বিজ্ঞাপন

সিটি নির্বাচন: সামর্থ্যের সবটুকু নিয়ে মাঠে বিএনপি

January 28, 2020 | 10:00 am

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: উত্তরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল, আর দক্ষিণে সদ্য প্রয়াত আরেক ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন। ঢাকার দুই সিটিতে এই দুই মেয়র প্রার্থীকে জেতাতে সামর্থ্যের সবটুকু নিয়ে মাঠে নেমেছে বিএনপি। দলটির চেয়ারপারসন কারাগারে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান লন্ডনে। বাকি সব নেতা মাঠে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা হলেন— ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দীন আহমেদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

পদাধিকার বলে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। অর্থাৎ সব মিলিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা এই মহূর্তে ১৬ জন। তাদের মধ্যে কারাগারে থাকায় বেগম খালেদা জিয়া, দেশের বাইরে অবস্থানের কারণে তারেক রহমান ও সালাহউদ্দিন আহমেদ আর অসুস্থতার কারণে ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া দলের কর্মসূচিতে থাকতে পারছেন না। আর ব্যক্তিগত কারণে রাজনীতি থেকে দূরে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

স্থায়ী কমিটির বাকি ১১ জন সদস্য তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেনের জন্য রীতিমতো মাঠে নেমে পড়েছেন। এর মধ্যে আবার স্থায়ী কমিটির সবচেয়ে প্রবীণ দুই সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির টিম লিডার হিসেবে কাজ করছেন।

প্রায় প্রতিদিনই বিএনপির এই দুই প্রবীণ নেতা ইশরাক হোসেন ও তাবিথ আউয়ালের প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন, সমন্বয় সভা করছেন, মতবিনিময় সভার আয়োজন করছেন, গণসংযোগে পাশে থাকছেন দলের দুই মেয়র প্রার্থীর।

সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ইশরাককে নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনটি (ডিআরইউ) ও ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিশনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা দক্ষিণে ইশরাকের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। সমন্বয় কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যন আব্দুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশার ও মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস।

দলের এসব শীর্ষ নেতা প্রতিদিনই ইশরাক হোসেনের প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। রোববার (২৬ জানুয়ারি) ইশরাক হোসেনের গণসংযোগে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ জানুয়ারি) মির্জা আব্বাস নিজেই ইশরাকের সঙ্গে গণসংযোগে নেমে পড়েন। রাজধানীর খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, কমলাপুর, নয়াপল্টন এলাকায় গণসংযোগের সময় ইশরাকের সঙ্গে ছায়ার মতো লেগে থাকনে মির্জা আব্বাস। আর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনে যান ইশরাকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আরেক প্রধান সমন্বয়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সমন্বয় কমিটির সদস্য আব্দুস সালাম।

ঢাকা উত্তর সিটিতে তাবিথ আউয়ালের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও সেলিমা রহমান। আর সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি বজলুল বাসিত আঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

শুধু নির্বাচনি কর্মকাণ্ড পরিচালনা নয়, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে লজিস্টিক সাপোর্টের জন্যও দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ধানের শীষের দুই প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। নির্বাচনকালীন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হয়রানি বন্ধে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা দিতে বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান লিগ্যাল এইড কমিটির দায়িত্ব পালন করছেন। হামলা-মামলা, গ্রেফতারসহ এ সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভাল করছেন দলের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

 

নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপির কোন কোন নেতা টকশোতে অংশ নেবেন, তা সমন্বয় করার দায়িত্ব পালন করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ কাজে তাকে সহায়তা করছেন যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। নির্বাচনি প্রচারে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিশিষ্ট গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার।

নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কাজটি করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, জেবা আমিন খান।

নির্বাচনের মাঠে প্রতিপক্ষের হামলা, ভয়ভিতি প্রর্দশন, প্রচার-প্রচারণায় বাধাসহ যেকোনো ধরনের ফৌজদারি অপরাধের প্রতিকার চেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও পুলিশ প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের দায়িত্ব পালন করছেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া ও প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী।

অর্থাৎ বিএনপির প্রায় সব নেতা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো না কোনো দায়িত্ব পালন করছেন। শুধু খাতা-কলমে নয়, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা রীতিমতো মাঠে নেমে কাজ করছেন। নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর দিনই দুই সিটিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ নেতারা মাঠে নামেন। এরপর কিছুদিন মধ্যম সারির নেতারা প্রচার প্রচারণায় অংশ নেন। প্রচারণায় দশম দিন থেকে ফের মাঠে নামেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) প্রচারণার ১৯তম দিনও মাঠে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিন তাবিথ আউয়ালের ইশতেহার ঘোষণার মঞ্চে বিএনপির মহাসচিবসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা হাজির ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জয়-পরাজয়ের চেয়ে দলের অস্তিত্ব জানান দেওয়া, নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙ্গাভাব ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা, সাধারণ মানুষের কাছে ধানের শীষের আবেদন অক্ষুণ্ন রাখা এবং সর্বোপরি মাঠের রাজনীতিতে ফিরতেই সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি। আর এই অংশ নেওয়াটাকে সার্থক করে তুলতে সামর্থ্যের সবটকু নিয়ে মাঠে নেমেছে দলটি।

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা নির্বাচনমুখী দল। আমাদের ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। তাই যেকোনো ধরনের নির্বাচনে সামর্থ্যের সবটুকু দিয়েই আমরা মাঠে থাকার চেষ্টা করি। ফলে প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর হয়ে ওঠে নির্বাচন। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের জুলুম, নির্যাতন, হয়রানি, ভোটের ফলাফল ছিনতাইয়ের কারণে সেই উৎসবমুখর পরিবেশ আর থাকে না।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
চবি ছাত্রকে মারধরের পর হলের ছাদ থেকে ফেলা চেষ্টার অভিযোগহিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনাঢাকার পয়ঃবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশরানা প্লাজা ধস: ভুক্তভোগীদের পুনর্বাসন ও মামলা নিষ্পত্তির দাবিগরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনা সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি ডিএমপিরব্যাংক একীভূতকরণের নামে ঋণ খেলাপিদের দায়মুক্তি দেওয়া হচ্ছেন্যাপ বাস্তবায়নের জন্য চাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও আইনি ভিত্তিকাদেরকে নিয়ে মন্তব্য, যাত্রী কল্যাণের মহাসচিবের বিরুদ্ধে জিডিজাহাজেই ফিরবেন ২৩ নাবিক, চলছে কয়লা খালাসভুয়া তথ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার চেষ্টা! সব খবর...
বিজ্ঞাপন