বিজ্ঞাপন

করোনা ভাইরাসে মাস্কের দাম দ্বিগুণ, ক্রেতারা ফিরছেন খালি হাতে

January 31, 2020 | 11:35 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট 

ঢাকা: চীনসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। সংক্রমণ ঠেকানো ও ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষার জনপ্রিয় এই মাধ্যমটির দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। ফার্মেসিগুলোতে মাস্ক খুজতে গিয়ে অনেকেই খালি হাতে ফিরে আসতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকার ফার্মেসি, মেগা শপ ও ফুটপাথের হকারদের দোকানে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে।

মহাখালীর আড়জতপাড়ার লাইফ ফার্মার কর্মচারী সাইফুদ্দিন সারবাংলাকে বলেন, করোনাভাইরাস আসার পর দোকানে থাকা সব মাস্ক শেষ হয়েছে। অনেকেই এসে ফিরে যাচ্ছে। তিন চার দিন ধরেই চাহিদা খুব বেশি।

তিনি জানান, সার্জিক্যাল ওয়ন টাইম মাস্ক এক বক্স (৫০ পিস) ৮০ টাকা ছিল এখন ২০০ টাকা হয়ে গেছে। বর্তমানে ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই মাস্ক। একই এলাকার তামিম ফার্মেসীর কর্মচারী বিমল সারাবাংলাকে বলেন, গেটওয়েলের সার্জিক্যাল মাস্ক বক্স ৭০ টাকা ছিল, এখন এটাই কেনা পড়ছে ২০০ টাকা। আগে দেড় টাকার মতো ছিল, এখন ৬ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন ওরা আসছে না। অনেকেই এসে ফিরে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

মহাখালী, শাহীনবাগ ও আড়জতপাড়ার একাধিক ফার্মেসিতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বেশিরভাগ ফার্মেসিই মাস্ক শূণ্য। দোকানীরা জানিয়েছেন করোনা ভাইরাসের আভির্ভাবের পর থেকেই মাস্কের চাহিদা বেড়ে গেছে। একই সাথে সরবরাহও কমে গেছে৷ অর্ডার দিয়েও কোম্পানির কাছ থেকে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছেনা।

মিরপুরের পল্লবীর বাসিন্দা অমিত হাবিব। তিনি বাইরে গেলে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার করেন। এ জন্য প্রায়ই তাকে ফার্মেসি অথবা সুপার শপ থেকে মাস্ক কিনতে হয়। সম্প্রতি মাস্ক কিনতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন তিনি।

তিনি বলেন, এই এলাকায় মেট্রোরেলের কাজ চলছে। সেজন্য বাতাসে ধুলোবালির পরিমাণ বেশি। এছাড়া রাজধানীর বায়ুমানও খুব খারাপ। সেজন্য আমি বাইরে বের হলেই মাস্ক ব্যবহার করি। আগে কাপড়ের মাস্ক পড়তাম। কিন্তু যখন দেখলাম সেটা হাইজেনিক নয়, তখন থেকেই নীল রঙের অ্যান্টিডাস্ট হাইজিন ডিসপোজাল মাস্ক ব্যবহার শুরু করি। এবং সেজন্য আমি ৫০ পিসের প্যাকেট কিনতাম। এর দাম পড়তো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। কিন্তু সেগুলো আর পাইকারি পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও কোনো কোনো দোকানি দিতে চাচ্ছে; কিন্তু দাম হাঁকছে ৫০০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে মানুষ মাস্ক ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। এর সুযোগ নিয়ে ওষুধের দোকান ও সুপার শপগুলো মাস্কের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি আজ কয়েকটি দোকানে মাস্ক কিনতে যেয়ে পাইনি। ওয়ান টাইম ব্যবহারের মাস্কগুলো খুচরায় ১০ টাকা বিক্রি করছে তারা। যেগুলো আগে পাইকারি ২ টাকা এবং খুচরা ৫টাকায় বিক্রি হতো সেগুলোই এখন ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফার্মেসিগুলোতে গিয়ে মাস্কের দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, অর্ডার দিয়েছি কিন্তু কোম্পানি থেকে মাস্ক দিচ্ছে না।

রাজধানীর প্রগতি স্বরণির লাজ ফার্মার কর্মচারীরা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, তারাও মাস্কের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। ফিল্টার মাস্ক বর্তমানে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে এই মাস্কের দাম কতোটা বেড়েছে তা জানাতে পারেননি দোকানীরা। লাজ ফার্মায় ওয়ান টাইম মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৭ টাকায়। গত তিন থেকে চারদিনে সার্জিক্যাল এই মাস্কের দাম বেড়েছে ২ টাকা। তবে একই এলাকার মেসার্স আইডিয়াল ফার্মেসিতে ওয়ান টাইম মাস্ক ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে কারওয়ানবাজারের ফুটপাথে সবুজ নামের একজন বিক্রেতা মাস্ক বিক্রি করছিলেন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, চায়না মাস্ক আগে ছিল ৩০ টাকা। এখন ৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। তিন চারদিনে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। আর বাজারেও এখন মাস্ক নাই। অর্ডার দিয়ে চীনা মাস্ক পাওয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া দেশী কাপড়ের তৈরি মাস্ক এখন ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আগে যা ১০ টাকায় বিক্রি হতো।

কারওয়ানবাজারের ফুটপাথ থেকে মাস্ক কিনছিলেন বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বাবু। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে চীনা মাস্কের দাম ছিল ৩০ টাকা ছিল। এখন ৫০ টাকা হয়ে গেছে। দাম বাড়লেও তো কিনতে হবে। কেবল করোনাভাইরাসের কারণেই নয়, শীতকালে এমনিতেও ধুলাবালির হাত থেকে রক্ষার জন্যে মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। ফলে বাড়তি দামেও মাস্ক কিনতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিএস

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন