বিজ্ঞাপন

‘পাল্টে গেছেন আইনমন্ত্রী’

February 24, 2018 | 3:02 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়ন না করায় আইনমন্ত্রীর কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

তিনি বলেন, ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন অনুযায়ী আসল মালিকদের জমি ফেরত দিতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক নানা বাহানা সৃষ্টি করছেন।’  তিনি এই আইন প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত করছেন বলেও অভিযোগ করেন সুলতানা কামাল।

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন সুলতানা কামাল।

বিজ্ঞাপন

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন-এর জনবিরোধী বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগের প্রতিবাদ এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া দ্রুত করার দাবিতে নয়টি সংগঠন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সুলতানা কামাল বলেন, ‘এই আইন প্রয়োগে আইনমন্ত্রী একবার বলছেন, আপিল হবে, একবার বলছেন এটার বিরুদ্ধে রিট হবে, একবার বলছেন অনুশাসন, আবার বলছেন এটার বিরুদ্ধে অন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।’ আমরা যখন ওনার (আইনমন্ত্রী) সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছি এটা নিয়ে আজ পর্যন্ত তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এটা  অত্যন্ত  দু:খজনক অভিজ্ঞতা, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

‘যাকে আমরা মনে করি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির একজন মানুষ, ওনার ব্যক্তিগত ইতিহাসও তাই বলছে। কিন্তু আজকে তিনি যে অবস্থান নিয়েছেন তা আমাদের জন্য ভীষণভাবে হতাশাব্যঞ্জক। একেবারেই পাল্টে গেছেন তিনি।’

বিজ্ঞাপন

সুলতানা কামাল বলেন,  ‘এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অথচ এ সময়ে এসে একটা উদ্যোগ নেওয়া হলো- যে জমিগুলো অর্পিত সম্পত্তির নামে রয়ে গেছে, যেগুলো এখনো প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত যায়নি, সেই জমি জমা ভাগাভাগি করে যারা সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অবসরে যাবেন তাদের আবাসনের জন্য ব্যবহার করা হবে।’ তাহলে আপনারা বুঝতে পারছেন কেন এই জমিগুলো এতোদিন ধরে দেওয়া হয়নি।

লক্ষাধিক মানুষ তাদের জমি জমা ফেরত পাচ্ছে না। এই জমির প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে না দিয়ে এই নতুন উদ্যোগ নেওয়ায়  আমরা ভীষণভাবে শঙ্কিত।

১৭ বছর ধরে প্রত্যর্পণ আইনের কার্যকারিতা নাই উল্লেখ করে সুলতানা কামাল বলেন, এই আইনটা কিন্তু করা হয় ২০০১ সালে।কিন্তু এই আইনের কোনো প্রয়োগ নেই। পক্ষান্তরে আমরা দেখতে পাচ্ছি এই আইনের মাধ্যমে যারা নিজেদের জমি ফেরত চাচ্ছে তারা কী পরিমাণ হয়রানির সম্মুখীন হচ্ছে। এই হয়রানিটা করছে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা।

আজকে স্পষ্ট করে বিভিন্ন বক্তার কাছ থেকে আমাদের আইনমন্ত্রীর নামও উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা এই জমিগুলি আর কখনোই মালিকদের কাছে ফেরত যাবে না। এই জমি চলে যাবে যারা ক্ষমতার বলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের কাছেই। এই জমি আর কখনো প্রকৃত মালিকরা ফেরত পাবে না।

সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণকারীদের সরকার প্রশ্রয় দেয় উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, সরকার দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি। আসলে প্রকৃত পক্ষে দেখা যাচ্ছে, তারা অনবরত বিপরীতমুখি কাজ করে যাচ্ছে।’

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেছেন অনেক কিছুই করা যায় না। কারণ পাকিস্তানি মনোভাবের লোকজন এখানে রয়ে গেছে। সংস্কৃতির অনেক কিছুই এখানে প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। তার কাছে আমাদের বিনীতি অনুরোধ তিনি যেন চারদিকে তাকিয়ে দেখেন কাদের মধ্যে পাকিস্তানী মনোভাব রয়ে গেছে। কারা সাম্প্রাদায়িক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছে। সেটা যেন তিনি দূর করেন।

সংবাদ সম্মেলনে থেকে অর্পিত সম্পত্তি আইন বাস্তবায়ন করতে আট দফা দাবি তুলে ধরেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ‘নিজেরা করি’ নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির, অর্পিত সম্পত্তি আইন প্রতিরোধ আন্দোলনের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ।

সারাবাংলা/এজেডকে/টিএম/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন