থান থেকে ঢাকা উত্তরে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল মধ্যবাড্ডার লুৎফুন টাওয়ার থেকে প্রচারণা শুরু করেন। সেখানে অংশ নেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। এ সময় তিনি তাবিথের পক্ষে ভোট চেয়ে বলেন, ‘যেভাবে জনগণের সাড়া দেখছি, যদি ১ ফেব্রুয়ারি তারা ভোট দিতে পারে, তাহলে তাবিথ আউয়াল হবে ঢাকা উত্তরের মেয়র। এ রায় কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমাদের প্রার্থীদের ওপর যেভাবে হামলা হচ্ছে, ভোটের মাধ্যমে আপনারা এর জবাব দেবেন । আমাদের প্রার্থীর পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার আমাদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য নানারকম ফন্দি ফিকির করবে। আপনারা সতর্ক থাকবেন। ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে বসে থাকবেন। ভোট গণন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র ত্যাগ করবেন না।’

তাবিথের এই প্রচারণায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জামান দুদু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার মাহবুব উ্দ্দীন খোকন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানীসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

বিজ্ঞাপন

বনানী কবরস্থান থেকে ঢাকা দক্ষিণে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন চলে যান পুরান ঢাকায়। দক্ষিণ সিটির ৪৬ নং ওয়ার্ডের ফরিদাবাদ (জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম) মাদ্রাসায় জুম্মার নামাজ পড়ার পর স্থানীয় ‘দয়াল বাবা মোতালেব শাহ (রহঃ)-এর মাজার জিয়ারত করে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন ইশরাক হোসেন।

সেখানে তার সঙ্গে যোগ দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেক শীর্ষ নেতা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।

তবে বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা ধানের শীষ প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিতে পারলেও নৌকার দুই প্রার্থীর পক্ষে অংশ নিতে পারছেন না আওয়ামী লীগ নেতারা। দলটির বেশিরভাগ শীর্ষ নেতা মন্ত্রিপরিষদ ও জাতীয় সংসদের সদস্য হওয়ায় আরপিওতে বাঁধা পড়ে আছেন।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপস যখন গেন্ডারিয়া এলাকায় গণসংযোগে আসেন, তখন তার পাশে দলের কোনো শীর্ষ নেতা ছিলেন না। কেবল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম শুক্রবার প্রচারণা শুরু করেন গুলশান ইয়ুথ ক্লাব মাঠ থেকে। কয়েক শ’ কর্মী সমর্থক সেখানে উপস্থিত থাকলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতা ছিলেন না। কেবল ঢাকা উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিকে দেখা গেছে দলীয় প্রার্থী আতিকুল ইসলামের পাশে।

এ সময় আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন- গুলশান এলাকায় নাকি আমার পোস্টার কম এবং তাবিথের পোস্টার বেশি। এতেই প্রমাণ হয়, এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আমি প্রতিপক্ষকে অনুরোধ করব, আসুন আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করি।’

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন