বিজ্ঞাপন

‘দশ পার্সেন্টের ওপরে যে ভোট, সেটা ইভিএমের কারসাজি’

February 16, 2020 | 4:29 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা সিটি নির্বাচনে দশ পার্সেন্টের ওপরে যে ভোট দেখানো হয়েছে, তার পুরোটাই ইভিএমের কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ‘আনন্দ ভবন’ কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে মূল্যায়ন বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনও অংশ নেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমরা আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছিলাম। সেই নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিণ এবং উত্তরে ধানের শীষ এবং বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলরদের প্রতি যে সমর্থন, যে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছিল, সেটা মিডিয়ার কল্যাণে বাংলাদেশের জনগণ দেখেছে, ঢাকা শহরের প্রতিটা মানুষ দেখেছে।‘

তিনি বলেন, ‘সরকার এই নির্বাচন ইভিএমের মাধ্যমে করেছে এই জন্য যে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকার ত্রিশ তারিখে ভোটারদের সম্মুখীন হওয়ার সাহস পায়নি। ২৯ তারিখ রাতে ভোট ডাকাতি করেছে। এই কৌশলে তারা ভোটারবিহীন, ভোটবিহীন, জনগণের সমর্থনবিহীন সরকার। তারা মনে করেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের রাতে ভোট ডাকাতির যে কৌশল, তা বিএনপি জেনে ফেলেছে। সেজন্য সিটি নির্বাচনে সেই কৌশলে না গিয়ে ইভিএমের কৌশলে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘আমাদের কাউন্সিলররা বলছেন- নির্বাচনে সাত/আট পার্সেন্টের বেশি মানুষ উপস্থিত হয় নাই। তারপরও দক্ষিণে ২৯ পার্সেন্ট ভোট, উত্তরে ২৫ পার্সেন্ট ভোট দেখানো হয়েছে ইভিএম কারচুপির মাধ্যমে। আর ইভিএম যে ত্রুটিমুক্ত নয়, সেটা প্রমাণ হয়েছে এই নির্বাচনে। স্বয়ং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আঙুলের ছাপ মেশিন নেয়নি। তিনি সেখানে প্রিজাইডিং অফিসারের আঙুলের ছাপে ভোট দিয়েছেন’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘প্রিজাইডিং অফিসারের আঙুলের ছাপে কতজন ভোট দিয়েছে, সেটা গণনা থেকেই বোঝা যায়। ১০ পার্সেন্টে ওপরে যে ভোট ঘোষণা করা হয়েছে, তার পুরোটাই ইভিএমের কারসাজি। অতএব, ইভিএম যে গ্রহণযোগ্য নয়, ত্রুতিটপূর্ণ— সেটা এই নির্বাচনে প্রমাণ হয়েছে।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ধানের শীষের পক্ষে যে জনজোয়ার সৃষ্টি করেছিলেন, এই জনজোয়ার থামাতে এই সরকার নানাভাবে প্রশাসনিক প্রেসার দিয়েছে। যাতে জনগণ ভোট দিতে না আসে। যার ফলে জনগণ ভোট দিতে আসে নাই এবং ১০ পার্সেন্টের বেশি ভোট কাস্ট হয়নি।’

বিজ্ঞাপন

৯০ ভাগ ভোটার ভোট দিতে আসেনি দাবি করে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের মাধ্যমে, এই নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এবং ইভিএমের মাধ্যমে ভোট হলে কোনো দিনও জনমতের প্রতিফলন ঘটবে না। এই ইভিএম পদ্ধতি জনগণ না করে দিয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা নাই, এই সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নাই— সিটি নির্বাচনে ঢাকা শহরের মানুষ সেটা প্রমাণ করেছে।’

জনগণ ভোট দিতে পারলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হতেন দাবি করে মোশাররফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যে রাষ্ট্রপরিচালনা, আওয়ামী লীগ সরকারের আমালে জিনিসপত্রের দাম, ক্যাসিনো— এই সকল কারণে জনগণ বিক্ষুব্ধ ছিল। জনগণ তার জবাব দিতে চেয়েছিল ভোটের মাধ্যমে। কিন্তু এই সরকার সেটা বুঝতে পেরে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিত করেছে, বিরূপ পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘ভোট ও সরকারের প্রতি জনগণের অনিহা দেশ এবং জাতির জন্য একটা অশনি সংকেত। আমরা একটা অন্ধকার গহ্বরের দিকে ধাবিত হচ্ছি। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য আন্দোলন করেছেন। একটা মিথ্যা মামলা, ফরমায়েশি রায়ে নেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। আজকে আমাদের কাউন্সিলরা আলোচনার মাধ্যমে শপথ গ্রহণ করেছেন যে, সব ওয়ার্ড, থানা এবং সকল পর্যায়ে কমিটি পুনর্গঠন করে আন্দোলনের মাধ্যমে ম্যাডামকে মুক্ত করবে।’

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন