বিজ্ঞাপন

করোনাভাইরাস সম্পর্কে যা কিছু জানা প্রয়োজন

March 8, 2020 | 8:50 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত বছরের শেষ দিনে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথম কোনো ব্যক্তির শরীরে নোভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। এরপর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে চীনজুড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১০৪টি দেশে ছড়িয়েছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। সর্বশেষ দেশ হিসেবে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন জন শনাক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)।

বিজ্ঞাপন

এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী লক্ষাধিক ব্যক্তিকে আক্রান্ত করা এই ভাইরাস নিয়ে এমন অনেক তথ্যই অনলাইনে পাওয়া যায়, যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বরাবরই চেষ্টা করছে এই ভাইরাস নিয়ে প্রকৃত তথ্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সতর্কতার নির্দেশনা দিয়ে আসতে। এই ভাইরাস সম্পর্কে যা কিছু জানা প্রয়োজন, সেটিও তুলে ধরেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সারাবাংলার পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

করোনাভাইরাস কী?

করোনাভাইরাস মূলত ভাইরাসের একটি গোত্র, যা মানুষ ও প্রাণীকে আক্রান্ত করে। মানবশরীরে এই ভাইরাস শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করে। ঠান্ডা-সর্দি থেকে শুরু করে মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (মার্স) ও সিভিয়ার অ্যাকুইট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মতো জটিল ব্যধিরও কারণ হতে পারে এই ভাইরাস। এই গোত্রের ভাইরাসগুলোর মধ্যে সবশেষ যে প্রকরণটি শনাক্ত করা হয়েছে, তাকে বলা হচ্ছে নোভেল করোনাভাইরাস। এটি কোভিড-১৯ রোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কোভিড১৯ কী?

করোনাভাইরাসের সর্বশেষ প্রকরণ নোভেল করোনাভাইরাসের কারণে যে রোগ দেখা দেয়, তার নাম কোভিড-১৯। চীনের উহানেই প্রথম এই রোগ ধরা পড়ে।

কোভিড১৯ রোগের লক্ষণগুলো কী?

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত বা কোভিড-১৯ রোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, ক্লান্তি ও শুকনো কাশি। কারও কারও শরীরে ব্যথা হতে পারে, নাক বন্ধ হয়ে যেতে পারে, সর্দি হতে পারে, গলা ব্যথা হতে পারে এবং এমনকি ডায়রিয়াও হতে পারে। শুরুতে এই লক্ষণগুলো অত্যন্ত মৃদু আকারে থাকে এবং ধীরে ধীরে এর তীব্রতা বাড়তে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের সংক্রমণ সত্ত্বেও শরীরে কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে।

এই ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগের (প্রায় ৮০ শতাংশ) জন্যই বিশেষ কোনো চিকিৎসা প্রয়োজন নেই। আর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি ছয় জনের মধ্যে একজন মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। বয়স্ক ব্যক্তি, বিশেষ করে যাদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্রের রোগ বা ডায়াবেটিস আছে, তারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা যাদের আছে, তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

কোভিড১৯ ছড়ায় কিভাবে?

করোনাভাইরাসে যারা আক্রান্ত, তাদের কাছ থেকে অন্যদের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে অন্যদের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া হাঁচি-কাশির মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ থেকে যে ক্ষুদ্র কণা বের হয়, তা কোনো বস্তুর ওপর থাকলে সেই বস্তু অন্য কেউ স্পর্শ করার পর নাক, মুখ বা চোখ স্পর্শ করলে তা ওই ব্যক্তির শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ কারণে অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে কমপক্ষে এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

কোভিড১৯ কি বাতাসে ছড়াতে পারে?

এখন পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, এই ভাইরাসের বাতাসে ছড়ানোর তেমন উল্লেখযোগ্য প্রবণতা নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশিই এটি ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম।

লক্ষণ নেই এমন কারও শরীর থেকে কি কোভিড১৯ ছড়াতে পারে?

এমন আশঙ্কা একেবারেই নেই, তা বলা যায় না। কারণ করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা নাও দিতে পারে। ফলে এই পর্যায়েও তার কাছ থেকে অন্য কারও শরীরে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ইতালি থেকে দেশে আসা ২ জন, দেশে আরও একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত

আক্রান্ত ব্যক্তির মলমূত্র থেকে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস?

এই ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির মল-মূত্রেও এই ভাইরাসের উপস্থিতি থাকতে পারে। তবে এটি এই ভাইরাসের সংক্রমণ বিস্তারের প্রধান মাধ্যম নয়। বিষয়টি নিয়ে আরও গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে কী করণীয়

করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হালনাগাদ তথ্য সরবরাহ করছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশও যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির হালনাগাদ তথ্য জানিয়ে যাচ্ছে (বাংলাদেশে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের বা আইইডিসিআর)। এসব প্রতিষ্ঠান যেকোনো পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তার নির্দেশনা দিয়ে থাকে। এছাড়া এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ব্যক্তি পর্যায়ে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।

করোনা প্রতিরোধের এসব নিয়মের মধ্যে রয়েছে— নিয়মিত সাবান ও পানি বা হ্যান্ড রাব দিয়ে দুই হাত ধোয়া; অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করা; আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা; কাশি শিষ্টাচার মেনে চলা; অসুস্থ পশু/পাখির সংস্পর্শ পরিহার করা; মাছ-মাংস-ডিম ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া; অসুস্থ হলে ঘরে থাকা, বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা; জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশ ভ্রমণ না করা; কারও সঙ্গে হাত না মেলানো (হ্যান্ড শেক) ও কোলাকুলি না করা।

আরও পড়ুন- ‘করোনা প্রতিরোধে জরুরি কাশি শিষ্টাচার ও হাত ধোয়ার চর্চা’

কোভিড১৯ আক্রান্ত এলাকায় ভ্রমণকারীদের সতর্কতা

করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে— এমন এলাকায় অবস্থান বা ভ্রমণের রেকর্ড থাকলে খুব মৃদু লক্ষণ (হালকা মাথা ব্যথা, গা গরম হওয়া, সর্দি) দেখা দিলেও সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের মতো করে আইসোলেশন বা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হবে। প্রয়োজনে আইসোলেশনে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবার ও অন্য জিনিসপত্র ঘরে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। জ্বর বা কাশি থাকলে কিংবা শ্বাসকষ্ট থাকলে যত দ্রুতসম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

কোভিড১৯ আমার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কতটুকু?

কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে— এমন এলাকায় আপনি আছেন কি না, তার ওপর নির্ভর করবে ঝুঁকির মাত্রা। ক্রমেই এই ভাইরাস বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহর ও এলাকায় ছড়িয়ে যাচ্ছে। ওইসব এলাকায় যারা বসবাস, অবস্থান বা ভ্রমণ করবেন, তাদের এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই এসব স্থানে অবস্থান বা ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। স্থানীয়ভাবে ভ্রমণ, চলাচল বা জনসমাগমের ক্ষেত্রে নির্দেশনা থাকলে তা মেনে চলতে হবে। করোনাভাইরাস নিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে চললে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যেমন কমবে, তেমনি এই ভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তৃতির আশঙ্কাও কমবে।

কোভিড-১৯-এর মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, নতুন নতুন সংক্রমণও ঠেকানো সম্ভব। চীনসহ আরও অনেক দেশই এ বিষয়ে নজির রেখেছে। তবে কোনো স্থানে এই ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। https://www.who.int/emergencies/diseases/novel-coronavirus-2019/situation-reports ওয়েবসাইট থেকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস পরিস্থিতি তুলে ধরা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস নিয়ে কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত?

কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে অসুস্থ হওয়ার মাত্রা কিছুটা কম। তবে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে একজনের অবস্থা মারাত্মক হতে পারে, যাদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তাই এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ অস্বাভাবিক নয়। তবে এই উদ্বেগকে পরিণত করতে হবে করোনা সতর্কতার বাস্তবায়নে। এই ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যে নির্দেশনা রয়েছে, তা অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, বারবার সাবান-পানি বা হ্যান্ড রাব দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে। দ্বিতীয়ত, করোনা ইস্যুতে হালনাগাদ তথ্য জানতে হবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা ও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। স্থানীয়ভাবে চলাচল, জনসমাগম ও গণপরিবহন ব্যবহারে বিধিনিষেধ থাকলে তা মানতে হবে।

গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকিতে কারা আছে?

কোভিড-১৯-এর প্রকৃতি নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, বয়স্ক ব্যক্তি এবং ‍উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগ, ক্যানসার বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মারাত্মক অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।

আরও পড়ুন- করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে যা কিছু করণীয়

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকর?

কোনো অ্যান্টিবায়োটিকই ভাইরাসের বিরুদ্ধ কাজ করে না। অ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে। কোভিড-১৯ একটি ভাইরাসজনিত রোগ, তাই এর বিরুদ্ধে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না। এর চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারেরও প্রয়োজন নেই।

কোভিড১৯এর কোনো ভ্যাকসিন বা ওষুধ আছে?

এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ বের হয়নি। তবে যারা এই ভাইরাসে আক্রান্ত, তাদের লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ দিতে হবে। যাদের অসুস্থতা গুরুতর, তাদের হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগীই সুস্থ হয়ে যান।

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, করোনাভাইরাসের জন্য কয়েকটি ভ্যাকসিন ও কিছু ওষুধ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিছু ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এসব ওষুধ ও ভ্যাকসিন নিয়ে চলমান গবেষণা প্রক্রিয়াগুলোর সমন্বয় করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মাস্ক পরা উচিত?

কোভিড-১৯-এর লক্ষণ (বিশেষ করে কাশি) দেখা দিলেই কেবল মাস্ক পরুন। এছাড়া কোভিড-১৯ থাকতে পারে— এমন কারও সংস্পর্শে থাকলেও মাস্ক পরুন। ডিসপোজেল ফেস মাস্কগুলো একবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। অসুস্থ না হলে বা অসুস্থ কারও দেখাশোনার দায়িত্বে না থাকলে মাস্কের ব্যবহার অপ্রয়োজনীয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপীই মাস্কের সংকট রয়েছে। তাই উপযুক্ত কারণ না থাকলে মাস্ক ব্যবহার না করাই ভালো।

মাস্ক ব্যবহারে যা মনে রাখবেন

জ্বর বা কাশির মতো লক্ষণ যাদের রয়েছে তারা এবং কেবল স্বাস্থ্যকর্মী ও পরিচর্যাকারীদেরই কেবল মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মাস্ক ব্যবহারের আগে সাবান-পানি বা হ্যান্ড রাব দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর মাস্কটি হাতে নিয়ে দেখুন, এটি ছেঁড়া-ফাঁটা কি না। মাস্কটি সোজা করে মুখে পরুন। মাস্কের ধাতব অংশটি চাপ দিন যেন মাস্কটি নাকের আকৃতির সঙ্গে মিলে যায়। মাস্কের নিচের দিকে টান দিন যেন এটি মুখ ও থুতনির অংশটুকু ঢেকে দেয়।

মাস্কের ব্যবহার শেষে এটি খুলুন। খোলার পর এটি মুখ ও পোশাক থেকে দূরে রাখুন, যেন এই মাস্কে কোনো জীবাণু থাকলে তা পোশাক ও শরীরে না ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ঢাকনাযুক্ত একটি বিনে মাস্কটি ফেলুন। এরপর আবার সাবান-পানি বা হ্যান্ড রাব দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

কোভিড১৯এরইনকিউবেশন পিরিয়ড কত দিন?

ভাইরাসের সংক্রমণের পর যে সময় পর্যন্ত লক্ষণ দেখা দিয়েও শরীরে সুপ্ত থাকতে পারে, সেই সময়টুকুকে বলা হয় ‘ইনকিউবেশন পিরিয়ড’। কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে এই সময় পাওয়া গেছে ১ থেকে ১৪ দিন। অর্থাৎ কারও শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ১৪ দিন পর্যন্ত কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে।

প্রাণী থেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে কি?

ভাইরাসের একটি বড় গোত্র করোনাভাইরাস, প্রাণীদেহে যেগুলোর উপস্থিতি খুব সাধারণ। কখনো কখনো এসব প্রাণী থেকে মানবশরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে ভাইরাস। এই গোত্রের ভাইরাসগুলোর মধ্যে সার্স বা মার্সের প্রাণীর মাধ্যমে ছড়ানোর নজির রয়েছে। তবে নোভেল করোনা বা কোভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে এমন কোনো নিশ্চিত উদাহরণ নেই। তারপরও পশুর হাট এড়িয়ে চলা উচিত। কাঁচা মাংস-দুধ বা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যথাযথভাবে রান্না করে তবেই খাওয়া উচিত।

পোষা প্রাণী থেকে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস?

কুকুর-বিড়াল বা এমন পোষা কোনো প্রাণী থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।

ভাইরাসটি কতদিন বেঁচে থাকতে পারে?

কোভিড-১৯ কতদিন ধরে কোনো একটি পৃষ্ঠতলে বেঁচে থাকতে পারে, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এই গোত্রের অন্য ভাইরাসগুলোর মতোই আয়ুষ্কাল হতে পারে এই ভাইরাসের। গবেষণা বলছে, করোনাভাইরাস কয়েকঘণ্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। তবে ভূপৃষ্ঠের প্রকৃতি, তাপমাত্রা, বাতাদের আর্দ্রতাসহ ওই স্থানের ওপর এটি নির্ভর করে। তাই কোনো পৃষ্ঠ সংক্রমিত হয়েছে বলে মনে কররে জীবাণুনাশক দিয়ে সেই পৃষ্ঠ পরিষ্কার করা উচিত। একইসঙ্গে স্থানটির পাশাপাশি নিজেকেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

করোনায় আক্রান্ত এলাকা থেকে আসা কোনো বস্তু নিরাপদ?

যে এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, সেই এলাকা থেকে কোনো পণ্য কুরিয়ার বা পার্সেলের মাধ্যমে এলে তা থেকে ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত কম।

এমন কিছু কি আছে যা করা উচিত নয়?

ধূমপান, একাধিক মাস্ক একবারে পরা এবং ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোনো ওষুধ নিজের মতো করে খাওয়া— এগুলো কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কোনোভাবেই কার্যকর নয়, বরং ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন