বিজ্ঞাপন

‘সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে সব অর্জনই ব্যর্থ’

February 24, 2018 | 6:08 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: জাতি হিসেবে আমাদের অনেক অর্জন থাকলেও গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা না গেলে সব অর্জনই ব্যর্থ হবে বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।

শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা ফোরাম আয়োজিত ‘সকলের অংশগ্রহণে নির্বাচন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলেঅচনায় বক্তারা বলেন, ঋণ কেলেঙ্কারি ও প্রশ্নফাঁসকারীদের বিচারে সংশ্লিষ্টদের সদিচ্ছার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে তবেই গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।

বিজ্ঞাপন

গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অনেক অর্জনের কথা বলা হয়েছে। এসব অর্জন ব্যর্থ হবে, যদি গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারি। আমাদের শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যাংক খাত অনেক দুর্বল। এই দুর্বলতার কারণে জনগণকে ভূক্তোভোগী হতে হবে’।

আলোচনায় তিনি আরও বলেন, ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি এবং প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া কোনো কঠিন কাজ না। তাদের শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে শুধু সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এই শাস্তি নিশ্চিত করা গেলেই ব্যাংক কেলেঙ্কারি এবং প্রশ্নফাঁসের ঘটনা কমে আসবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘আজ দেশে অনেক অর্জনের কথা বলা হচ্ছে, এটা ধোঁকাবাজি। যে জাতির সরকার গঠনের অধিকার থাকে না, সে জাতি গোলাম। আমাদের বড় ব্যর্থতা আমাদের দেশে সরকার আছে কিন্তু জনগণ ভোট দিতে পারছে না। আমাদের দাবির ভিত্তি কী?’

বিজ্ঞাপন

ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষিত লোক আছে, ভাল লোকও আছে, যারা দেশ শাসন করছেন তারা এটা মনে করছে না। আমাদের মতো লোকের প্রয়োজন আছে সেটাও তারা মনে করছে না। এটা দেখে আমার খুব কষ্ট হয়।
সকলকে বোকা মনে করা এটা তো একটা লজ্জ্বার কথা। আমাদের মত শিক্ষিত লোকদেরকেও গাধার সঙ্গেও তুলনা করা হয়।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের প্রথম অন্তরায় ভারত ও দ্বিতীয় অন্তরায় দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশে যে কটি নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয়েছে ততোবারই বিরোধী দল নির্বাচনে জয়লাভ করেছে। আমি ভারতের কথা এ জন্য বলছি কারণ, ভারত তার নিজের স্বার্থে আমাদের দেশে সুষ্ঠু গণতন্ত্রের চর্চা হোক সেটা তারা চায়না।’

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে ভালো কাজ হয়েছে কিন্তু তাদের নিজ দেশে ফেরত যেতে হবে। আমরা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। পৃথিবী যখন রোহিঙ্গাদের সমস্যায় এগিয়ে এসেছিলো তখন আমরা নিশ্চুপ ছিলাম। বাংলাদেশ তাদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে চায় কি-না এখন সেটাই আসল প্রশ্ন। কারণ, তাদের স্থায়ীভাবে ভাষান চরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ মুহূর্তে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনো প্রত্যাশা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনেরও কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। ক্ষমতাসীনরা রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন কি তাদের কোনো বার্তা দিয়েছে? এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন চুপ কেন? তাদের ভূমিকা কী? তাদের কাছ থেকে যে কোনো পদক্ষেপ আসবে তা বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। আমাদের সামনে দুটি পথ খোলা। এক, আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটবো না-কি যারা ক্ষমতা দখল করে আছে তাদের রোধ করবো? এসব ব্যাপারে আমাদের কি পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তা বিবেচনা করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন- জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ, ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমএইচ/এমআই

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন