বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগের কমিটিতে পদ না পেয়ে সড়ক অবরোধ

February 7, 2020 | 7:48 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের আওতাধীন সদ্যঘোষিত একটি থানা কমিটি বাতিলের দাবিতে প্রায় একঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পদবঞ্চিতরা। এসময় তারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী মোড়ে এই বিক্ষোভে অংশ নেন ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের শ’খানেক নেতাকর্মী। এসময় তারা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।

বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে প্রায় একঘণ্টা ব্যস্ততম ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সদস্য ও এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি ওয়াসিম উদ্দিনের অনুসারী। ওয়াসিম শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। নগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকও নওফেলের নিয়ন্ত্রণে আছেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং ও চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। চান্দগাঁও থানা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন যথাক্রমে নুরুন্নবী সাহেদ ও শহীদুল আলম। আর ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন যথাক্রমে ফরহাদ সায়েম ও রাকিব হায়দার।


মূলত ডবলমুরিং থানা কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সেটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভে নেমেছিলেন পদবঞ্চিতরা। ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরহাদ সায়েম নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমুর অনুসারী ও ইসলামিয়া কলেজের ছাত্রলীগের নেতা। আর রাকিব হায়দার নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের অনুসারী এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের নেতা।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নিয়ন্ত্রণে থাকা নগরীর ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতি আবার দুইভাগে বিভক্ত। একপক্ষে নেতৃত্ব দেন ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিন, আরেকপক্ষে আছেন জিএস আরশাদুল আলম বাচ্চু। জাকারিয়া দস্তগীর বাচ্চু গ্রুপের নেতা। মূলত কমিটিতে বাচ্চু গ্রুপের নেতাকর্মীদের আধিপত্যে ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নামেন ওয়াসিমের অনুসারীরা।

বিজ্ঞাপন

ওয়াসিমের অনুসারীদের অভিযোগ, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কারও মতামতের তোয়াক্কা না করে, কার্যনির্বাহী কমিটিতে কোনো আলোচনা না করে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মতামত না নিয়ে ডবলমুরিং থানা কমিটি করেছেন। এতে বিবাহিত, অছাত্র, মাদক মামলা গ্রেফতার হওয়া এমনকি অস্ত্র হাতে পত্রিকায় ছবি প্রকাশ হওয়া তরুণও স্থান পেয়েছে। অন্যদিকে ওয়াসিমের অনুসারীদের কমিটিতে রাখা হয়নি।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওয়াসিমের অনুসারী এমইএস কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রেজাউল করিম রিটন সারাবাংলাকে বলেন, ‘কারও মতামত না নিয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নিজেদের ইচ্ছেমতো বিতর্কিত একটি কমিটি দিয়েছেন। আমাদের সভাপতি প্রার্থী ছিল জহুরুল কাইয়ূম ফয়সাল। তাকে কমিটিতে রাখাই হয়নি। এই কমিটি আমরা মানি না। এজন্য রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছি। আমরা অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল চাই।’


নগর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু তালেব সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডবলমুরিং থানার মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সাংগঠনিক কমিটি করার আগে আমাদের মতামত নেননি সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। যারা দীর্ঘসময় ধরে কলেজে-এলাকায় ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত আছে, তাদের তো প্রত্যাশা আছে। পদ না পেয়ে স্বাভাবিকভাবে তারা হতাশ হয়ে রাস্তায় এসেছে। খবর পেয়ে আমরা সিনিয়ররা কয়েকজন এসে তাদের শান্ত করেছি।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার জাকারিয়া দস্তগীরের মোবাইলে ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। রাস্তায় শুধু টায়ার জ্বালিয়েছে। অপ্রীতিকর কিছুই হয়নি।’

সারাবাংলা/আরডি/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন