বিজ্ঞাপন

বাংলা কলেজে ছাত্রলীগের দুগ্রুপে সংঘর্ষ, শিক্ষকসহ আহত ১০

March 4, 2020 | 2:12 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ফরিদা আক্তার নামে এক শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের ১০ জন নেতকর্মী আহত হয়েছেন। পরে আহত শিক্ষককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৪ মার্চ) দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার (৩ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরকারি বাংলা কলেজে এক শিক্ষার্থীকে শিবির হিসেবে সন্দেহে করলে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের হাফিজ আলম গ্রুপের সঙ্গে মানিক চৌধুরী গ্রুপের সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় একজন শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ একটি অভিযোগ দিয়েছেন- সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ওসি।

মিরপুর বাংলা কলেজে ২০১৮ সালের পর ছাত্রলীগের আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি। বর্তমানে কমিটি ছাড়াই চলছে বাংলা কলেজ ছাত্রলীগ। ঘটনার বিস্তারিত জানতে সারাবাংলার এই প্রতিবেদকের সাথে বুধবার কথা হয় বাংলা কলেজের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক মানিক চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত ২ মার্চ সাজেদুল ইসলাম রাজু নামে এক ছাত্রকে শিবির হিসেবে সন্দেহ করা হয়। তার ফেসবুক আইডি ও অন্যান্যদের সহায়তায় তাকে শিবির হিসেবে অনেকটা শনাক্তও করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে রাজুকে ধরে ‍পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে কলেজে যেতে বারণ করে-এই শর্তে রাজুকে ছেড়ে দেয়। পরদিন (৩ মার্চ) সকালে রাজু আবারও কলেজে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে ধরতে যায়। এ সময় তার পক্ষ হয়ে তেড়ে আসে আরেক ছাত্রলীগ নেতা হাফিজ আলম। কিছুটা ধস্তাধস্তি হলে হাফিজ আলম ও রাজু হোস্টেলে গিয়ে সেখান থেকে লাঠিসোঠা নিয়ে এসে পুরো ক্যাম্পাস আতঙ্কিত করে তোলে।’

বিজ্ঞাপন

‘আগের দিন রাজুকে পুলিশে দেওয়ার পর যারা যারা ক্যাম্পাসে মিছিল করেছিল তাদের খুঁজতে থাকে। একটা সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পুরো ক্যাম্পাসে থমথমে অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আমি এগিয়ে গেলে আমার মাথায় আঘাত করে। পরে সেটি কানে লাগে। আমার কানে ৫টি সেলাই করতে হয়েছে।’- বলেন মানিক।

মানিক আরও বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মীরা একত্র হয়ে রাজু ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে রাজু ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক ফরিদা পারভিনের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেয়। ঢাল হিসেবে শিক্ষককে ব্যবহার করে রাজু। এ সময় রাজুকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে গেলে শিক্ষক হাত বাড়িয়ে সেটা আটকাতে চান। এতে তার আঙ্গুল ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। এছাড়া ওই শিক্ষক শরীরের অন্যান্য অংশেও গুরুতর আঘাত পান।’

আহত শিক্ষক ফরিদা আক্তার বলেন, ‘লাঠির আঘাতে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। এরপর চেতনা ফিরলে দেখি পঙ্গু হাসপাতালের বিছানায় আমি। ঘটনার সময় একটি ছেলে আমার কাছে এসে বলল, ম্যাডাম আমাকে বাঁচান। পেছন থেকে অনেকগুলো ছেলে লাঠিসোঠা নিয়ে তেড়ে আসছিল। ওই ছেলেটাকে বাঁচাতে গিয়ে আমাকে মার খেতে হলো। আমার দুই হাত ও মাথায় ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে ছাত্রলীগের আরেক নেতা হাফিজ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কমিটি না থাকলেও আমরা ছাত্রলীগ করি। আমার সঙ্গে যারা চলাফেরা করে তাদের কয়েকজনকে শিবির আখ্যায়িত করে মারধর করতে আসে মানিক চৌধুরী গ্রুপের ছেলেরা। এতে আমরা বাধা দেই। পরে তারা দলবেধে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় আমরা বেশ কয়েকজন আহত হই। সবাই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।’

ঘটনার বিষয়ে জানতে সরকারি বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ ফেরদৌসি খানকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন