‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নাশকতার আশংকা নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান ঘিরে কোনো নাশকতার আশংকা নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, এই মহতী অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে দেশের মানুষ উদগ্রীব। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনসহ বিভ্রান্তিকর প্রচারণার ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি করা হবে। রাজধানীসহ সারাদেশে প্রয়োজন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।

বুধবার (৪ মার্চ) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর নিরাপত্তা নিয়ে অনুষ্ঠিত উপ-কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান হবে পুরানো বিমানবন্দরের প্যারেড স্কয়ারে। অনুষ্ঠান সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য উপ-কমিটির দ্বিতীয় সভা হলো আজ। ১৭ মার্চ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লক্ষাধিক অতিথি আসবেন। সেদিন ট্রাফিক রুট কী হবে পরে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং দেশি-বিদেশি অতিথি, কূটনৈতিকদের আসনগ্রহণসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের দেশের ভিআইপিদের জন্যও সে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। প্রতি স্তরে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম সবসময় প্রস্তুত থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘সারা দেশব্যাপী সিটি করপোরেশন, বিভাগীয়, জেলা, উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তার উপকমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখনই প্রয়োজন হবে সভা করবেন। নাশকতার প্রতিরোধ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজবকারীদের দিকে নজর থাকবে। এমন কিছু পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, বিকেল সোয়া তিনটার মধ্যে অনুষ্ঠানস্থলের সব গেট বন্ধ হয়ে যাবে। সেদিন সকাল ১১ টার মধ্যে ঢাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান শেষ করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অনুরোধ জানানো হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেটাই আমাদের বক্তব্য। নতুন করে কিছু বলার নেই। কোন ব্যক্তি কী বলল বা কী করল সেটি দেখার বিষয় না। ভারত মুক্তিযুদ্ধে যে সাপোর্ট আমাদের দিয়েছে, সেটি সব সময় স্মরণ করি। আমরা মনে করি তিনি আসবেন। আমরা চলব আমাদের মতো করে। আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ। সেভাবেই আমরা চলব। এখন পর্যন্ত নাশকতার কোন আশঙ্কা পাইনি। গোয়েন্দা সংস্থাও এমন কিছু জানায়নি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে কোন নাশকতা হবে সেটি আমরা ভাবতেই পারি না।’

করোনাভাইরাসের কারণে কোনো রেস্ট্রিকশন থাকবে কী-না?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোন রেস্ট্রিকশন বা নিষেধাজ্ঞা জারি করিনি। আমন্ত্রিতরা সবাই আসবেন বলে মনে করছি। করোনা নিয়ে কোনো জটিলতা হলে আপনারা দেখবেন। আর এই অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় যত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য প্রয়োজন তাই আমরা রাখব। ১০ হাজার লাগলে তাই থাকবে, বেশি লাগলে বেশি থাকবে। আমরা কোনো অনিশ্চয়তায় রাখব না।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশ নিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকসহ যারা আসবেন তাদের বিষয়ে কাজ চলছে। কিছুদিনের মধ্যে চূড়ান্তভাবে জানা যাবে কারা আসছে। তবে কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আসবে। তাদের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এটি বড় আকারের প্রোগ্রাম। এখানে কালচারাল প্রোগ্রামে হাজার খানেক পারফরমার থাকবে। বিশাল আয়োজনে বিপুল সংখ্যক অতিথি আসবে, দর্শকরা থাকবে।

বিএনপিকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি-না?- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সবাই এতে অংশ নেবেন বলে আশা করছি।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম