বিজ্ঞাপন

‘করোনা আক্রান্ত ৩ শতাংশ রোগীর আইসিইউ প্রয়োজন হয়’

February 9, 2020 | 2:17 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুনভাবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১৭ হাজার রোগীর একটি বিশ্লেষণ থেকে জানিয়েছে, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের মাঝে মাত্র তিন শতাংশ রোগী ক্রিটিক্যাল বা সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকে। তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখার প্রয়োজন হয়। এছাড়া ৮২ শতাংশ রোগীর ঝুঁকি থাকে স্বল্প মাত্রায়। বাকি ১৫ শতাংশের অবস্থা কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীতে করোনা প্রতিরোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেন এ সব তথ্য জানান জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশ্লেষণ দেখেই এটা বোঝা যাচ্ছে যে, এন-করোনা ভাইরাস নিয়ে আমাদের মধ্যে যে আতঙ্ক রয়েছে এটা নিয়ে আসলে সে মাত্রায় ভয়ের কিছু নেই। আমাদের যে কমন ফ্লু রয়েছে, যেমন- জ্বর, কাশি, সর্দি; যারা এসব উপসর্গ নিয়ে ভুগছেন তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই। বেশিরভাগ কেসই খুব সাধারণ।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বে এ পর্যন্ত নতুনভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩১ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে প্রাণহানি হয়েছে ৬৩৭ জনের। চীনসহ এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত দেশের সংখ্যা ২৫। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হংকং, তাইওয়ান ও ম্যাকাওকে চীনের অন্তর্গত ধরে হিসেব করেছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নতুন করে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ১৫১ জন। আগের দিন আক্রান্তের সংখ্যা ছিল তিন হাজার ৬০০ জন। তাতে মনে করা হচ্ছে যে, করোনার প্রাদুর্ভাব কমতে শুরু করেছে। যদিও এখনই এমনটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তারপরও আমাদের পর্যবেক্ষণে মনে হচ্ছে যে, পরিস্থিতি হয়তো কিছুটা ভালোর দিকে যাচ্ছে। অন্তত নতুন রোগী আক্রান্তের হার বাড়ছে না। এটা একটা ভালো দিক। এছাড়া এর মধ্যে নতুন কোনো দেশও আক্রান্ত হয়নি। এটা ইতিবাচক। এগুলো থেকে বোঝা যায় যে, করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম কাজ করছে ‘

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে চীন থেকে আসা বিমান ফ্লাইটগুলো ছাড়াও অন্য ফ্লাইটের যাত্রীদেরও স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। এটা করা হচ্ছে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য। আমরা জোর দিচ্ছি প্রতিরোধের ওপর।’

করোনা প্রতিরোধে মাস্ক ব্যবহার বিষয়ে অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, ‘মাস্ক ব্যবহার নিয়ে জনমনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। রোগী ও রোগীর সেবাদানকারী ছাড়া আর কারও মাস্ক ব্যবহারের দরকার নেই। চীনে সবার মাস্ক পরা দেখে অনেকেই মনে করেন আমাদেরও মাস্ক পরা দরকার। কিন্তু চীনে অনেক রোগী রয়েছে, জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি বা এখানে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নেই। ফলে সাধারণভাবে মাস্ক পরে বাইরে ঘোরারও এখন কোনো প্রয়োজন নেই। কেবলমাত্র যারা চীন থেকে এসেছেন এবং যাদের মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ রয়েছে বলে আমরা মনে করছি, তাদেরই আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যে, তারা যেন মাস্ক পরে থাকেন। এই ভাইরাস হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে ১ মিটার পর্যন্ত যেতে পারে। এর বাইরে যারা বাড়িতে এমন কাউকে সেবা দেবেন ও যারা স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন তারা মাস্ক পরবেন।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে আইইডিসিআরর পরিচালক জরুরি প্রয়োজন ছাড়া আপাতত চীন ভ্রমণে নিরূৎসাহিত করেন। এছাড়াও যারা কোনো কারণে ভ্রমণ করেছেন, তাদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত সতর্কতাগুলো মেনে চলারও পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি জানান, বিদেশ থেকে এসে রাজধানীর আশকোনা ক্যাম্পে থাকা ৩০১ জন বাংলাদেশি ভালো আছেন। এখন পর্যন্ত আট হাজার ৪৮৪ জন যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৩ জনের। তাদের মধ্যে কারও শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন