এমন জয়ের পরও সন্তুষ্ট নন মাশরাফি

সারাবাংলা প্রতিবেদক

কখনো কখনো ২২ গজে একজন এমন কিছু করেন, বাকি সবার দর্শক হয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার থাকে না। ক্রিস গেইলের জন্য আজ হয়ে গেল তেমন একটা দিন। খুলনা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ অসহায় হয়ে দেখলেন একজন কীভাবে একাই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিলেন। রংপুর অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও স্বীকার করলেন, আজ ভাগ্য তাদের পক্ষে ছিল। এই জয়ের পরও দলের ভারসাম্য নিয়ে সন্তুষ্ট নন মাশরাফি।

এবারের বিপিএলে অনেক ম্যাচেই কাঠখড় পুড়িয়ে জিততে হয়েছে রংপুরকে। আজ ৮ উইকেটের জয় এসেছে সহজেই। তারপরও মাশরাফি ঠিক সন্তুষ্ট নন, ‘কম্বিনেশনের কথা বললে এখনও আমাদের মানিয়ে নিতে খুব কঠিন হচ্ছে। আজকেও গাজীকে ওপেন করাতে হয়েছে, যেন শেষ পর্যন্ত একজন ব্যাটসম্যান থাকতে পারে। যখন আমরা একজন বাঁহাতি স্পিনার, পেসার বা অফ স্পিনার বাড়াতে চাচ্ছি তখন একজন ব্যাটসম্যানের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। আবার ব্যাটসম্যান বাড়াতে গেলে একজন বোলারের ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয়, বোলাররা টুর্নামেন্ট জুড়ে ভালো করছে এই জন্য আমরা মোটামুটি টুর্নামেন্টের শেষ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। নইলে আরও কঠিন হত।’

আজ অবশ্য গেইল এতকিছু ভাবার অবকাশই দেননি। বিপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্কোর, সবচেয়ে বেশি ছয় এসব রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন গেইল। কাছাকাছি গিয়েও ভাঙতে পারেননি সেঞ্চুরির রেকর্ড। আজকের ম্যাচের আগ পর্যন্ত অবশ্য বড় কিছু করতে পারেননি। তবে এমন কিছু যে আসছে, সেটা মাশরাফিও জানতেন, ‘অন্য দিক থেকে আমরা আরও ভাগ্যবান যে ও রকম বড় ইনিংস খেলতে হয়নি ওকে। এর আগে দুইটা পঞ্চাশ রানের ইনিংস খেলেছিল। ওই দুইটাও কিন্তু সে কঠিন পরিস্থিতিতে, কঠিন উইকেট খেলেছিল। শেষ ম্যাচেও ও খুলনার সঙ্গে ৩৮ রান করেছিল, যে ম্যাচটা আমরা জিতেছিলাম। বড় বড় ইনিংস না খেললেও এমন কিছু ইনিংস খেলেছে যেটা আমাদের দলের জন্য সহায়ক ছিল।’

তবে স্বীকার করে নিলেন, আজ গেইল না দাঁড়ালে কাজটা কঠিন হয়ে যেত, ‘আমি মনে করি আজকে খুব লাকি। কাউকে ছোট করা না গেইল আউট হয়ে গেলে এই ম্যাচ খুব কঠিন হয়ে যেত। ২১ রানে ২ উইকেট পড়েছিল, ও যদি ৫০ রানের মধ্যেও আউট হত খুব কঠিন হয়ে যেত। ২০ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গেলে কি হত বলা যায় না। এক দিক থেকে আমি মনে করে আমরা ভাগ্যবান গেইল এগিয়ে এসেছে আজকে।’

কিন্তু এই মন্থর উইকেটেও গেইলের এমন অবিশ্বাস্য ইনিংসের রহস্য কী? মাশরাফি শুধু বললেন, ‘আমি যতটুকু দেখেছি ওকে, ও নির্ভার থাকতে পছন্দ করে। ও সবসময় ওর রুমে ঘুমাতে পছন্দ করে। এটাই হয়তো ওকে মাঠে এসে রিল্যাক্সড থাকার সুবিধা দেয়। আমি ওকে শেষ ৮/১০ ম্যাচ ধরে দেখছি, আগেও এক সাথে খেলেছি আমি ওকে কখনো মেন্টালিটি পরিবর্তন বা যেদিন রান করেনি সেদিন তাড়াহুড়া করতে। ও সবসময় শান্ত থাকে, আস্তে আস্তে তৈরি হয়ে মাঠে নামে। সব সময় এমনই থাকে।’

মাশরাফি নিজেও জানেন, গেইল প্রতি ম্যাচেই এমন অতিমানব হয়ে যাবেন না। রংপুরের জন্য এমন জয় তো এক দিক দিয়ে সতর্ক বার্তাও বটে!