বিজ্ঞাপন

ঢাকা-সিলেট চার লেন রুটে নতুন নকশা, দূরত্ব কমছে

January 29, 2020 | 10:05 pm

সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্পে নতুন রুট নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে দূরত্ব ২২৬ কিলোমিটার থেকে ২১০ কিলোমিটারে নেমে আসবে। আগামী মার্চের মধ্যেই এই নকশা চূড়ান্ত হতে পারে। তবে সিলেটের জনপ্রতিনিধিরা সড়কটি এক্সপ্রেসওয়ের আদলে করার জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদফতরকে পরামর্শ দিয়েছেন। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মূল সড়ককে পাশ কাটিয়ে দৈর্ঘ্য আরও ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার কমিয়ে আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরের মাঝামাঝিতে দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করা হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্প নিয়ে এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত ও আলোচনা হয়। সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বৈঠকটি ডেকেছিলেন।

সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম এ মোমেন বলেন, যত দ্রুতসম্ভব এই সড়কটিকে চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু করতে হবে। সিলেটের জনগণের কাছে সরকারের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নতুন রুট প্রস্তাবনাটি ভালো হয়েছে, তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দূরত্ব কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।

আরও পড়ুন- ‘ইঞ্জিনিয়ার সাহেবরা কোথায়?’

বিজ্ঞাপন

বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম জানান, ঢাকা-সিলেট চার লেন সড়কের নতুন রুট প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সড়কটির দূরত্ব আগের চেয়ে ১৫ কিলোমিটার কমে আসবে। নতুন প্রস্তাবনা অনুযায়ী ঢাকা থেকে সিলেটের দূরত্ব হবে ২১০ কিলোমিটার। সার্ভিস লেনসহ সড়কটি হবে ছয় লেনের। আর জমি অধিগ্রহণ করা হবে আট লেনের মাপে। এই মহাসড়কে যানবাহন ৮০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে।

সভায় সওজ কর্মকর্তারা জানান, মহাসড়কের ব্যস্ততম এলাকা নরসিংদী অংশের মাধবদী ও পাঁচদোনা পাশ কা‌টিয়ে সড়ক যাবে। এখানে দূরত্ব সা‌ড়ে ৩ কিলোমিটার কমবে।

এসময় নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক বলেন, নারায়ণগঞ্জ অং‌শে ফ্লাইওভার না দি‌লে আবার যানজট হবে। এখানে ভারী শিল্প এলাকা রয়েছে। প্রচুর ট্রাক ও ভারী যানবাহন যাতায়াত করে। এসময় সওজের পক্ষ থেকে বলা হয়, সড়কের ওই অংশটিতে ফ্লাইওভার থাকবে।

বিজ্ঞাপন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় একজন সংসদ সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে সরাইলের ভেতর দিয়ে রাস্তা দিয়ে নিয়ে গেলে একসঙ্গে ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে বলে মত দেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর প্রয়োজনীয় স্টাডি করবে বলে জানায়।

এছাড়া সিলেটের সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস বলেন, ঢাকা-সিলেট দ্রুত যাতায়াতের জন্য এই সড়ক এক্সপ্রেস ওয়ের আদলে করতে হবে, যেন গাড়ি চলাচলের সময় থামতে না হয় এবং গতি কমে না আসে। আরেক সংসদ সদস্য মোকা‌ব্বির হোসেন ব‌লেন, পুর‌নো রাস্তা‌কে সাইডলাইন ক‌রে নতুন করে মহাসড়ক নির্মাণ করতে হবে। এসময় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কর্মকর্তারা দুইটি প্যারালাল সড়ক করা যে‌তে পা‌রে বলে মত দেন।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন ব‌লেন, পাঁচ বছর নয়, তিন বছ‌রে এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে। কারণ বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও এই সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা যায়নি। কিন্তু সিলেটবাসী এই মহাসড়কের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে।

বিজ্ঞাপন

এসময় সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী জানান, এডিবি অর্থায়নের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন চুক্তি সইয়ের পর থেকে তিন বছ‌রে চার‌ লেন করার প‌রিকল্পনা রয়েছে সওজের।

অনুষ্ঠানে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর জানায়, ঢাকা-সিলেট চার লেন প্রকল্পের নতুন পরিকল্পনায় অন্তত ১০ জায়গায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

এ পরিকল্পনায় দূরত্ব কমপক্ষে ১৫ কি‌মি কম‌বে। ৫০ বছরের পরিকল্পনায় নির্মিত হবে সড়কটি। এই সড়কে এখন যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার থাকরেও নতুন সড়কে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে যানবাহন। আগের নকশায় এই সড়কে পাঁচটি ফ্লাইওভার রাখা হলেও নতুন নকশায় ফ্লাইওভার রাখা হয়েছে ১৫টি। চারটি রেল ওভারপাসও রয়েছে।

আরও পড়ুন-

ঢাকা-সিলেট চার লেন: খোঁজা হচ্ছে বিদেশি ঋণ

ঢাকা-সিলেট ৪ লেন প্রকল্পে অর্থায়ন করবে এডিবি

ঢাকা-সিলেট সড়ক চার লেন প্রকল্পের বাধা কাটছে, ২০২০-এ টেন্ডার

সারাবাংলা/এসএ/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন